ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চোরাচালানের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় পণ্য পাঠানোর অভিযোগ

জাতিসংঘের কালো তালিকায় ॥ ২৭ জাহাজ ও ২১ শিপিং কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১ এপ্রিল ২০১৮

জাতিসংঘের কালো তালিকায় ॥ ২৭ জাহাজ ও ২১ শিপিং কোম্পানি

চোরাচালানের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় পণ্য পাঠানোর অভিযোগে ২৭টি জাহাজ ও ২১টি শিপিং কো¤পানিসহ এক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।- বিবিসি চলমান নিষেধাজ্ঞার মাঝেও চোরাচালানের মাধ্যমে কয়লা ও তেলের বিনিময়ে দেশটিতে নিত্যপণ্য সরবরাহের প্রমাণ পাওয়ার পর গত মাসে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে অভিযোগ দায়ের করে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের এ পদক্ষেপের ফলে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ও কার্গো জাহাজগুলো বিশ্বের সব বন্দরে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর স¤পদ জব্দ থাকবে। পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে এটাই জাতিসংঘের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা। নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘেরই এর আগে আরোপ করা একাধিক অবরোধের আওতায় আছে দেশটি। কিন্তু এত কিছুর পরেও পিয়ংইয়াংকে তাদের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা থেকে বিরত রাখা যাবে কী না সে প্রশ্নও ওঠে শুক্রবারের আলোচনায়। এ সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় এটা প্রমাণিত হলো যে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব আজ ঐক্যবদ্ধ। উত্তর কোরিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করে যাচ্ছে। পরমাণু অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে ২০০৬ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে দেশটির রফতানি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। জ্বালানি তেল আমদানিও বন্ধের পথে। কূটনীতিবিদরা মনে করেন, একমাত্র অবরোধই পরমাণু অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের উচ্চাভিলাস ত্যাগ ও তাকে আলোচনার টেবিলে আনার মূল চাবিকাঠি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সর্বশেষ যে ২৭টি জাহাজ ও ২১টি শিপিং কো¤পানি এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে, তার ১৬টি কো¤পানি উত্তর কোরিয়ার, ৫টির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে হংকংয়ে, দুটি চীন, দুটি তাইওয়ানে একটি পানামা ও একটি সিঙ্গাপুরের। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে অধিকতর সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্যচুক্তি আপাতত স্থগিত রাখার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, ওহাইও রাজ্যে গত বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিউলের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেন। অথচ হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেই সর্ব প্রথম এই বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের খামখেয়ালিপূর্ণ মেজাজ মর্জি সম্পর্কে যারা অবগত তারা মনে করেন যে, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রের কাছ থেকে আরও অধিক কূটনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য এটি ট্রাম্পের একটি কৌশল। ওহায়োর বক্তৃতায় ট্রাম্প আরও বলেন, আমি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোন চুক্তিতে না পৌঁছা পর্যন্ত সিউলের সঙ্গে কোন চুক্তি স্বাক্ষর করব নাÑ এর কারণ কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এটি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোন চুক্তিতে পৌঁছার একটি শক্তকার্ড। অথচ এর দু’দিন আগে সোমবার সিউল ও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছিল যে, তারা একটি অবাধ বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছার লক্ষ্যে কিছু শর্ত পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হয়েছে এবং সংশোধিত শর্তের আলোকে দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতাদের সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বে¡ও ট্রাম্পের বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদন বিলম্বিত করার ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেকের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেজং ইনস্টিটিউটের নিরাপত্তা গবেষক লি সেং হিউন বলেন, একটি বাণিজ্যচুক্তির সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি জুড়ে দেয়া অনুচিত কাজ। এটি ঠিক নয়।
×