ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপা জয়ে অপেক্ষা বাড়ল আবাহনীর

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৩ এপ্রিল ২০১৮

শিরোপা জয়ে অপেক্ষা বাড়ল আবাহনীর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ ম্যাচ পর্যন্ত গড়াল ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) শিরোপা নির্ধারণী। সুপার লীগের শেষ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের পরাজয় এবং শেষ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জয় পাল্টে দিতে পারে সবকিছু। সোমবার এ তিনটি দলই জয় তুলে নিয়েছে সুপার লীগে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আবাহনী ১২৭ রানে হারিয়ে দেয় খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে। আর বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শেখ জামাল মাত্র ১৮৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরও ১০ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নেয় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে। তবে ফতুল্লায় রূপগঞ্জ ৮ উইকেটের অনায়াস জয় তুলে নেয় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। তবে শেষ ম্যাচে আবাহনী যদি রূপগঞ্জকে হারিয়ে দেয় সেক্ষেত্রে বেশি পয়েন্ট নিয়ে তারাই শিরোপা জিতবে। আর যদি আবাহনী হারে এবং জামালও জিতে যায় সেক্ষেত্রে ৩ দলের পয়েন্ট সমান ২২ হয়ে যাবে। তখন তিন দলের মধ্যে হেড-টু-হেড বিবেচনায় নির্ধারিত হবে শিরোপা। আবাহনী-খেলাঘর ম্যাচ ॥ টস হেরে ব্যাট করতে নামলেও ওপেনারদের দৃঢ়তায় মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলে ভাল একটি সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল আবাহনী। কিন্তু এনামুল হক বিজয় (২৬ বলে ২৭), নাজমুল হোসেন শান্ত (৫৬ বলে ৫৪) বিদায় নেয়ার পর ধস নামে। খেলাঘরের পেসার আব্দুল হালিমের দাপটে মাত্র ৫৬ রানে বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত হয় আবাহনী। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের ৪৪ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় করা ৫০ ও তাসকিন আহমেদের ২৫ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় করা ২৬ রান একটা সম্মানজনক স্কোর পাইয়ে দেয় আবাহনীকে। ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ রানে গুটিয়ে যায় তারা। হালিম ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। জবাব দিতে নেমে মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদের পেস দাপটে দিশেহারা হয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খেলাঘর। ২৭.৩ ওভারে মাত্র ১১৪ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন মহিদুল ইসলাম অঙ্কন। মাশরাফি ৩, তাসকিন, নাসির আহমেদ ও সন্দ্বীপ রায় ২টি করে উইকেট নেন। ১২৭ রানের বড় জয় পায় আবাহনী। স্কোর ॥ আবাহনী ইনিংস- ২৪১/১০; ৪৬.৩ ওভার (শান্ত ৫৪, মিরাজ ৫০, বিজয় ২৭, তাসকিন ২৬; হালিম ৪/১০, সাদিক ২/৪৬, আঞ্জুম ২/৫২)। খেলাঘর ইনিংস- ১১৪/১০; ২৭.৩ ওভার (অঙ্কন ২৭, আঞ্জুম ২৪, মাসুম ২৩; মাশরাফি ৩/৩২, সন্দ্বীপ ২/৫, নাসির ২/৮, তাসকিন ২/২৫)। ফল ॥ আবাহনী ১২৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মেহেদী হাসান মিরাজ (আবাহনী)। গাজী গ্রুপ-রূপগঞ্জ ম্যাচ ॥ টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহাম্মদ শহীদের পেস তোপে শুরু থেকেই বিপর্যস্ত হয় গাজী গ্রুপ। শেষ পর্যন্ত তারা ৪৫.৪ ওভারে মাত্র ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায়। জহুরুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৩১ ও জাকের আলী ৩০ রান করেন। শহীদ নেন ২৬ রানে ৪ উইকেট। জবাব দিতে নেমে অভিষেক মিত্রর ৬১ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় করা অপরাজিত ৫৭, মোহাম্মদ নাইমের ৩৪ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৪৫ ও মুশফিকুর রহীমের ৩২ বলে ৩ চারে অপরাজিত ৩০ রানে ৮ উইকেটের জয় পায় রূপগঞ্জ। মাত্র ২২.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তারা ১৫৩ রান তোলে। গাজী গ্রুপ ইনিংস- ১৫২/১০; ৪৫.৪ ওভার (জহুরুল ৩১, জাকের ৩০, নাঈম ২৩; শহীদ ৪/২৬, আসিফ ২/১৭, রসুল ২/২৭)। রূপগঞ্জ ইনিংস- ১৫৩/২; ২২.৫ ওভার (অভিষেক ৫৭*, নাইম ৪৫, মুশফিক ৩০*; টিপু ১/২২, রনি ১/২৯)। ফল ॥ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মোহাম্মদ শহীদ (রূপগঞ্জ)। শেখ জামাল-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচ ॥ তানবীর হায়দার চার নম্বরে নেমে ৭০ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন, জিয়াউর রহমান ২৯ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৩৯ রান করেন। বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেখ জামাল ৩৮ ওভারে মাত্র ১৮৩ রানেই গুটিয়ে যায়। জাকারিয়া মাসুদ ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। জবাবে শুরু থেকেই বিপর্যস্ত প্রাইম দোলেশ্বর ৪৮.২ ওভারে ১৭৩ রানেই গুটিয়ে যায়। ফজলে মাহমুদ ও আরাফাত সানি উভয়ে ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। তানবীর ৩১ রানে নেন ৪ উইকেট। ১০ রানের জয় পায় শেখ জামাল। শেখ জামাল ইনিংস- ১৮৩/১০; ৩৮ ওভার (তানবীর ৪৩, জিয়া ৩৯, উন্মুক্ত ২৭; জাকারিয়া ৩/১০, ফরহাদ ২/২৪, শরীফুল্লাহ ২/৫২)। প্রাইম দোলেশ্বর ইনিংস- ১৭৩/১০; ৪৮.২ ওভার (ফজলে ৩৫, আরাফাত ৩৫*, শাকিল ৩১; তানবীর ৪/৩১, নাজমুল ২/৩৭)। ফল ॥ শেখ জামাল ১০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ তানবীর হায়দার (শেখ জামাল)। শেষ ম্যাচের অপেক্ষা ॥ চলতি প্রিমিয়ার লীগে এ তিনটি দলই এখন আছে শিরোপা লড়াইয়ে। শেষ ম্যাচে আবাহনী যদি রূপগঞ্জকে হারিয়ে দেয় তবে ২২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষে থেকে চ্যাম্পিয়ন হবে তারা। কিন্তু রূপগঞ্জ জিতলে এবং শেখ জামাল জিতলে তিন দলের পয়েন্ট সমান ২২ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে হেড-টু-হেড বিবেচনায় তিন দলের মধ্যে সর্বাধিক ৩ জয় তুলে নেয়াতে শেখ জামাল হবে চ্যাম্পিয়ন এবং আবাহনী হবে রানার্সআপ। কিন্তু শেখ জামাল হেরে গেলে, রূপগঞ্জ জিতলেও হেড টু হেডে সমান ১টি করে জয় থাকায় নেট রানরেটে আবাহনী ও রূপগঞ্জের মধ্যে শিরোপা নির্ধারিত হবে।
×