ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান বললেন, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তাদের দিয়ে কখনও দেশের উন্নয়ন হয়নি, হবেও না

আওয়ামী লীগেই উন্নয়ন ॥ চাঁদপুরে বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২ এপ্রিল ২০১৮

আওয়ামী লীগেই উন্নয়ন ॥ চাঁদপুরে বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

জালাল চৌধুরী, চাঁদপুর থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চাঁদপুরের বিশাল জনসভায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। নৌকায় ভোট দিলে কেউ খালি হাতে ফেরে না। নৌকায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি-জামায়াত সরকারে এলে লুটেপুটে খায়। নৌকা নূহ নবীর কিস্তি, নৌকা মানবজাতি, পশু-পাখি সব রক্ষা করেছিল। এই নৌকা বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে। আর যারা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের গাড়িতে রক্ত স্নাত পতাকা তুলে দেয়, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না- তাদের দিয়ে কখনও দেশের উন্নয়ন হয়নি, হবেও না। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই। স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়ে তাদের হাতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ধিক্কার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধিক্কার জানাই বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে, যারা ওই স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছিল এ দেশের পতাকা। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু থাকতে পারে না। অবশ্য তাদের লজ্জা-শরম একটু কম। তারা নিজেরাই তো বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর যারাই (জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় এসেছিল, কেউই দেশের উন্নয়ন করেনি। নিজেরা লুটপাট, চুরি ও দুর্নীতি করেছে। রবিবার বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অঙ্গীকার চাইলে উপস্থিত লাখো মানুষ দু’হাত তুলে ভোট দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় নৌকা মার্কার স্লোগানে পুরো স্টেডিয়াম ছাপিয়ে চতুর্দিক প্রকম্পিত হয়ে উঠে। জনসভায় ভাষণ দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরে সার্বিক উন্নয়নে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে করে হাইমচরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বাংলাদেশ স্কাউটের ষষ্ঠ জাতীয় সমাজ উন্নয়ন ক্যাম্প ’কমডেকা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। পতাকা হাতে স্কাউটস সদস্যরা প্যারেডের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, হাইমচরে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেই সঙ্গে চাঁদপুরকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম পাটওয়ারী দুলালের পরিচালনায় বিশাল এ জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হানুরুর রশীদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য গোলাম মাওলা নকশীবন্দী, সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি, ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি প্রমুখ। এর আগে বিকেল ৩টার পর জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। জনসভা প্রাঙ্গণ থেকে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নতুন ভবনসহ ৪৮ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর মধ্যে ২৫টি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ২৩টি উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে ওঠার সময় মাইক থেকে সেøাগান ওঠে ‘জননেত্রীর আগমন, শুভেচ্ছার স্বাগতম’, ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছার স্বাগতম’। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত তুলে জনসভায় আগতদের অভিবাদন জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ইলিশ আকৃতির স্মারক তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। এ সময় উপস্থিত সবাই করতালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। জনসভায় উপস্থিত লাখো মানুষের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমার কাছে কিছু না চাইলেও আমি খালি হাতে আসিনি। আমি আজকেই ৪৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। চাঁদপুরে একটা মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ আমরা করে দিব। কারণ আপনাদের সংসদ সদস্য নিজেই একজন ডাক্তার। উনি দাবি করেছেন, এটা করে দেব। এ ছাড়া এই এলাকার হাইমচরে একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা করে দেব, যাতে লোকজনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। পর্যটনের ব্যবস্থা করে দেব, কারণ এটা নৌ ভ্রমণের জন্য একটা সুন্দর জায়গা। কেননা এটি পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থল। এখানে পর্যটন বিকাশে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশের সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এটাই তারা মেনে নিতে পারে না। আপনারাই তুলনা করে দেখুন, পঁচাত্তরের পর থেকে যারা ক্ষমতায় ছিল, সেই জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ বাংলাদেশের কোনও উন্নতি করতে পারেনি। আপনাদের চাঁদপুরের কী উন্নতি তারা করেছে? তাদের উন্নতি হয়েছে একটাই, দুর্নীতির উন্নতি। তারা বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। বাংলাদেশের মাথা হেট করেছে বিশ্ব দরবারে। লুট-দুর্নীতির টাকা নিজেরা পাচার করেছে বিদেশে। