স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ পর্যটন শহরের পৌর এলাকার খতিয়ানভুক্ত জমি ও ভিটাবাড়ি জবর দখল হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে সংখ্যালঘু আটটি পরিবার। প্রায় ৭৭ বছর ধরে ভোগদখলে থাকা মল্লিক পরিবারের ওই বৈধ সম্পদ দখলে নিয়ে তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। শহরের সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন এলাকার পৈত্রিক সম্পদ ফিরে পেতে বিচারের আশায় সমাজপতি ও দলীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, প্রয়াত সানন্দ মোহন মালি ১৯৪১ সালে রেজিস্ট্রি কবলামূলে এক একর ৭৭ শতক জমি খরিদ করেন। ওই জায়গা ভিটায় রূপান্তর, বাড়িঘর নির্মাণ ও শান্তিতে বসবাস করে আসছে মল্লিক পরিবারের সদস্যরা। ওই জমিতে ভুলবশত বিএস জরিপে কৃঞ্চ নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে আসে। অথচ ওই এলাকায় কৃঞ্চ নামে কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই বলে ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেছেন। সানন্দ মোহন মালির ওয়ারিশগণ ইতিপূর্বে বিএস সংশোধনের জন্য আদালতের আশ্রয় নেয়। এ সুযোগে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শফি উল্লাহ আনছারী সংখ্যালঘু পরিবারের ওই সম্পদ জবর দখলে নেয়ার পাঁয়তারা শুরু করলে সুনীল কুমার মল্লিক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় আবেদন করেন। আদালত ওই জমিতে স্থিতিশীল ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আদেশ দেন। এতে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে দখলবাজরা। শুক্রবার রাতে শফি উল্লাহ আনছারীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের টেনেহিঁচড়ে বের করে দিয়ে জবর দখল করে নেয় ভিটাবাড়ি। ভাংচুর করা হয়েছে সীমানা ও বসতগৃহ। মারধর করা হয়েছে রতœা মল্লিক নামে এক মহিলাকে। নিরূপায় হয়ে ওই হিন্দু পরিবারগুলো ভিটাবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রেরিত স্মারকলিপিতে সুনীল মল্লিক, স্বপন মল্লিক, দুলাল, সুলাল ও কল্পনা রানী মল্লিকসহ ৮ সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা উল্লেখ করেন, সন্ত্রাসীরা তাদের ভিটাবাড়ি দখল করার সময় সেøাগান দিয়ে হুমকি দিয়েছে যে ‘হিন্দু থাকলে ভোট পাব, চলে গেলে জমি পাব। জমি দিবি না প্রাণ দিবি-না হয় সুনীল পরিবার চলে যাবি’। বর্তমানে জবর দখলকৃত ঝুপড়ি ঘরে ৩-৪ জন সন্ত্রাসী দিবারাতে পাহারা ও তাদের হুমকি দিয়ে চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে শফি উল্লাহ আনছারীর মুঠোফোনে কল করেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: