ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষামূলক মালবাহী ট্রেন চালু হলো বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৪ এপ্রিল ২০১৮

পরীক্ষামূলক মালবাহী ট্রেন চালু হলো বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক মালবাহী ট্রেন সার্ভিস চালু হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে এই ট্রেনের উদ্বোধন করা হয়। এটি বাংলাদেশের দর্শনা সীমান্ত দিয়ে আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশনে পৌঁছাবে। কলকাতার মাঝের হাট রেলস্টেশন থেকে পরীক্ষামূলক ৩০ বগির এই মালবাহী রেলের যাত্রা শুরু হয়। সবুজ পতাকা দেখিয়ে এ যাত্রার শুভ সূচনা করেন ভারতের ইস্টার্ন রেলওয়ের সিজিএম রথীন্দ্র রামন, জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্র রাও ও কন্টেনার কোম্পানি কনকোরের সিএমডি কল্যাণ রামা এবং মানসী ব্যানার্জি। এই ট্রেনে রয়েছে খাদ্যপণ্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চাল, গম, ফল ও সবজি। বর্তমানে দু’দেশের মধ্যে রেলে পণ্য আদান-প্রদান হয় মালগাড়ির মাধ্যমে। যা ভারতে অংশে গেদে গিয়ে শেষ হয় ও পরে বাংলাদেশ সীমান্তের দর্শনায় নিয়ে যাওয়া হয় ভিন্ন উপায়ে। এটা ছিল অনেক সমস্যার। এর জন্য ঝামেলা পোহাতে হয় দু’দেশের মধ্যে পণ্য আদান-প্রদানকারী ব্যবসায়ীদের। এবার কাঁচামালসহ পণ্য আদান-প্রদান হবে মালবাহী রেলের মাধ্যমে। সূত্র জানায়, গত বছর থেকে উভয় দেশ আলোচনার মাধ্যমে মালগাড়ি বাদে দু’দেশের পণ্য আদান-প্রদানে কন্টেনারবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে স্বপ্ন এখন বাস্তবায়িত হলো। পরীক্ষামূলক সূচনা হলেও কয়েক মাসের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে চালু হবে এই সেবা। এতে দুই দেশের মধ্যে আরও বেশি পণ্য আদান-প্রদান করা যাবে। অধিক পরিমাণে পণ্য আদান-প্রদানে লাভবান হবে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা। এতে দু’দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে মালগাড়িতে পণ্য আদান-প্রদান ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। এতে মাল চুরি ও নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও হয়েছে বিভিন্ন সময়। মূল্যবান পণ্যও আনা-নেয়া করা যেত না। মালবাহী গাড়ির সুবিধা হলো সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাবে-আসবে। যেহেতু ট্রেনটি ননস্টপ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে সেহেতু কাঁচাপণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকখানি কম। বাংলদেশ ও ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য আদান-প্রদান হয় বেনাপোল ও হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে। যাত্রী ও পণ্য একই সীমান্ত দিয়ে পারাপার হয়। ফলে সেই সীমান্ত দু’টিতেও অনেক চাপে সমস্যা হতো দু’দেশের মধ্যে। এবার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে মালবাহী রেল সার্ভিস চালু হওয়ার পরে বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্তে চাপ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। কন্টেনার রেল চালুর বিষয়ে মঙ্গলবার ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো মাল ট্রেন সার্ভিস চালু হলো। ট্রেনটি কলকাতা থেকে মঙ্গলবার ছেড়েছে। আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশের টার্মিনালে এই ট্রেন পৌঁছালে স্বাগত জানাবেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। এতে আরও বলা হয়, গত বছর এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে মালবাহী ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার এই ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
×