ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমি যত দূরেই থাকি না কেন আপনারা সব সময় আমার হৃদয়েই আছেন ওরা জ্বালাও পোড়াও আর লাশ ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি

নৌকায় ভোট দিন, উন্নয়ন দেব ॥ ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহাসিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩০ মার্চ ২০১৮

নৌকায় ভোট দিন, উন্নয়ন দেব ॥  ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহাসিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৯ মার্চ ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা নৌকায় ভোট দিন আমি উন্নয়ন দেব। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার। বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশকে যখন স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছিলেন ঠিক তখনই ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। যে উন্নয়ন জাতির পিতা শুরু করেছিলেন সেই অপশক্তি বাংলাদেশে উন্নয়ন করতে দেয়নি। যারা দেশকে ভালই বাসে না তারা দেশের উন্নয়ন করবে কিভাবে? পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের ইচ্ছায় আমি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমি ইতোপূর্বে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি। ঠাকুরগাঁওয়ের সমস্ত উপজেলা, ইউনিয়ন ঘুরেছি। আমি যত দূরেই থাকি না কেন আপনারা সব সময় আমার হৃদয়ে আছেন। বাবা, মা, ভাই-বোনসহ যখন সকলকে হারাই তখন আপনাদের মাঝেই তাদেরকে খুঁজে পাই। আমি আপনাদের মাঝে ফিরে পেয়েছি মাকে। তাই আপনাদের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড়মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম এমপির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মাহমুদা আতিক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিনা জাহান লিটা এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মুহাঃ সাদেক কুরাইশী। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০৮ ও ২০১৪ এর নির্বাচনে আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন। ২০১৪ সালে ওই বিএনপি ভোট ঠেকানোর নামে প্রিসাইডিং অফিসারকে পুড়িয়ে হত্যা করে। ঠাকুরগাঁওয়ে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার জোবাইদুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে। নির্বাচন বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। তারা রেল পুড়িয়েছে, মানুষ পুড়িয়েছে। তারা জ্বালাও-পোড়াও আর লাশ ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। নৌকাই তো মানুষকে দেয়, নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। নৌকায় ভোট দিয়েই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, নৌকায় ভোট দিয়ে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি। কিছুক্ষণ আগে আমরা এখানে বিশাল উন্নয়ন কর্মসূচী উদ্বোধন করেছি। এর বাইরেও কিছু কর্মপন্থা কর্মসূচী এমপি-মন্ত্রিরা উদ্বোধন করেছেন। আজকে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান করেছি, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করে যাচ্ছি এবং এ দেশের শিক্ষাকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছি ছেলেমেয়েদের জন্য। প্রত্যেক উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করে দিচ্ছি। আমরা দেশের উন্নয়ন করতে চাই। দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। আমরা দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। আমরা বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এই বয়স্ক ভাতা আর কেউ দেয়নি। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই বয়স্ক ভাতা চালু করা হয়। বর্তমানে ৬৭ লাখ মানুষকে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদান করছি। ১৪২ টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছি। যার শুভ ফল পাচ্ছে এ দেশের মানুষ। একটা সংসারে প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়ের জন্ম বাবা-মার জন্য কত কষ্টের; সেই কষ্ট লাঘবের জন্য ৮ লাখ প্রতিবন্ধীকে মাসিক ভাতা, ৮০ হাজার প্রতিবন্ধী শিশুকে বৃত্তি দিচ্ছি। ২ কোটি ৪ লাখ ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ১ লাখ ৩০ হাজার বৃত্তির টাকা মায়েরা মোবাইল ফোনে পাচ্ছেন। আজকে মোবাইল ফোন মায়েরা কিভাবে পেলেন। বিএনপির আমলে মোবাইল ফোন ছিল না। