ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরে দেখা

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৩০ মার্চ ২০১৮

ফিরে দেখা

গ্যাস খেয়ে প্রথম কাঁদার অভিজ্ঞতা! রুমেল খান ॥ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের নবম আসরের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। আরামবাগের এই সাফল্য ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর। ইতিহাস গড়েই চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। ৬০ বছরের পথ পরিক্রমায় ঘরোয়া ফুটবলে এটাই ছিল তাদের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় শিরোপা অর্জন। ফাইনাল খেলা দেখতে প্রায় আট হাজার দর্শক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত ছিল। বহুদিন পর গ্যালারিতে দর্শক-জোয়ার দেখলাম। ওইদিন ফাইনাল খেলা শেষ হবার আগে গ্যালারির একটি অংশে দর্শকদের মধ্যে প্রচন্ড মারামারি এবং চেয়ার ভাঙচুর হয়। ফলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকে তৎপর হতে দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা অবশ্য বেশি সময় নেয়নি। তবে এর অন্যথা ঘটলে নিশ্চয়ই লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের প্রয়োগ করতে হতো তাদের। যখন দর্শকরা গন্ডগোল করছিল, তখন পুলিশদের তৎপরতা দেখে ফিরে গিয়েছিলাম ২৫ বছর আগের স্মৃতিময় একটি ঘটনায়। ১৯৯৩ সালের সম্ভবত জুন-জুলাই মাস। সদ্য এসএসসি পাস করেছি। ঘোড়াশাল থেকে ঢাকায় এসেছি কোন একটি কলেজে ভর্তি হবার আশায়। থাকি নানার বাসায়। একদিন এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এলাম স্কুল জীবনের বন্ধু নাজমুল ইসলাম হেলালের সঙ্গে। উদ্দেশ্য আবাহনী বনাম রহমতগঞ্জের মধ্যে প্রিমিয়ার লীগের খেলা উপভোগ করা। দুই বন্ধুই আবাহনীর সমর্থক। খেলাটি গোলশূন্য ড্র হলো। আর যায় কোথায়, রেফারিকে উদ্দেশ্য করে ক্ষিপ্ত দর্শকরা গ্যালারি টপকে মাঠে ঢুকে হামলা করল। অনেকে আবার গ্যালারি থেকে ইট-পাটকেল সমানে ছুঁড়ছে মাঠে। পুলিশ মাঠে ও গ্যালারিতে ঢুকে লাঠিচার্জ করছে। আমরা ছিলাম আবাহনীর গ্যালারিতে। হঠাৎ দেখলাম মাঠের মাঝখানে পুলিশবাহিনী একটা যন্ত্র বসিয়ে আমাদের দিকেই তাক করছে। একটু পরেই শব্দ করে কিছু একটা গ্যালারিতে এসে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গেই চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে গেল। অসহ্য যন্ত্রণা। প্রচুর জল পড়ছে। নাজমুল বলল, ‘দোস্ত, এটা টিয়ার গ্যাস। জলদি গ্যালারি থেকে বের হও!’ গ্যালারিতে তখন গ্যাসের প্রভাবে দর্শকরা পাগলা-নাচ নাচছে! অনেক কষ্টে ভিড় ঠেলে গ্যালারি থেকে বের হয়ে স্টেডিয়ামের বাইরে রাস্তায় চলে এলাম। কিন্তু চোখের জ্বালাপোড়া তো কমছে না। নাজমুল বলল, ‘দেখ, কোথাও পানি পাও কি না।’ একটু এগুতেই একটা হোটেল নজরে এলো। ঢুকেই জগভর্তি জল চোখে-মুখে ছিটিয়ে দিতে লাগলাম। মিনিটখানেক পরেই আরাম লাগল এবং দুই চোখই পুরোপুরি মেলতে পারলাম। জীবনের প্রথম কাঁদানে গ্যাস খাবার অভিজ্ঞতার কথা আবারও মনে পড়ে গেল ২০১৮ সালে এসে আরামবাগ-চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলায় গন্ডগোল দেখে। কলিং বেল রহস্য শাহীন রহমান॥ বাসার কলিং বেল বেজে ওঠে। কিন্তু দরজা খুলে কাউকে পাওয়া যায় না। এ ধরনের রহস্যজনক ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে। বুঝে উঠতি পারছি না কারা এ ধরনের বেল টিপে সরে পড়ে। ঘটনাটা রহস্যজনক মনে হয়। অবশ্য বাসার মালিক বা অন্য কাউকে বলা হয়নি। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। সিড়িতে লোকজনের বেশ সরগোল মনে হলো। দরজা খুলে বোঝার চেষ্টা করছি কি ঘটেছে। সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে দেখি মালিকের ফ্লাটের সামন্যে দুটি ছেলে, বাসার ম্যানেজার ও মালিক দাড়িয়ে। ছেলে দুটিকে প্রহার চলছে। দাড়োয়ানকে জিজ্ঞেস করতেই বলল এরা কলিং বেল টিপে দ্রুত সরে পড়ছিল। বারবার চেষ্টার পর তাদের ধরা হয়েছে। কলিং বেল টিপে তারা বোঝার চেষ্টা করে বাসায় কেউ আছে কিনা। সাড়া না পেলে তখন চুড়ির ধান্দা করে। এ ঘটনায় কলিং বেলের আসল তথ্য বের হলো। অবশ্য বাসায় কোনদিন চুড়ির ঘটনা ঘটেনি। তবে এ ঘটনা সবার সচেতনতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
×