ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞ ॥ অপরদিকে দুর্গতি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৩১ মার্চ ২০১৮

একদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞ ॥ অপরদিকে দুর্গতি

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু। স্বপ্ন যেখানে আজ সত্যি হওয়ার পথে। দেশ-বিদেশের কোটি চোখ যেখানে স্থির হয়ে আছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞে এক্সপ্রেস রোডের ফ্লাইওভার ও রেল লাইনের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে, তারই প্রভাব পড়েছে ঢাকা-মাওয়া সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও মুন্সীগঞ্জ জেলার তিন উপজেলার বাসিন্দাদের ওপর। এই বিশাল উন্নয়ন কাজ আজ সিরাজদিখান, শ্রীনগর ও লৌহজং এই তিন উপজেলার বাসিন্দাদের দারুণ ভোগাচ্ছে। এই ভোগান্তির মূল কারণ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ধুলা আর নয়াবাজার দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পোস্তগোলা হয়ে ঘুরে ঢাকায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। একদিকে কোথাও সড়কের দুই পাশে চারলেন ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য বিশাল জায়গা জুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি, পাইলিং করা, পিলার স্থাপন আর অন্যদিকে কোথাও সড়কের দুই পাশে বালু, সুরকি, রড, সিমেন্ট স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া আছে ঢাকার নয়াবাজার থেকে চুনকুটিয়া হয়ে ঢাকা-মাওয়া সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী বিশ্বরোড নামক স্থান পর্যন্ত তিন মাস পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকা। কারণ, রাস্তার এই অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণের পাশাপাশি পদ্মা নদী থেকে ঢাকাবাসীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পাইপ বসানোর কাজও সমানতালে চলছে। ফলে ঢাকায় যেতে যাত্রীদের আগের চেয়ে দ্বিগুণ/তিনগুণ বেশি সময় লাগছে। সেইসঙ্গে আছে অবর্ণনীয় যানজট। তাই এখন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও সড়কের দুই পাশের বাসিন্দাদের আজ নাভিশ্বাস অবস্থা। এ সড়কের দুই পাশের বাসিন্দাদের বাড়িঘর আজ ধুলায় ধূসরিত। ঘরের চাল, বেড়ায় ধুলার আস্তর। ঘরের ভেতরে থাকা জামাকাপড়, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, টিভি, ফ্রিজ, শোকেস সবকিছুতে ধুলার আবরণ। এমনকি থালাবাসন, কাঁথাবালিশ, খাবারের ওপর জমে থাকে ধুলার প্রলেপ। ধুলার অত্যাচার সবচেয়ে বেশি সইতে হচ্ছে লৌহজংয়ে এপাড়ের পদ্মা সেতু সংলগ্ন মেদিনীম-ল, মাওয়া ও জশলদিয়া এলাকার মানুষজনকে। পদ্মা সেতুর মূল অংশ এখানে হওয়ায় সেতুর কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড, চারলেন ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য পাথর ভাঙ্গা ও বালু-সিমেন্ট মিক্সিংয়ের কাজ মাওয়া প্রান্তে হচ্ছে। ফলে এখানে এসব মালামাল বহন করতে ভারি যানবাহন ব্যবহার করতে হয়। মাহিন্দ্রা, মিক্সিং মেশিন সংযুক্ত গাড়ি ও ১০ চাকা বিশিষ্ট গাড়ি দিনরাত চলাচল করায় একদিকে বিকট শব্দ, আর অন্যদিকে ধুলার দাপট বাধ্য হয়ে সহ্য করতে হচ্ছে উল্লেখিত এলাকার বাসিন্দাদের। এসব ভারি যান চলাচল করায় রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে।
×