ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টেকনাফ ও উখিয়া আশ্রয় ক্যাম্পে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা গোয়েন্দা!

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৩০ মার্চ ২০১৮

টেকনাফ ও উখিয়া  আশ্রয় ক্যাম্পে  সহস্রাধিক  রোহিঙ্গা  গোয়েন্দা!

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ টেকনাফ ও উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের আরএসও অস্ত্র-কিরিচ, ডিজিটাল ব্যানার ও ফেস্টুন সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বহু আরএসও ক্যাডার রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। তারা রাতের বেলায় ক্যাম্পে খোলা মাঠে যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে আরএসও। নিজস্ব গোয়েন্দা হিসেবে ক্যাম্পে নিয়োজিত করা হয়েছে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা যুবককে। তাদের হাতে দেয়া হয়েছে একটি করে মুঠোফোন। ক্যাম্প ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানায়, আশ্রয় শিবিরে থাকলেও নিত্য প্রয়োজনীয় কোন কিছুর অভাব নেই দেখে সাধারণ রোহিঙ্গারা পুরনো ওই নেতাদের (আরএসও) কথা অনুসরণ করে চলেছে। স্বদেশে ফিরে যেতে অনাগ্রহী হয়ে উঠছে রোহিঙ্গারা। শিবিরে প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক আর কোন রোহিঙ্গাকে হত্যা নয়, এবার গুম করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আশ্রয় শিবিরে ইতোপূর্বে ঘটে যাওয়া হত্যাকা- নিয়ে দেশ-বিদেশে দুর্নাম হচ্ছে বলে প্রথম সারির রোহিঙ্গা জঙ্গীদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে রোহিঙ্গারা। স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে রোহিঙ্গারা যেন রাজি না হয়, এজন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে প্রত্যাবাসনবিরোধী চক্র। এ কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে কয়েকটি দেশী-বিদেশী এনজিও। আন্দোলনমুখী করে তোলার পেছনে তারা চিহ্নিত ১২ আরএসও নেতার মাধ্যমে এ বিপুল টাকা ব্যয় করছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, আরএসওর নিজস্ব গোয়েন্দা কমিটিতে রয়েছে এক হাজার দুই শ’ রোহিঙ্গা। টেকনাফ ও উখিয়ার ১২ অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে এক শ’ করে মোট এক হাজার দুই শ’ রোহিঙ্গা প্রতিদিন রিপোর্ট দিচ্ছে আরএসও ক্যাডারদের। ওই কমিটির নেতৃত্ব দানকারী ১২ আরএসও নেতা হচ্ছে- মিয়ানমারের নিজাম উদ্দিনের পুত্র মৌলবি ওসমান নেজামী, আবু তাহেরের পুত্র মৌলবি আবদুর রহিম, আলী হোছাইনের পুত্র মৌলবি মোয়াজ্জেম হোছাইন, সিরাজুল মোস্তফা ওরফে ফায়দা হাজীর পুত্র মৌলবি আয়াছ, জাফর আহমদের পুত্র মৌলবি শফিকুর রহমান, মোস্তাক আহমদের পুত্র সেলিম উল্্øাহ, মোজাহের হোছাইনের পুত্র মৌলবি ইয়াহিয়া, মোহাম্মদুল্লাহর পুত্র হাফেজ হাশিম, আবদুল কাদেরের পুত্র মোঃ জুবাইর, আবদুল জলিলের পুত্র মোঃ রুহুল আমিন, হ্নীলার মৌলবি শামসু ওরফে বাইট্টা শামসু ও মৌলবি আবদুল হামিদ। সূত্র জানায়, গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োজিত রোহিঙ্গাদের কাজ হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কারা প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক তাদের খুঁজে বের করার পর গোপনস্থানে শাস্তি দেয়া। সরকারী সংস্থার লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য করা ও ক্যাম্পে প্রত্যাবাসন বিরোধী এনজিও কর্মীদের নানা তৎপরতায় সাহায্য দেয়া। সূত্র জানিয়েছে, মংডুর আন্দাং কুলুং বড়ছরার বাসিন্দা মৃত নেজাম উদ্দিনের পুত্র রোহিঙ্গা জঙ্গী মৌলবি ওসমান নেজামী মিয়ানমারের সশস্ত্র জঙ্গী গ্রুপ আল ইয়াকিনের (আরসা) সক্রিয় সদস্য। তার সহোদর ৬ ভাই আরসা সদস্যদের অন্যতম। তারা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সঙ্গে নির্যাতিত রোহিঙ্গা দাবি করে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বালুখালী ক্যাম্পে। সূত্র মতে, যে কোন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি ক্যাম্পে এক যোগে কাজ করার জন্য আরএসও ক্যাডারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্র আভাস দিয়েছে।
×