ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিটি প্রাণীর জন্য ঘুম অপরিহার্য। সারাদিন বিভিন্ন ধরনের কাজ করার পর শরীরের ;###;সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে রাতে ঘুমানোর কোন বিকল্প নেই। ঘুম ভাল হলে পরের দিন ;###;আবার শরীর চাঙ্গা হয়ে যায়। কিন্তু এমন কিছু প্রাণী আছে, যাদের প্রধান কাজই হচ্ছে ঘুম।;###; শুধু ত

ঘুমকাতুরে প্রাণী

প্রকাশিত: ০৭:২২, ৩০ মার্চ ২০১৮

ঘুমকাতুরে প্রাণী

কোয়ালা : কোয়ালা এক ধরনের মারসুপিয়াল অর্থাৎ ক্যাঙ্গারুর মতো থলিযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী। কোয়ালার বাসস্থান অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ। কোয়ালা দেখতে অনেকটা পান্ডারের মতো। কোয়ালা দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২২ ঘণ্টাই ঘুমিয়ে কাটায়। সারাদিনের মাত্র দুই ঘণ্টা এরা জেগে থাকে। এই দুই ঘণ্টার মধ্যেই এরা খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা সব শেষ করে। কোয়ালার একমাত্র খাবার ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা। কোয়ালার মতো খুব কম স্তন্যপায়ী আছে যারা ইউক্যালিপটাস পাতা হজম করতে পারে, কারণ ইউক্যালিপটাস পাতায় অনেক বিষাক্ত ফেনল ও তারপিন তেল জাতীয় পদার্থ থাকে। স্লথ : এরা এক প্রকার স্তন্যপায়ী খেচর জীব। এদের সচরাচর মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনাঞ্চলে দেখা যায়। ইংরেজী ‘স্লথ’ শব্দের অর্থ হলো অলস বা ধীর। এই স্লথরা অনেক ধীরে নড়াচড়া ও চলাফেরা করে। পৃথিবীর সবচেয়ে অলস আর ধীরগতির প্রাণী এরা। প্রতিদিন গড়ে ২০ ঘণ্টা করে ঘুমায় স্লথ। তাই এদের নাম দেয়া হয়েছে স্লথ বা অলস। স্লথদের পূর্বপুরুষরা ছিল প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী যার আকার একটি প্রমাণ আকারের হাতির চেয়েও বড় ছিল। এরা লম্বা এবং ঘন লোমে আবৃত থাকে। মাঝারি আকারের এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর ছয়টি প্রজাতি রয়েছে। ফলমূল, শেকড়-বাকড়, লতাপাতা এদের প্রধান খাবার। তবে মাঝেমধ্যে পোকামাকড়, ছোট আকারের গিরগিটি ও ছোটখাটো পাখিও এরা খেয়ে ফেলে। আর্মাডিলো : আর্মাডিলো স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বসবাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা ও ফ্লোরিডায় এ আজব প্রাণীটিকে দেখা যায়। এদের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে দেহের উপরিভাগের বর্মেও মতো দেখতে শক্ত ত্বক। দেখলে মনে হয় বর্ম পরা একটা কিছু হেঁটে যাচ্ছে। এই প্রাকৃতিক বর্ম ওদের আত্মরক্ষার কাজ করে। আর্মাডিলোর দর্শন ক্ষমতা খুবই দুর্বল। এদের পা খাটো হলেও এরা দ্রুত দৌড়াতে পারে। বিপদে পড়লে এরা দেহকে পাকিয়ে বলের মতো করে। আর্মাডিলো পানির নিচে প্রায় ৬ মিনিট ডুব দিয়ে থাকতে পারে। প্রতিদিন গড়ে ১৯ ঘণ্টা ঘুমায় এরা। লেমুর : রাতের আঁধারে লেমুরের মুখে আলো ফেললে অনেকটা ভূতের মতো দেখায় বলে এর নামকরণ এভাবে করা হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে লেমুর সাধারণত আফ্রিকার মাদাগাস্কারেই দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রজাতিটি খুব সম্ভবত সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে মাদাগাস্কারে আবির্ভূত হয়েছিল। তখন থেকেই এই প্রজাতিটি মাদাগাস্কারের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। এরা প্রতিদিন গড়ে ১৬ ঘণ্টা করে ঘুমায়। গাছে বিচরণ করা এই প্রাণীর আচার-আচরণ অনেকটা বানরের মতো। কাঠবিড়ালী : কাঠবিড়ালী এশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বাসিন্দা। এরা ঝাঁপালো লেজবিশিষ্ট এবং গাছে গাছে বিচরণ করে বেড়ায়। অস্ট্রেলিয়া এবং এ্যান্টার্কটিকা ছাড়া পৃথিবীর সবখানেই এদের দেখতে পাওয়া যায়। কাঠবিড়ালীর সামনের পা দুটো ছোট এবং পেছনের পা দুটো বড় হয়ে থাকে। ফলে এরা খুব সহজেই লাফ দিতে পারে। কাটুস-কুটুসে ওস্তাদ কাঠবিড়ালী দিনের ১৪ ঘণ্টাই ঘুমিয়ে কাটায়। রাতে নাগালের মধ্যে ফলমূল যা পায়, সব শেষ করে দেয়। বিড়াল : বিড়াল গৃহপালিত স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরা মানুষের সঙ্গে সঙ্গ দেয়া এবং বাসা-বাড়ির বিভিন্ন রকম পোকামাকড় ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণী শিকারের জন্য জনপ্রিয়। কমপক্ষে ৯ হাজার ৫০০ বছর ধরে বিড়াল গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গৃহপালিত প্রাণী। মানুষের সঙ্গে গভীর সখ্যতার কারণে বর্তমানে বিড়াল প্রায় সারা পৃথিবীতেই একটি জনপ্রিয় গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। এদের চোক পিঙ্গল, দৃষ্টিশক্তি মানুষের তুলনায় তীক্ষèতর। নিশাচর বিধায় এরা রাতের তুলনায় দিনে কম দেখে। খুব ঘুমকাতুরে। কোথাও একটুখানি নিরিবিলি ও নরম জায়গা পেলেই ওরা ঘুমিয়ে নেয়। এভাবে এরা দিনের ১৩ ঘণ্টা ঘুমিয়ে পার করে দেয়। অপসাম : বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কয়েক ডজন প্রজাতির অপসাম রয়েছে, উত্তর আমেরিকায় যার বেশিরভাগই ‘পোসাম’ নামে পরিচিত। মূলত এ প্রাণীটির বাস কানাডাতে। আর্মাডিলোর মতো এরাও গড়ে ১৯ ঘণ্টা ঘুমায়। বাকি পাঁচ ঘণ্টা এরা জেগে থাকে। এ্যান্টইটার : এরা পিঁপড়াখাদক প্রাণী। এ্যান্টইটার ঘুমাতে খুব ভালবাসে। এরা দিনের অর্ধেকটা সময় অর্থাৎ ১২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে পার করে দেয়। হ্যামস্টার : হ্যামস্টার হলো এক ধরনের ইঁদুর জাতীয় প্রাণী। এরা প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা করে ঘুমায়। মাটির নিচে গর্ত করে থাকে এরা এবং এই গর্তেই বেশিরভাগ সময় কাটে।
×