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই মোবাইল ফোন উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আজকে সকলের হাতে মোবাইল ফোন। আজকে আমি দেখতে পাচ্ছি মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। আজ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। ১৩ কোটি সিম ব্যবহার হয়। ৫ হাজার ২৭৫ টা ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। ৮ হাজার ৫শ’ পোস্ট অফিস ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। সেখান থেকে সব ধরনের তথ্য পেতে পারেন। এই সেন্টারের মাধ্যমে আমাদের মা-বোনদের যে কোন রকমের সমস্যা কম্পিউটার ল্যাপটপ দিয়ে সমাধান করা যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা, যারা এখনও হতদরিদ্র তাদের ভাতাও বৃদ্ধি করে দিয়েছি। আমাদের দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তাদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশ উন্নত হোক, আমরা সেটা চাই। আপনাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করান। আপনাদের কষ্ট করে বই কিনতে হয় না। সে খরচের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। আমরা ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ খানা বই বিনা পয়সায় পহেলা জানুয়ারি আপনাদের ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। প্রতিটি স্কুল-কলেজে নতুন নতুন ভবন তৈরি করে দিয়েছি। আমরা সামনের মাসে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছি। যার ফলে কম্পিউটার ব্যবহার ও অনলাইন সেবার মান উন্নত হবে। ঘরের কাছে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। ১৮ হাজার ৫শ’ কমিনউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে। ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় আপনাদের সরবরাহের ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ করে দিয়েছে। আমরা কমিনউনিটি ক্লিনিক চালু করার পর বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেগুলো বন্ধ করে দেয়। পরবর্তিতে আবার ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় চালু করেছি। ওই ক্লিনিকেই নিরাপদ প্রসবসহ যাবতীয় চিকিৎসা আপনারা পাচ্ছেন। এমনকি ডায়াবেটিস, রক্তচাপ আছে কিনা সেই পরীক্ষাও করা যাচ্ছে। প্রত্যেক হাসপাতাল যা ৩১ বেড ছিল সেগুলো ৫০ শয্যায় রুপান্তর করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই যে ফখরুল ইসলাম দিনরাত কথা বলতে বলতে গলা খারাপ হয়ে যায়। মিথ্যা কথা বলার একটা সীমা আছে। সারাদিন মিথ্যা কথা বললে আল্লাহ নারাজ হয়ে যায়। সে ছিল বিমান প্রতিমন্ত্রী। সে যে বিমান প্রতিমন্ত্রী ছিল বিমানের সে কি উন্নয়ন করেছিল বলেন। বিমানের প্লেন নেই, বিমান চলে না, রানওয়ে নষ্ট, টাকা লুটপাট করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকমানের ৮টি বিমান আমরা ক্রয় করেছি। আরও ২টি বিমান আসবে। আপনাদের পার্শ¦বর্তী সৈয়দপুর বিমানবন্দর আমরা চালু করে দিয়েছি। রাজশাহী, বরিশাল এয়ারপোর্ট বন্ধ করেছিল সেগুলো চালু করে দিয়েছি। এরা ধ্বংস করতে জানে, দিতে জানে না। এরা সৃষ্টি করতে জানে না। এরা মানুষের টাকা লুটপাট করে খেতে জানে; মানুষকে দিতে জানে না। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে ৫ বার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এই দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন কেন হলো। খালেদা জিয়া ও তার ছেলেরা টাকাপয়সা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। এটা আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা বের করেছে। সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে তার ছেলেদের লুটপাটের টাকা। সেই টাকা বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে জনগণের কাজে লাগাচ্ছি। ১৬ টি জেলায় নির্বাচন বন্ধের নামে তারা আগুন দিয়ে মায়ের সামনে মেয়ে, বাবার সামনে ছেলে, স্ত্রীর সামনে তার স্বামীকে পুড়ে মারে। ৩ হাজার ৩৬ জনকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। সাড়ে ৩ হাজার বাস তারা পুড়িয়েছে। ড্রাইভার, হেলপারকে পুড়িয়েছে। সিএনজি ড্রাইভারকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। এমনকি পুলিশকেও হত্যা করেছে। বিএনপির আমলে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার; আমরা বিদ্যুতের উন্নয়ন করেছি। মানুষকে হত্যা করে তারা কোথায় নিয়ে যেতে চাইছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেআমরা নতুনভাবে রেললাইন করে দিচ্ছে। পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত আমরা ডুয়েল গেজ লাইন করে দিয়েছি। রাস্তাঘাট চার লেনে উন্নীত করে দিয়েছি। যেখানে কম ট্রাফিক সেখানে ২ লেনে করে দিচ্ছি। নতুন নতুন রাস্তাঘাট আমরা করে দিয়েছি। আমার কাছে দাবি করার কিছু নেই। আমি পুরো বাংলাদেশ ঘুরেছি। আমি যেভাবে পেরেছি সেভাবে সারা দেশ ঘুরেছি। বাংলাদেশের কোথায় কি প্রয়োজন তা ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমি আমার বাবার কাছে শুনেছি কিভাবে উন্নয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি মনে করি আমি আপনাদের সেবক। আর ওই বিএনপি, তারা