ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোন কর্মকান্ডে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে চান না ট্রাম্প

সিরিয়া পুনর্গঠনে মার্কিন সাহায্য বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়া পুনর্গঠনে মার্কিন সাহায্য বন্ধ ঘোষণা

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠনে ইতোপূর্বে বরাদ্দকৃত ২০ কোটি ডলার সাহায্য স্থগিত করার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে হোয়াইট হাউস প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে। এর একদিন আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক বক্তৃতায় ঘোষণা করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র খুব শীঘ্রই সিরিয়া ছেড়ে চলে আসবে। এবার দেশটিতে সাহায্য বন্ধের ঘোষণায় এটি আরও স্পষ্ট হলো যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার সব ধরনের কর্মকা- থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিরত রাখতে চান। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ জানান, সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা ট্রাম্পের বেফাঁস কোন উক্তি বা মন্তব্য নয়, বরং বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবতই তিনি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেখানে দীর্ঘ বা মধ্য মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি দরকার এই ধারণার বিরুদ্ধে তার অভিমত ব্যক্ত করে আসছিলেন। খবর-এএফপি। সম্প্রতি ট্রাম্প এক পত্রিকার রিপোর্টে একথা জানতে পারেন যে সাত বছরের যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর পরপরই তিনি এই সাহায্য বন্ধ করার তাৎক্ষণিক নির্দেশ জারি করেন। ট্রাম্পের বিবেচনায় এই সাহায্য অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি তার এক বক্তৃতায় বলেন, ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া যুদ্ধে সাত কোটি ডলারের মতো ব্যয় করে ফেলেছে। উল্লেখ্য, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজারের বেশি মার্কিন সেনা সদস্য মোতায়েন আছে। এরা সিরিয়া ও ইরাকে তৎপর ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের দমনের কাজে নিয়োজিত ছিল। এসব মার্কিন সৈন্যের রসদ সামগ্রী ও সমরাস্ত্রের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ ইতোমধ্যেই ব্যয় হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার ওহাইওতে প্রদত্ত এক বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা শীঘ্রই, অতি শীঘ্রই সিরিয়া থেকে চলে আসছি এখন অন্য কেউ এর দায়িত্ব গ্রহণ করুক।’ এই ‘অন্য কেউটা’ কে তা ট্রাম্প তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করে বলেন নি তবে সিরিয়ার প্রতিবেশী ও প্রভাবশালী দেশ রাশিয়া ও ইরানের আসাদ সরকারকে সহায়তা করার মতো শক্তিশালী বাহিনী রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই অংশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করার মাধ্যমে অর্থ সাশ্রয় করার কোন অভিপ্রায় ট্রাম্পের নেই বরং সম্প্রতি বরখাস্তকৃত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের গৃহীত নীতি থেকে সরে আসাই তার মূল লক্ষ্য। গত জানুয়ারিতে টিলারসন ঘোষণা করেছিলেন যে, সিরিয়াতে আইএস এবং আল কায়েদা জঙ্গীদের মোকাবেলা করার লক্ষ্যেই এই এলাকায় মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি জরুরী। এছাড়াও এখানে কোন শূন্যতার সৃষ্টি হলে ইরান সিরিয়ায় তার শক্তি জোরদার করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে টিলারসন এই মর্মে সতর্ক করে দেন যে, মার্কিন বাহিনীকে যদি এই এলাকা থেকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়, তবে প্রেসিডেন্ট আসাদ তার নিজ দেশের মানুষের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের সুযোগ পেয়ে যাবেন। কিন্তু ট্রাম্প তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অস্বাভাবিক কায়দায় বরখাস্ত (টুইট বার্তায়) করার পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গৃহীত সব সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। তিনি উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত একা একাই গ্রহণ করেন। এ সময় টিলারসন আফ্রিকা সফরে ছিলেন। বৈদেশিক স্পর্শকাতর সিদ্ধান্তগুলো নেয়ার সময় ট্রাম্প অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন উপদেষ্টা, কূটনীতিক বা কোন জেনারেলের মতামতের গুরুত্ব দেন না। তিনি গুরুত্ব দেন আমেরিকা ফার্স্ট নীতিতে। তিনি বিদেশে অর্থ ব্যয় না করে, তা দিয়ে দেশের অবকাঠামো নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সব ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনায় আগ্রহী। তাতে আমেরিকার প্রভাব বহির্বিশ্বে বৃদ্ধি পেল, না হ্রাস পেল এতে তার কোন মাথাব্যথা নেই।
×