ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিল ঘোষণা

গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন ১৫ মে

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১ এপ্রিল ২০১৮

গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন ১৫ মে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ১৫ মে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এই দুই সিটি নির্বাচনের জন্য শনিবার তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী মেয়র ও কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ এপ্রিলের মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে পারবেন। ১৫ ও ১৬ এপ্রিল দুদিন মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ধরা হয়েছে ২৩ এপ্রিল সোমবার। আইন অনুযায়ী অন্যান্য স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনের মতো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে দলীয় ভিত্তিতে। ইসির নিবন্ধন ৪০টি রাজনৈতিক দলই কেবল দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। অন্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দলীয় প্রার্থী হতে হলে প্রার্থীকে আগে দল থেকে মনোনয়ন নিতে হবে। দল যাকে নির্বাচনের প্রত্যয়নপত্র দেবে কেবল তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। এজন্য দলের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম পদবি এবং নমুনা স্বাক্ষর ইসিতে জমা দিতে হবে। তবে কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোট হবে নির্দলীয় ভিত্তিতে। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনার জন্য ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন ম-লকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অপর দিকে খুলনা সিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ইউনুচ আলীকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ভোট নেয়া হবে। এর আগে সিটি কর্পোরেশন গঠনের পর গাজীপুর সিটিতে প্রথম ভোট হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। নির্বাচনের পর প্রথম সভা হয় ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর। আইন অনুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ১৮০ দিনের মধ্যে যে কোন দিন সিটি নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ও সে অনুযায়ী গাজীপুর সিটিতে নির্বাচনের জন্য ক্ষণ গণনা শুরু হয় ৮ মার্চ থেকে। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ভোটার ভোটার সংখ্যা ১১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লক্ষ ৯১ হাজার ১০৭ এবং মহিলা ভোটার রয়েছে ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩১৮ জন। অপর দিকে খুলনা সিটি নির্বাচনে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। নির্বাচনের পর এ সিটিতে প্রথম সভা হয় ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ৩০ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আইন অনুযায়ী নির্বাচনের পর প্রথম সভা যেদিন অনুষ্ঠিত হবে সেদিন থেকেই পরবর্তী ৫ বছরের মেয়াদ গণনা শুরু হয়। ৩১টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন গঠিত। খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯৭৮ এবং মহিলা ভোটার ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৭৬ জন। তফসিল ঘোষণা অনুষ্ঠানে জানানো হয় খুলনা গাজীপুর সিটি নির্বাচন ছাড়াও আগামী অক্টোবর ২০১৮ মাসের মধ্যে সিলেট, রাজশাহী এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। ফলে পবিত্র রমজানের পর এসব সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নিয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এতে আরও জানানো হয় আগামীকাল ২ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের সকল পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী ১৪ মে শেষ হবে। ২৩ মে তারিখে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হবে। এছাড়া চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৭ মে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। ১৬ বা ১৭ জুন ২০১৮ তারিখে ঈদ-উল-ফিতর। উল্লিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন আগামী ১৫ মে মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে গাজীপুর এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের বিস্তারিত তফসিল চূড়ান্ত করেছে। সিইসি কেএম নুরুল হুদা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য নিয়েছি। এই দুটি সিটিতে নির্বাচনে আইনী কোন বাধা নেই বলে তারা জানিয়েছে। আশাকরি এ নির্বাচনে আইনী কোন জটিলতা হবে না। আগামী অক্টোবর মাসে সিলেট, রাজশাহী এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। ঈদ-উল-ফিতরের পর এসব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই যারা আগাম প্রচার শুরু করেছেন তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্ধারিত সময়ের আগে কেউ প্রচারণা চালালে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে। ২৪ এপ্রিল নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পরই কেবল কোন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারের অংশ নিতে পারবেন। তিনি বলেন, ইসির পক্ষ থেকে নতুন ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) সংগ্রহ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ১৩৩ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সহিংসতা প্রসঙ্গে বলেন, একজন মানুষ মারা গেছেন। আমাদের কাছে প্রতিটি মানুষের জীবন অনেক মূল্যবান। কিছু সহিংসতা হয়েছে। তবে তা অনেক কম। আমরা আরও ভাল নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিলাম। ভবিষ্যতে আরো ভাল নির্বাচনের প্রচেষ্টা থাকবে। জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা যাতে না হয়, সেজন্য বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে উল্লেখ করেন।
×