ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জানালেন পিএসজির কোচ উনাই এমেরি, নেইমার ছাড়াও অপ্রতিরোধ্য তিতের দল

দুই তিন সপ্তাহের মধ্যেই ফিরছেন নেইমার

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১ এপ্রিল ২০১৮

দুই তিন সপ্তাহের মধ্যেই ফিরছেন নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভক্ত-অনুরাগীদের সুখবর দিলেন নেইমার। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। হ্যাঁ, খোদ নেইমারের কোচ উনাই এমেরিই এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি নেইমারের সঙ্গে কথা বলেছি, সে ভালই আছে। অনেকটা সুস্থ অনুভব করছে।’ ফ্রেঞ্চ লীগ কাপের ফাইনালে শনিবার ব্রডেক্সে মোনাকোর মুখোমুখি হয় প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে পিএসজিকে ছাড়াই মাঠে নামে প্যারিস জায়ান্টরা। মার্সেইর বিপক্ষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারিতে লীগ ওয়ানের ম্যাচে আঘাত পান নেইমার। এরপর থেকেই চিকিৎসার জন্য ব্রাজিলে ফিরে গিয়েছিলেন সাবেক বার্সিলোনার এই সান্তোস ফরোয়ার্ড। ৬ মার্চ রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর ম্যাচেও নেইমার খেলতে পারেননি। সেই ম্যাচে হেরে ইতোমধ্যেই ইউরোপ সেরার টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে উনাই এমেরির দল। ব্রাজিলের জাতীয় দলের চিকিৎসক রড্রিগো লাসমার গত ৩ মার্চ নেইমারের পায়ে সফল অস্ত্রোপচার করেন। এরপরই তিনি জানিয়েছিলেন যে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে অন্তত আড়াই থেকে তিনমাস সময় লাগতে পারে নেইমারের। আর তাই যদি হয় তবে এবারের মৌসুমে আর পিএসজির হয়ে নেইমারের মাঠে নামাটা অসম্ভব। সে কারণে এখন তারকা এই ফরোয়ার্ডের একটাই লক্ষ্য রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠে নামা। জুনে রাশিয়ায় শুরু হওয়া বিশ্বকাপের আগে নেইমারের সুস্থতা নিয়ে এখন চ্যালেঞ্জের মুখে ব্রাজিল। কেননা ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের পথে নেইমারের দলে থাকাটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি জরুরী। চার বছর আগে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে লজ্জাজনকভাবে হেরেছিল সেলেসাওরা। সেই ম্যাচটিতেও ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না নেইমার। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়ায় তাকে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় আবারও নেইমারের ইনজুরি পর্যবেক্ষণ করবে পিএসজি ও ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। ফুটবলবোদ্ধাদের ধারণা, এই সময়ের মধ্যেই সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে সক্ষম হবেন নেইমার। কেননা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারও যে মাঠে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। তবে নেইমার ইনজুরিতে থাকলেও তিতের অধীনে ব্রাজিল কিন্তু ছুটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। সম্প্রতি খেলা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের আগেও তিতের অধীনে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগেই বাছাইপর্বের বাধা পেরিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বের টিকেট নিশ্চিত করে সেলেসাওরা। বর্তমান ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ব্রাজিল দলে এই মুহূর্তে নেইমারই কেবল বিশ্বমাপের খেলোয়াড় নয়। পিএসজির এই তারকা ফুটবলার ছাড়াও ব্রাজিলের রয়েছে ফিলিপে কুটিনহো, উইলিয়ান, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রবার্তো ফিরমিনো, মার্সেলো, দানি আলভেজ কিংবা ডগলাস কোস্তার মতো তারকা ফুটবলার। এই মুহূর্তে ব্রাজিলের রক্ষণভাগও দারুণ শক্তিশালী। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ায় অধিনায়কত্ব হারাতে হয়েছিল থিয়াগো সিলভার। সেবার বরখাস্ত হওয়া কার্লোস দুঙ্গার উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সেই সিলভাকে দিয়েই আত্মবিশ্বাস ফেরানোর কাজটা করেন তিতে। তার সৌজন্যেই সেন্টার হাফে মিরান্ডা কিংবা মারকুইনহোসের সঙ্গে থিয়াগো সিলভাকেই বর্তমান বিশ্বের সেরা জুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্রাজিলের গোলরক্ষককে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তাদের ঠিক সামনেই রয়েছেন ক্যাসেমিরো এবং পাউলিনহো। একটু পরিসংখ্যান ঘাটলেই দেখা যাবে তাদের সাফল্য। তাদের নিয়ে খেলা শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি গোল হজম করেছে ব্রাজিল বিনিময়ে প্রতিপক্ষের জালে সেলেসাওরা বল জড়িয়েছেন ৩৯ বার। শুধু রক্ষণভাগ কেন? এই মুহূর্তে বিশ্বমানের গোলরক্ষকও রয়েছে সেলেসাওদের। ২৫ বছর বয়সী এ্যালিসন বেকার ইতোমধ্যেই নিজের জাত ছিনিয়েছেন। ব্রাজিলের এই গোলরক্ষক ইতালিয়ান সিরি’এ লীগের দল রোমার হয়ে অসাধারণ খেলছেন। তার পারফর্মেন্সে মুগ্ধ হয়ে দলে ভেড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে লিভারপুল এবং রিয়াল মাদ্রিদও। তিতের অধীনে এই মুহূর্তে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ কিংবা বাছাইপর্বের ফলাফলের দিকে তাকালেও খুব সুস্পষ্ট। চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে যে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল গত সপ্তাহে সেই জার্মানিকেই ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। বিশ্বকাপের আগে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য এটা মোটেও বড় কোন জয় নয়; তবে এই জয়টা যে ৭-১ গোলের হারের ‘ভূত’ থেকে ব্রাজিলকে বের করে নিয়ে এসেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
×