ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাৎক্ষণিক রাগ নিয়ন্ত্রণ...

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২ এপ্রিল ২০১৮

 তাৎক্ষণিক রাগ নিয়ন্ত্রণ...

অনেকেই রেগে গেলে জিনিসপত্র ভাঙেন বা ছুড়ে মারেন, চিৎকার করেন আপনি কি খুব বেশি রেগে যান? রেগে গেলে ভাঙচুর করেন? কিংবা হাতের কাছে যা পান ছুড়ে মারেন, গলা ফাটিয়ে চেঁচামেচি বা হুমকি দেন? এমন রাগ নিয়ন্ত্রণ করাই উচিত। কিন্তু কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? রাগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি সেমিনারে রেগে গেলে কে কিভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানান সেটি নিয়ে আলাপ হচ্ছিল। তাদের একজন বলছেন, ‘এটা বলতে একটু লজ্জা লাগছে। রেগে গেলে আমি খুবই চিল্লাচিল্লি করি। আশপাশে ভাঙার মতো কিছু পেলে ভাঙাভাঙি করি। কথা বলা বন্ধ করে দেই। আমাকে দেখলে বোঝা যাবে না এমন রাগতে পারি।’ রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, অতিরিক্ত গাড়ির হর্ন, বাসের কন্ডাকটরের আচরণ, রেস্টুরেন্টের ওয়েটারের দেরিতে খাবার দেয়া, এমন অনেক কিছুতেই ইদানীং খুব রেগে যান এমন একজন নাম রেজওয়ান। তিনি বলছেন, ‘ইদানীং হুট করে খুব রাগ হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে রাগ হয়ে যাওয়ার পরে এবং রাগারাগি করার পরে বুঝেতে পারি যে আমার তা উচিত হয়নি। আমার প্রিয়জনেরা আমাকে ইদানীং বলতে শুরু করেছেন যে আমি অযথাই রেগে যাচ্ছি।’ মনোবিজ্ঞানীরা যদিও বলছেন রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু এই রাগ ক্ষতির কারণ হয়েও দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। এমনকি স্বাস্থ্যের ওপরও রাগের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের সহনশীলতা কমছে, আর রাগের বহির্প্রকাশ আগের থেকে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তারা বলছেন, ‘প্রতিদিন কিন্তু রাস্তায় বের হলেই অন্তত দুই থেকে তিনটা ঝগড়া দেখি। যেমন ধরুন, রিকশাওয়ালার সঙ্গে যাত্রীর, এক বাসের সঙ্গে আরেক বাসের চালকের, ফেরিওয়ালার সঙ্গে ক্রেতার। প্রতিদিনই কিন্তু আমরা ঝগড়া দেখছি। আমাদের অবজারভেশন বলে আমাদের ধৈর্য কমছে আর রাগ বাড়ছে।’ তবে কোন পর্যায়ে গেলে সেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করার কথা ওঠে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘যখন সেটা স্বাভাবিকের পর্যায়ে থাকবে না তখনই তা নিয়ন্ত্রণের দরকার। যেমন কেউ যদি আক্রমণাত্মকভাবে সেটি প্রকাশ করে, মানুষজনকে আঘাত দিয়ে, অন্যকে হুমকি দিয়ে বা জিনিসপত্র ভাঙচুর করে যদি কেউ রাগ প্রকাশ করে তাহলে।’ হুট করে এমন রেগে গিয়ে খুন খারাবি পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে এমন ঘটনাও শোনা যায়। রাগ এমন পর্যায়ে চলে যাওয়ার আগেই সেটি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলছিলেন মনোবিজ্ঞানীরা। কিন্তু রাগে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব? গবেষকরা চারটি সহজ টিপস দিয়েছেন। তারা বলছেন, তাৎক্ষণিক কিছু কাজ আমরা করতে পারি, যেমন যে জায়গাটিতে রেগে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেছে সেখান থেকে সরে যাওয়া। যার ওপরে রাগ হয়েছে- তার কাছ থেকে সরে যাওয়া। তার সঙ্গে তখনই নয়, বরং খানিক পরে কথা বলা। হাতের কাছে যদি বরফ থাকে তাহলে তা হাত দিয়ে ধরে থাকা। বরফ মেজাজ শীতল করতেও সহায়তা করে। ‘যদি সম্ভব হয় যে কাপড়ে আছেন তাতেই গোসল করে ফেলুন। নিশ্বাসের একটি ব্যায়াম করে দেখতে পারেন। সেটি করার পদ্ধতি হলো, রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিঃশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেয়া। বুক ভরে গভীর নিঃশ্বাস নেয়া, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে থাকা, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দেয়া। সেটি রাগ কমাতে সাহায্য করে। হয়ত এর সবগুলোই আপনার কাজে নাও আসতে পারে কিন্তু চেষ্টা করে দেখতে তো আর সমস্যা নেই।
×