তো দুর্নীতি করতেই ব্যস্ত। তারা ৯শ’ ৮০ কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এখনও ফেরত দেয়নি। অথচ তাদের তো কোন অভাব নেই। বিদেশ থেকে এতিমের জন্য টাকা এলেও সব টাকা নিজের কাছে রেখেছে, সব টাকা আত্মসাৎ করেছে। মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার; আদালত রায় দিয়েছে। এতিমের টাকা মেরে খেলে সাজা তো হবেই। যে এতিমের টাকা মেরে খায় তার জন্য আবার আন্দোলন কিসের। আমরা জনগণকে দিতে এসেছি। জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাজ জনগণের কল্যাণ করা, জনগণের মঙ্গল করা। আর আমরা সেই কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করাই আমাদের কাজ। আর আমরা তা করে যাচ্ছি। আর সেটাই আমরা করব, সেটাই আমাদের ওয়াদা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। বিএনপি এলে হয় না। তার কারণ যুদ্ধাপরাধী, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, উন্নয়ন চায়নি, যারা মানুষকে গরিব করে রাখতে চেয়েছে; তারা উন্নয়ন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, বর্গা চাষিরা বিনা জামানতে যাতে করে ঋণ পায় সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। ’৯৮ সাল থেকে তাদের ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আজকে কৃষকরা ১০ টাকায় ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। সেই এ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা সরাসরি আসবে। ওই টাকা কৃষক ব্যবহার করতে পারে। আমরা কৃষকের কৃষি উপকরণ কার্ড করে দিয়েছি। ২ কোটির ওপর কৃষক কৃষি উপকরণ কার্ড পাচ্ছে; সেটা দিয়ে কৃষি উপকরণ কিনতে পারে। সারের জন্য কৃষককে আর জীবন দিতে হয় না। ১৮ কৃষককে বিএনপি হত্যা করেছিল সারের জন্য। আওয়ামী লীগ আসার পর কৃষককে আর সারের জন্য চিন্তা করতে হয় না। তাদের বাড়ি বাড়ি সার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে বাংলাদেশ আর দরিদ্র দেশ নয়। উন্নয়নশীল দেশ। এই যে বিশ্বে মর্যাদা আমরা পেয়েছি তার কারণ আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আমি কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। তার মাধ্যমে যুব সমাজ যাতে করে বেকার না থাকে সেখান থেকে বিনা জামানতে স্বল্প সুদে ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবে। সেই ঋণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করেছি। যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের জন্য আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি। গ্রামের পরিবারগুলো স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু করেছি। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে আপনাদের টাকা জমানোর ব্যবস্থা করেছি। গ্রাম বাংলার একটা ঘরও যেন দরিদ্র না থাকে সেজন্য এই প্রকল্প আমরা নিয়েছি। যারা ভূমিহীন তাদের মাঝে আমরা জমি বিতরণ করছি। তাদের জন্য গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প ও আশ্রয়ণ প্রকল্প করে ঘর ও ঋণ দিচ্ছি। বাংলাদেশে কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। বিএনপির আমলে দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ শতাংশে এনেছি। আমরা চাই আমার দেশ এগিয়ে যাক। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি মর্যাদা নিয়ে চলুক। এটা আমরা চাই। শেখ হাসিনা বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন নেই সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন করে দেব। এই ঠাকুরগাঁওয়ে যাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হয় সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেব। এই জেলা খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা। এই জেলায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল যাতে গড়ে ওঠে তার জন্য অর্থনৈতিক জোন ও ইকোনমিক জোন করে দেব। ভুল্লী থানা করে দেব। ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়ক রাস্তা প্রশস্ত করে দেব। ছেলেমেয়েদের ট্রেনিংয়ের জন্য আইটি পার্ক করে দেব। মহিলাদের জন্য কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করে দেব। প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরগাঁওয়ের সমস্ত রাস্তাঘাট, ড্রেন উন্নত করে দিব। প্রত্যেক উপজেলায় একটি মসজিদ ও ইসলামিক কালচার সেন্টার করে দেব। প্রধানমন্ত্রী মা-বাবা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি ছেলেমেয়েদের দিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান। মাদক, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস থেকে দূরে রাখার জন্য তাদের প্রতি নজর রাখতে বলেন। যেহেতু খালেদা জিয়া রেল বন্ধ করে দিয়েছিল; ঠাকুরগাঁও থেকে যেন আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয় সে ব্যবস্থা করে দেব।
×