ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ স্কুল ফুটবল

নতুন চ্যাম্পিয়ন উজানটিয়া ও দোহারো স্কুল

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২৯ মার্চ ২০১৮

নতুন চ্যাম্পিয়ন উজানটিয়া ও দোহারো স্কুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চৈত্রের দুপুরের খরতাপে এবং শেষ বিকেলের কিঞ্চিত মৃদুমন্দ হাওয়ায় পাওয়া গেল দুই নয়া শিরোপাধারী স্কুলকে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট (অষ্টম আসর) এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে (সপ্তম আসর) নতুন দুটি দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বালক বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়ার পূর্ব উজানটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাইনালে তারা ২-১ গোলে পাবনার সাঁথিয়ার ভুলবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারায়। বালিকা বিভাগে শিরোপা জেতে ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহারো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাইনালে তারা টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের পাঁচরুখী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে খেলাটি ১-১ গোলে ড্র হয়। খেলাটি উপভোগ করতে চার স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা গ্যালারি মাতিয়ে রাখেন। সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১৫ হাজার। উল্লেখ্য, সারাদেশ থেকে ছেলে ও মেয়েদের ৬৪,৬৮৮ এবং ৬৪,৬৮৩ স্কুল অংশ নেয় এই টুর্নামেন্টে। অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় ছিল বালক বিভাগে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৬ এবং বালিকা বিভাগে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬১১। গত ১৯-২৫ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সাত বিভাগের টুর্নামেন্ট দুটি বিভাগীয় পর্যায়ের ১৪ চ্যাম্পিয়ন দল নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বালক বিভাগের চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজারের উজানটিয়া স্কুল ১৫ ম্যাচে ৫০ গোল করে। ফাইনালেই একমাত্র গোলটি হজম করে তারা। নির্ধারিত সময়ে খেলার স্কোরলাইন ছিল ১-১। অতিরিক্ত সময়ে ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় স্কুলটি। উজানটিয়ার রহমত মিয়া ২৬ ও আইনুল করিম ৫০+৭ মিনিটে এবং ভুলবাড়িয়া স্কুলের আতিয়ার রহমান ৪৯ মিনিটে ১টি করে গোল করে। ফাইনাল শেষে চ্যাম্পিয়ন উজানটিয়া স্কুলের কোচ সিরাজুল কবির বলেন, ‘সারাবছর আমরা অনুশীলন করেছি। আর ওদের বাবা-মা’র উৎসাহও ছিল। পেকুয়ায় ফুটবল একটা কালচার। সবাই ফুটবলার হতে চায়। আমরা ভাল খেলেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’ দলের অধিনায়ক আইনুল করিমের ভাষ্য, ‘আমরা এই প্রথম গোল খেয়েছি। এবার প্রথমবার ফাইনালে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। খুবই ভাল লাগছে।’ রানার্সআপ পাবনার ভুলবাড়িয়া স্কুলের কোচ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আসলে ফাইনালের আগে বেশিদিন অনুশীলন করতে পারিনি। ছেলেরা ওইভাবে খেলতে পারেনি। রানার্সআপ হয়েছি, তারপরও খুশি। এতদূর আসতে পেরেছি।’ ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের ফাইনালটি ছিল বেশি উপভোগ্য। দোহারো স্কুলের বন্যা খাতুন ১৬ এবং পাঁচরুখী স্কুলের তানিয়া আক্তার ১০ মিনিটে ১টি করে গোল করে। ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহারো স্কুলের কোচ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল, আমরাই জিতব। তাদের দলের প্লেয়াররা উচ্চতায় অনেক বড় ছিল। সেটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছি।’ এই টুর্নামেন্টে স্কুলটি কমপক্ষে ৫০ গোল করেছে বলে জানান রবিউল। টাইব্রেকারে জয়ী দলের শেষ গোলদাতা এ্যানি বলে, ‘গোল করার আগে অনেক ভয়ে ছিলাম। তবে আমাদের মনোবল ছিল যে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।’ রানার্সআপ দলের ময়মনসিং-৯ আসনের এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান বলেন, ‘নিশ্চিত ছিলাম যে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গেছি। খেলাটা টাইব্রেকারে চলে যাবে এটা কল্পনাও করিনি। নয় মাস ট্রেনিং করিয়েছি। ঢাকা থেকে কোচ যায়নি। কলসিন্দুরের কোচ মকবুলকে নিয়ে এসেছিলাম। উনি রীতিমত দলটাকে অনুশীলন করিয়েছেন। বঙ্গমাতায় আমরা এবারই জাতীয় পর্যায়ে প্রথম এসেছি। আর প্রথম এসেই ফাইনালে খেলছি।’ টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলদাতা বিজয়ী দলের উন্নতির বাবা রিক্সা চালায়। নয় ভাই বোন তারা। সবাই স্টেডিয়ামে এসেছিলেন খেলা দেখতে। উন্নতির ভাষ্য, ‘আমরা যেন ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছু করতে পারি সেই দোয়া চাই সবার কাছে।’ বরাবরের মতো এবারও খেলা শুরুর আগে স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে ঢুকতে দেয়া নিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্থা করা হয়েছে। নিজ অফিসের পরিচয়পত্র থাকার পরও বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের দোহাই তুলে সাংবাদিকদের প্রেসবক্সে ঢুকতে বাধা দেয় স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) দায়িত্বরত কর্মর্কতারা।
×