ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বাণিজ্যমেলায় শেষ সময়ে মূল্য ছাড়ের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৯ মার্চ ২০১৮

চট্টগ্রাম বাণিজ্যমেলায় শেষ সময়ে মূল্য ছাড়ের হিড়িক

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মাসব্যাপী চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এখন শেষ সময়ের বিকিকিনি। মেলার বেশিরভাগ সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দিয়েছে পণ্যের মূল্যে বিশেষ ছাড়। দর্শনার্থীর সংখ্যাও এখন প্রতিদিনই বাড়ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইন ধরে ঢুকছে হাজার হাজার মানুষ। মেলায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার বিক্রিও যথেষ্ট ভাল। বাণিজ্যমেলায় অংশ নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপগুলো। প্যাভেলিয়নগুলোকে নান্দনিক সাজে সাজানোর প্রতিযোগিতাও লক্ষ্যণীয়। প্রবেশ পথ মাড়িয়ে ঢুকতেই প্রথমে আবুল খায়ের গ্রুপের প্যাভেলিয়ন। দৃষ্টিনন্দন এ প্যাভেলিয়নটির চেহারা অন্য সকল প্যাভেলিয়ন এবং স্টলের চেয়ে আলাদা। ফলে তা নজর কেড়েছে দর্শনার্থীদের। কাছাকাছি দূরত্বে রয়েছে ইস্পাহানি গ্রুপ, ইউনিলিভার, আরএফএল, টি. কে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, ব্রাদার্স, আকিজ গ্রুপ, হাতিল এবং ছোট বড় আরও বেশ ক’টি প্রতিষ্ঠানের স্টল। এছাড়া মেলাজুড়ে চার শতাধিক স্টল সেজেছে বস্ত্র, গৃহস্থালি পণ্য, ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রিক্যাল, রান্নাঘরের সামগ্রি, খেলনা, পাদুকাসহ হাজারও রকমের পণ্যের সম্ভারে। ক্রেতারা যাচাই বাছাই করে কিনে নিচ্ছেন তাদের পছন্দের পণ্যটি। পলোগ্রাউন্ড অভিমুখে নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোর নির্বিশেষে সকল বয়সের মানুষের স্রোত। বাণিজ্যমেলার কারণে টাইগার পাসের সড়কটিতে অনেক রাত পর্যন্ত থাকছে যানজট। ছুটির দিনে অনেকটাই যেন অচলাবস্থা। ভোগান্তি কিছুটা হলেও নগরবাসী মেনে নিচ্ছেন। কেননা, বছরে এতবড় একটি আয়োজন এখন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নিচ্ছে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করে থেকে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। মাসব্যাপী এই মেলায় দর্শনার্থী হয় ৩০ লক্ষাধিক। এই মেলা এখন বছরের এ সময়ে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। কেনাকাটা ছাড়াও নারী, শিশু, কিশোরসহ সকল বয়সের মানুষ যায় খানিকটা বেড়ানোর জন্যও। কারণ, ইট পাথরের নগরীতে বেড়াবার পর্যাপ্ত জায়গা তো সীমিত। আবুল খায়ের গ্রুপের রিসার্চ এ্যান্ড এক্টিভেশন অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসাইন সমীর জানান, বাণিজ্যমেলায় আবুল খায়ের গ্রুপের অবস্থান এবং উপস্থাপনা বরাবরই ব্যতিক্রমী। এবারও তাই হয়েছে। আড়াই হাজার বর্গফুট আয়তনের স্টলটি সাজানো হয়েছে শৈল্পিক কারুকার্যে। ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ছে এই প্যাভেলিয়ন। দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বেশি। আবুল খায়ের গ্রুপের আকার বিশাল। পুরো গ্রুপকে মেলায় উপস্থাপন করা কষ্টসাধ্য। এখানে শুধু তুলে ধরা হয়েছে গুঁড়ো দুধ, চা পাতা, জুসসহ কনজুমার প্রোডাক্টগুলো। রয়েছে মেলা উপলক্ষে বিশেষ ছাড়। ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে কিনে নিচ্ছেন একসঙ্গে বেশি পণ্য। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এবারও পার্টনার কান্ট্রি থাইল্যান্ড। দেশটি বিগত ১৪ বছরের ন্যায় এবারও ৫ হাজার ৪শ’ বর্গফুট জায়গা নিয়ে বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া মেলায় অংশ নিয়েছে ভারত, ইরান, মরিশাসসহ বিভিন্ন দেশ এবং স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। মেলার ব্যাপ্তি প্রায় ৪ লাখ বর্গফুট। এতে রয়েছে ১৭টি প্রিমিয়ার গোল্ড প্যাভিলিয়ন, ১১টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৮টি স্টান্ডার্ড প্যাভিলিয়ন, ১৭২টি প্রিমিয়ার মেগা স্টল, ২৩টি মেগা স্টল, ১৪টি প্রিমিয়ার গোল্ড স্টল, ১৩টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৪টি স্ট্যান্ডার্ড স্টল, ৩টি রেস্টুরেন্টসহ ৪৫০টির অধিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা পরিদর্শন করছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে বাণিজ্যমেলা।
×