ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে এবার জলাবদ্ধতা ও জলজট হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩ এপ্রিল ২০১৮

রাজধানীতে এবার জলাবদ্ধতা ও জলজট হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতি বছরের মতো এবার বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা ও জলজট হবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে ওয়াসা। টানা ১০ দিন বৃষ্টি হলেও কোথাও জলাবদ্ধতা হবে না। সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজারে ওয়াসা ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান দাবি করেন। তিনি বলেন, ঢাকায় এবার কোন জলাবদ্ধতা ও জলজট হবে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আমরা অক্ষরে অক্ষরে সব কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে যেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এর বাইরে নতুন করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে, যা ঢাকার জলাবদ্ধতা দূর করেছে। ফলে এ বছর বর্ষায় নগরবাসী জলাবদ্ধতার কারণে কোন ভোগান্তির শিকার হবেন না। ঢাকা ওয়াসার কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে পানি সরবরাহে ঢাকা ওয়াসার প্রস্তুতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার এমডি বলেন, কোথাও যেন তিন ঘণ্টার বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। ঢাকা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা কাজ করছি। নতুন অনেক ড্রেন করা হয়েছে। আশা করি এবার বর্ষা মৌসুমে ঢাকাবাসী কোন প্রকার জলাবদ্ধতার শিকার হবেন না। টানা ১০ দিনও যদি বৃষ্টি হয় ঢাকার কোথাও পানি জমবে না। খুব ভারি বৃষ্টি হলে অল্প সময়ের জন্য পানি জমতে পারে। ওয়াসা সঙ্গে জমে থাকা পানি অপসারণের জন্য ব্যবস্থা নেবে। আগে থেকেই বেশ কয়েকটি সেচ পাম্প আমরা প্রস্তুত রেখেছি। যদি কোথাও বৃষ্টির পানি জমে তাহলে যতদ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকা শহরে এক সময় ৬৫টি খাল ছিল, ইতিহাস তাই বলে। আমরা এখন মাত্র ২৬টি খাল দেখছি। খালের তো অস্তিত্বই নেই। যদি ৬৫টি খাল আর ৫টি নদী বহমান থাকত, তাহলে তো জলজট নিয়ে কথাই বলতে হতো না। নদীগুলোকে ভাল রাখা আর খালগুলোকে উদ্ধার করতে পারলে ঢাকা শহর হবে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর একটি নগরী। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াসার এমডি বলেন, খাল দখলে ওয়াসার যোগসূত্র রয়েছে এ ধরনের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন। খাল দখলে ওয়াসার কেউ জড়িত থাকতেই পারে না। যদি কেউ খাল দখলের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে সেটা অনেক ওপরের বিষয়। খাল দখল কোন চুনোপুঁটির কাজ নয়। তারপরেও যেভাবেই হোক খাল দখল হচ্ছে। ওয়াসা এই দায় এড়াতে পারছে না। অনেক খাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছে। দখলদাররা নানা কায়দায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বসে আছেন। আমরা আইনি লড়াইও চালিয়ে যাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকরা জানতে চায়, প্রতিবছর মার্চের শেষের দিকে অথবা এপ্রিলের শুরুতে ওয়াসা এমন একটি সংবাদ সম্মেলন করে আসছে কেন। সংবাদ সম্মেলন করলেও তো ঢাকা মহানগরীতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। কোন বছরই এ থেকে মুক্তি পায়নি নগরবাসী। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ সময় জলজট সৃষ্টি করছে। নগরবাসী জলজটের ভোগান্তি ভোগ করছে বছরের পর বছর ধরেই। এরপরও ঢাকা ওয়াসা সংবাদ সম্মেলন করে এ সব কথা বলছে কেন। এমন প্রশ্নের কোন জবাব পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলনে তাকসিম এ খান বলেন, ২০০৫ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসন খালগুলোকে আমাদের অধীনে দেয়। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে খালের পাড় বেঁধে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ১৩টি খালের পাড় বাঁধানো হয়ে গেছে। বাকি খালগুলোর পাড় দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
×