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের পাচারকৃত টাকা ধরা পড়েছে। ঘুষ নিয়ে আমেরিকার ফেডারেল কোর্টে ধরা পড়েছে। সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে, সে টাকাও ধরা পড়েছে। কিছু টাকা আমরা ফিরিয়েও এনেছি। শেখ হাসিনা বলেন, এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে। বিদেশ থেকে টাকা দেয়া হয়েছে এতিমের জন্য। কিন্তু একটা টাকাও এতিমের হাতে যায়নি। সে টাকা বিএনপি নেত্রীরা সব লুটপাট করে খেয়েছে। আজকে এতিমের টাকা চুরির দায়ে সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। তার জন্য নাকি আবার আন্দোলন করবে? তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনে আছে, এতিমের হক কেড়ে নিও না। এতিমকে দাও। অথচ সেই অপকর্মটা করতেও তারা পিছ পা হয়নি। তাদের লোভ এত বেশি যে, লোভের মাত্রাটা ছাড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, চাঁদপুরের উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করেছি। আমরা যখনই সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, তখনই জনগণের সেবা করেছি। নৌকায় ভোট দিলে কেউ খালি হাতে ফেরে না। নৌকায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হয়, দেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যায় আমরা তা প্রমাণ করেছি। আর বিএনপি-জামায়াত সরকারে এলে শুধু লুটে খায়। সন্ত্রাস, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলায় তারা পারদর্শী। তারা আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ দেশ গড়ে, উন্নয়ন করে। কিন্তু তারা (বিএনপি-জামায়াত) ধ্বংস করে। বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে নারকীয় তা-ব, ধ্বংসযজ্ঞ ও মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যার কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ৯২ দিন ধরে অফিসে বসে থেকে হুকুম দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করার হুকুম দিয়েছেন। ওই সময় অসহায় মা চোখের সামনে দেখেছে নিজের মেয়ে পুড়ে মারা যাচ্ছে, বাবা দেখছে সন্তানকে পুড়িয়ে মরতে, সন্তানকে দেখতে হয়েছে বাবাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এ ধরনের নিষ্ঠুর নৃশংসতা তারা ঘটিয়েছে। আমরা এ ধরনের নৃশংস হত্যাকা- আর দেখতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, পঁচাত্তরের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছিল, কেউই উন্নয়ন করেনি। ক্ষমতায় থেকে শুধু নিজেরা লুটপাট করেছে, চুরি করেছে, দুর্নীতি করেছে। এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলায় উনি (খালেদা জিয়া) কারাগারে সাজা খাটছেন। তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মী মারা গেছে, এমনকী চাঁদপুরেরও একজন মারা গেছেন। বারবার তারা আঘাত দেয়ার চেষ্টা করেছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেছি। বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ করাই আমার লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। ৪৩ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পরে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্ব দরবারে আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে। সার্বিকভাবে দেশের উন্নয়নে সরকারের কর্মসূচী তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য স্বাধীনতার সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছান। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, এমনকী উচ্চশিক্ষায়ও বৃত্তি দিচ্ছি। মায়েদের মোবাইল ফোনে বৃত্তির টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয় এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটিই আওয়ামী লীগের আদর্শ। আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তৈরি করে দিয়েছি। যেন কেউ বিদেশে গেলে ঘরবাড়ি ও জমি বন্দক ও বিক্রি করে যেতে না হয়। ওই ব্যাংক থেকেই ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে পারে। আমরা গত ১ বছরে বিদেশে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। একই সঙ্গে দেশে দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন বিদ্যুতের জন্য জনগণের হাহাকার ছিল। এখন দেশে ১৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদক সম্পর্কে অভিভাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমামদেরকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ ও জঙ্গীবাদ বন্ধ করতে হবে। আপনারা সর্তক থাকবেন, আপনাদের সন্তানরা কোথায় থাকে কী করে খেয়াল রাখুন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে এ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। অনেকের অঙ্গহানী হয়েছে, স্বামী ও সন্তান হারিয়েছেন। এ জন্য এ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। তাঁদের সন্তান, নাতি ও নাতিনদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক। আমরা যা যা ওয়াদা দিয়েছিলাম, প্রত্যেকটা ওয়াদা রক্ষা করেছি। পাশাপাশি তার চেয়ে বেশি কাজ করেছি। বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ গড়ে তুলেছি। কর্মসংস্থার সৃষ্টি করা, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সমগ্র বাংলাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস করেছি। এখন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছি, জেলায় জেলায় আইটি পার্ক করে দিচ্ছি। গত এক বছরেই বিদেশে ১০ লাখ মানুষের চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। বেকারদের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য অর্থায়ন করতে কর্মসংস্থান ব্যাংক করা, শ্রমিকদেরকে যেন জমি বিক্রি করে বিদেশে যেতে না হয়, সে জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করা, বর্গাচাষীদেরকে বিনা জামানতে ঋণ দেয়া, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দেয়া, সব হাসপাতালে শয্যা বৃদ্ধি, বয়স্ক, মহিলা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা চালু, দুই কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ কার্ড দেয়া, মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় মৎস্যজীবীদের সহায়তা, খাঁচায় মাছ চাষের প্রশিক্ষণসহ নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। একটা পরিবারও যেন দরিদ্র না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প নেয়ার কথাও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে একটা মানুষও গৃহহারা থাকবে না। যাদের জমি নাই, ভিটামাটি নাই, তাদেরকে আমরা ঘর করে দেব আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে। কুঁড়েঘরে কেউ বাস করবে না। নিদেনপক্ষে একটা টিনের ঘর আমরা দেব। তিনি বলেন, কোন ঘর অন্ধকার থাকবে না, প্রতি ঘরে আমরা আলো জ্বালব। যেখানে বিদ্যুত লাইন নাই, সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুত দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। এখন ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুত পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না আমার দেশের মানুষ ভিক্ষা করে চলুক। আমরা প্রত্যেকটা জেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রত্যেকটা মানুষ ভালভাবে বাঁচবে। কারও কাছে হাত পেতে নয়। বিশ্বে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলব। মাথা নত করে না, কারও কাছে হাত পেতে না, ভিক্ষা করে না। সে নীতি নিয়েই আমরা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছি।
×