ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফ্রান্সের মধ্যস্থতার প্রস্তাব তুরস্কের প্রত্যাখান

সিরিয়া ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৩১ মার্চ ২০১৮

সিরিয়া ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ওহিও অঙ্গরাজ্যের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে জোর দিয়ে বলেন যে, সিরিয়া থেকে খুব দ্রুতই মার্কিন সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। তিনি দুঃখ করে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে ওয়াশিংটনের সাত লাখ কোটি মার্কিন ডলার অপচয় হচ্ছে। এদিকে কুর্দী মিলিশিয়া গ্রুপ ওয়াইপিজি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপ সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের সঙ্গে আলোচনায় ফ্রান্সের একটি প্রস্তাব তুরস্ক শুক্রবার নাকচ করে দিয়েছে। এএফপি। ট্রাম্প বলেন, এক সময় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দাবি করা এলাকার পুরো অংশই এখন জঙ্গীদের কবল থেকে মুক্ত করার প্রায় দারপ্রান্তে রয়েছে মার্কিন বাহিনী। দ্রুতই সিরিয়া থেকে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। তিনি বলেন, দেন অন্যদের এখন এলাকাটির দায়িত্ব বুঝে নিতে হবে। তবে ট্রাম্প জানাননি কারা সেই লোক যারা সিরিয়ার দায়িত্ব বুঝে নেবেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনাবহিনীর সমর্থনে রাশিয়া ও ইরানের সৈন্য দেশটিতে মোতায়েন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুতই... খুব দ্রুতই আমরা সেখান থেকে চলে যাব। আমরা খিলাফতের শতভাগ এলাকা মুক্ত করতে পেরেছি। যেটা তারা আগে দাবি করেছিল। মাঝে মাঝে তারা একে ভূমি বলে দাবি করত। দ্রুতই সেই এলাকাটির পুরো অঞ্চল আমাদের দখলে চলে আসবে। দ্রুতই। সত্যিই আমরা সেখান থেকে চলে যাব। আমরা আমাদের দেশে ফিরে যাব। যেখান থেকে আমরা গিয়েছি। সেখানে আমাদের এখন দরকার।’ সংবাদ সম্মেলনে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নুয়েটকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমরা সাত লাখ কোটি ডলার ব্যয় করছি। আপনারা জানেন আমরা সেখান থেকে কি পাচ্ছি? কিছুই না। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির ক্ষেত্রে ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে এসব অর্থ ব্যয় করা হবে। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজারেরও বেশি সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা স্থানীয় মিলিশিয়াদের সঙ্গে এক হয়ে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছেন। মার্কিন বাহিনী সেখানে চেষ্টা করছে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সহায়তা করতে। এদিকে সিরিয়া ইস্যুতে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে যাচ্ছে তুরস্ক, রাশিয়া ও ইরান। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ নিয়ে ফোনালাপ করেছেন। তারা দুজনই বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে। এপ্রিল মাসের ৩ থেকে ৪ তারিখ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরদোগান রাশিয়ার একটি শপিংমলে অগ্নিকান্ডে ঘটনার কারণে হতাহতের বিষয়ে তুরস্কের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেন। সিরিয়ার আফরিনে কুর্দী মিলিশিয়া গ্রুপ ওয়াইপিজি বিদ্রোহীদের হটাতে তুরস্কের সামরিক অভিযানে সহায়তা করছে রাশিয়া। বুলগেরিয়ার শহর ভারনায় তুর্কী-ইইউ সম্মেলনে এরদোগান বলেন, ‘ইউরোপ যদি সম্প্রসারণ নীতি থেকে তুরস্ককে বাদ দেয় দেয়, তবে তারা বড় ধরনের ভুল করবে। ইইউর উচিত তুরস্ককে সমর্থন করা। আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি।’ ওয়াইপিজি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপ সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের সঙ্গে আলোচনায় ফ্রান্সের একটি প্রস্তাব তুরস্ক শুক্রবার নাকচ করে দিয়েছে। এরদোগানের মুখপাত্র ইবরাহিম কালিন টুইটারে লেখেন, ‘আমার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা, মধ্যস্থতা বা তাদের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগের উদ্যোগ নাকচ করি।’ ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার ওই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পূর্বাঞ্চলীয় গাউতা এলাকা থেকে শুক্রবার বেসামরিক লোকজনের বাড়িঘর ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাউতা থেকে ৩২ হাজার বেসামরিক লোক বাড়ি ছেড়েছে।
×