ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্না বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:০১, ৩০ মার্চ ২০১৮

বায়ান্না বাজার  তিপ্পান্ন গলি

বিপুল উৎসবের অপেক্ষা। আর মাত্র কয়েকটা দিন। দেখতে দেখতে চলে যাবে। এর পরই নতুন বছর। ১৪২৫ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নেবে বাঙালী। মহা উদ্যাপনের প্রস্তুতি চলছে এখন। আর প্রস্তুতি পর্বটা সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয় রাজধানী শহর ঢাকায়। এরই মাঝে চোখে পড়ছে বৈশাখকেন্দ্রিক ব্যস্ততা। তবে উৎসবের রংটা ফুটে ওঠে মূলত পোশাকে। মার্কেট শপিংমলগুলোতে এখন চলছে সেইসব পোশাকের প্রদর্শনী। দেশীয় পোশাকের জন্য আলাদা পরিচিতি পেয়েছে বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের ‘দেশী দশ।’ এখানে দশটি শো-রুম। একটির গা ঘেঁষে আরকেটি। বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লোকজ নানা ফর্ম ব্যবহার করে দারুণ সব পোশাক তৈরি করা হয়েছে। এসবে তুলে ধরা হয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্য। একসময় নববর্ষের প্রথম দিন লালপাড় সাদা শাড়ি পরে ঘর থেকে বের হতেন নারীরা। পুরুষের গায়েও থাকত সাদা পাঞ্জাবি। এখন লাল সাদা রঙের বহুবিধ ব্যবহার দেখা যায় বৈশাখের পোশাকে। দেশী দশ’র সবকটি শোরুমেই লাল সাদা রঙের প্রাধান্য। আছে গেরুয়া রঙের পোশাক। পছন্দের পোশাক কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতা। ফ্যাশন হাউস দেশালের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় আমিরুল ও রুখসানা দম্পতির সঙ্গে। এত আগেভাগে কেনাকাটা কেন? জানতে চাইলে রুখসানা বলেন, পরে এসে সব ডিজাইন দেখা যায় না। যা আছে তাই নিতে হয়। আগে আসায় পছন্দ করে কেনা সম্ভব হচ্ছে। আমিরুল অবশ্য স্ত্রীর আগ্রহেই আগেভাগে মার্কেটে এসেছেন বলে মনে হলো। বললেন, নববর্ষ উদ্যাপন নিয়ে বহু প্ল্যান করে রেখেছে ও (স্ত্রী)। সব বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। তাই আগেভাগে শপিং করতে চলে এসেছি। আজিজ মার্কেটেও আছে দেশীয় পোশাক। তবে গত কয়েকদিন মার্কেট ঘুরে মনে হলো, এবারের বৈশাখের পোশাক এখনও পুরোপুরি আসেনি। অল্প অল্প করে সেজে উঠছে দোকানগুলো। তৃতীয় তলায় ফ্যাশন হাউস কাপড়-ই বাংলা। বৃহস্পতিবার শোরুমের সামনের অংশে সাজসজ্জার কাজ চলছিল। ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার মুরসালিন বিথুন বললেন, পহেলা বৈশাখে গ্রামের মানুষেরা নিজেদের ঘর বাড়ি পরিষ্কার করেন। সাজান। ওঠানে আল্পনা আঁকেন। আমরা ব্যবসায়ীরাও সে ঐতিহ্য মেনে যতটা সম্ভব শোরুমগুলোকে সাজিয়ে নিচ্ছি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পুরো মার্কেট বৈশাখের রঙে সাজবে বলেও জানান তিনি। পোশাকের সংগ্রহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে সব ডিজাইন একসঙ্গে শোরুমে আনা হয় না। ধীরে ধীরে আসবে। এবার উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কথা। বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্যাপিত হচ্ছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে উৎসব অনুষ্ঠান। বুধবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে চলছে সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব। ‘ঐক্যের সুরে বাঁধো সাম্যের গান’ সেøাগানে আয়োজিত উৎসবে মুখর গোটা এলাকা। গত ২০০৯ সাল থেকে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সত্যেন সেনের জন্মদিবসে এই উৎসব আয়োজন করা হয়ে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় এবারের আয়োজন। তিন দিনব্যাপী উৎসবে উদীচীর শত শত কর্মী যোগ দিয়েছেন। এর আগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা পর্যায় থেকে উঠে আসা গণসঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে সনদ ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব আজ শুক্রবার শেষ হবে। আবারও আলোচনায় বিজিএমইএ ভবন। হাতিরঝিলে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন নিয়ে কত যে কেচ্চা কাহিনী। হাইকোর্ট সুপ্রীমকোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায়ে ভবন ভাঙতে ও কার্যালয় অন্যত্র সরাতে বলা হয়েছে সেই কবে। আজও তা কার্যকর করা হয়নি। বারবার সময় চাইছিলেন বিজিএমইএয়ের নেতারা। এ পর্যায়ে ভবিষ্যতে আর সময় চাইবে না এমন মুচলেকা দিতে মঙ্গলবার বিজিএমইএকে আদেশ দেন আপীল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, এমন মুচলেকা পেলে এক বছর সময় চাওয়ার আবেদন আপীল বিভাগ বিবেচনা করবেন। মুচলেকা দিয়েছেন নেতারা। সব দেখে এটা অনুমান করা যাচ্ছে যে, হাতিরঝিলের জলের উপর অবৈধভাবে নির্মিত ভবনটি সরছে। আজ হোক কিংবা কাল, সরছে বিজিএমইএ ভবন।
×