স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে প্রতিবছর অগ্নিকান্ডে গড়ে ২শ’ ৩৩ জন মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। একইসঙ্গে আহত হচ্ছেন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। অপরদিকে এসব অগ্নিকা-ের কারণে নাগরিকদের প্রতিবছর চার হাজার ৮শ’ ৩৪ কোটি টাকার বিভিন্ন মালামাল ভস্মীভূত হচ্ছে। তাই অগ্নিকান্ড থেকে বাঁচতে নাগরিকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আলী আহম্মেদ খান। শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ইলেকট্রনিক্স সেফটি এ্যান্ড সিকিউরিটি এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএসএসএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ৫ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফায়ার সেফটি এ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো-২০১৮ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ বছর এক্সপোতে ৩০টি দেশের ফায়ার সেফটি এ্যান্ড সিকিউরিটি সম্পর্কিত খ্যাতিমান ব্র্যান্ডের মোট ৬০টি প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে। মেলায় কো-পার্টনার হিসেবে ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং এনএফপিএ থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ বলেন, দেশে সংঘটিত বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিকা-ের পর রফতানিমুখী শিল্প-কারখানার বেশিরভাগে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন অনেক ভবন ও প্রতিষ্ঠান এখনও পিছিয়ে আছে। সম্পদ ও নিরাপত্তার স্বার্থে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। এছাড়া রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোতে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মূলত ভবন মালিককেই উদ্যোগ নিতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। অগ্নিকা-ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রতিবছর স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের অন্তত দেড় লাখ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রত্যেকটি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ছয় বছরে সারাদেশে প্রায় ৮৮ হাজার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ে মৃত্যুর শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪ শত জন। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এসব অগ্নিকা-ের মূল কারণ হচ্ছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইএসএসএবির প্রেসিডেন্ট মোঃ মোতাহের হোসেন খান। তিনি জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এ মেলার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অগ্নিকান্ড সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা থেকে নিজেদের জীবন ও মালামাল রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হবেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব নাজমুল হুদা, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ মনজুর আলম, যুগ্ম মহাসচিব এম মাহমুদুর রশিদ ও পরিচালক জাকির উদ্দিন আহমেদ।