ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জুবায়ের বারি

জলবায়ু পরিবর্তন বাড়ছে সমুদ্রের উচ্চতা

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ৩০ মার্চ ২০১৮

জলবায়ু পরিবর্তন বাড়ছে সমুদ্রের উচ্চতা

কার্বন ডাইঅক্সাইডের উদগীরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনতে যদি দেরি হয়, তাহলে ২০২০ সালের পর থেকে প্রতি পাঁচ বছরের জন্য ২০ সেন্টিমিটার করে পানির উচ্চতা বাড়বে। নতুন এক গবেষণা এমনটাই বলছে। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জার্মানির পটস্ডাম ইনস্টিটিউট অব ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের একদল গবেষক নতুন এক মডেলে গবেষণা করেন। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২৩০০ সালের মধ্যে ০ দশমিক ৭ থেকে ১ দশমিক ২ মিটার বেড়ে যাবে। এমনকি যদি ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকিয়েও রাখা যায়, সিস্টেমের জড়তার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আটকে রাখা যাবে না। পরিবেশ বিষয়ক বিখ্যাত জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন্সে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের স্বরূপ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বরফ ও হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ কার্বন ডাইঅক্সাইড নিরসনও সার্বিকভাবে শূন্যে নামিয়ে আনার শর্ত রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের হার তো কমছেই না, বরং বাড়ছে, এবং তা আরও অন্তত এক দশক এই হার অব্যাহত থাকবে। গবেষকরা বলেন, গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ যদি এখনই বন্ধ করে দেয়া হয়, তারপরও এরই মধ্যে আমরা পরিবেশের এতটাই ক্ষতি করে ফেলেছি যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আগামী কয়েক শতকে বেড়েই যাবে। তবে গবেষনায় যেসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেবার কথা বলা হয়েছে, তা নিলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ওপর তা কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিরূপণ করা হয়নি । গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটাস ইয়ান লোয়ি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি রোধ করতে হলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আরও অনেক বাড়াতে হবে, এবং তা এখনই। এই গবেষণাটি আরেকবার আমাদের মনে করিয়ে দিল যে, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের উপকূলে কতটা ঝুঁকি তৈরি করে ফেলেছে। প্রাকৃতিক কারণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষদের উচ্ছেদ ও জলবায়ু শরণার্থী হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াসহ এসব দেশের জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি করবে বলে মত তার। সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফি
×