ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মনিরামপুর হাসপাতালে রোগী আছে ডাক্তার নেই

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৯ মার্চ ২০১৮

মনিরামপুর হাসপাতালে রোগী আছে ডাক্তার নেই

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ১০টা ১০ মিনিট। বহির্বিভাগে টিকেট নিয়ে বসে আছেন ৩০-৪০ জন রোগী। নেই কোন ডাক্তার। রোগীদের কেউ কেউ টিকেট হাতে ঘোরাফেরা করছেন। কেউবা আবার টিকেট কাউন্টারে গিয়ে ডাক্তারের খোঁজ নিচ্ছেন। কারও আবার অপেক্ষার প্রহর পেরিয়েছে ঘণ্টার ওপরে। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা মিলছে না। চিত্রটি বুধবারের, যশোরের মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের। হাসপাতালটির এমন চিত্র নতুন নয়। প্রায়ই বহির্বিভাগে গেলে এমন চিত্র চোখে পড়ে। হাসপাতালে এসে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রোগীদের অহরহ। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বেলা ১০টার দিকে হাসপাতালটির বহির্বিভাগে গিয়ে সত্যতা মিলেছে। ওই বিভাগের এক নম্বর কক্ষে ডাক্তার অনুপকুমার বসুকে দেখাবেন বলে নারী-পুরুষসহ অন্তত ১০ রোগী টিকেট জমা দিয়ে বসে আছেন। তিনি চেম্বারে নেই। খবর নিতেই তার সহকারী জানান, স্যার আছে, আসবেন। দুই নম্বর কক্ষের দরজা মুখোমুখি লাগানো। ভেতরে কেউ নেই। ওই কক্ষের বাইরের ওয়ালে ডাঃ আমিরুজ্জামান ও ডা. রাজিব কুমার পালের নেমপ্লেট রয়েছে। চার নম্বর কক্ষের দরজা টানা। ভেতরে ডাক্তারের চেয়ার খালি। ওই কক্ষের দরজায় ডাক্তার রেহেনেওয়াজের নেমপ্লেট। ১৩ নম্বর কক্ষে রোগী দেখেন ডাক্তার জেসমিন সুমাইয়া। তার চেয়ারটাও খালি। ছয় নম্বর কক্ষে রোগী দেখেন একজন উপ-সহকারী। তার রুমে ফ্যান চলছে, তিনি নেই। ডাঃ অনুপ কুমার বসুকে দেখাবেন বলে তার কক্ষে বসে আছেন হেলাঞ্চি গ্রামের বৃদ্ধা হালিমা বেগম। তিনি বলেন,‘সকাল আটটার পরে আইছি। এখনও ডাক্তার পাইনি।’ ওই ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে আছেন একই গ্রামের তানজিলা। তিনিও এসেছেন সাড়ে নয়টায়। একই চিকিৎসকের অপেক্ষায় দুর্গাপুর গ্রামের বৃদ্ধ মাসুদ আলী। তিনিও ডাক্তার পাননি বলে জানিয়েছেন। এদিকে বহির্বিভাগে গণমাধ্যম কর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি চেম্বারে ঢুকেছেন ডাঃ অনুপ বসু ও ডাঃ জেসমিন সুমাইয়া। বাকিরা কেউ বহির্বিভাগে তাদের চেম্বারে আসেননি। জানতে চাইলে ডাক্তার অনুপ বসু বলেন, ‘স্যারের রুমে মিটিং-এ ছিলাম।’ ডাঃ জেসমিন সুমাইয়াও একই কাজে ছিলেন বলে জানা গেছে। খোঁজ নিতেই জানা গেল, ডাক্তার আমিরুজ্জামান জরুরী বিভাগে আছেন। তবে সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবর্তে সেবা দিচ্ছেন একজন উপ-সহকারী। আর ডাক্তার রেহেনেওয়াজ দোতলায় ট্রেনিং করাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে এদের কেউই পৌনে ১০টার আগে হাসপাতালে আসেননি বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছেন। যদিও সকাল সাড়ে আটটায় তাদের কর্মস্থলে আসার কথা।
×