ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিজিএমইএর মুচলেকা সংশোধন করে ফের দাখিলের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৯ মার্চ ২০১৮

বিজিএমইএর মুচলেকা সংশোধন করে ফের দাখিলের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে কর্তৃপক্ষের দেয়া মুচলেকা সংশোধন করে তা পুনরায় দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আপীল বিভাগ। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী সোমবার দিন ধার্য করেছে আদালত। বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এর আগে শেষ বারের মতো এক বছরের সময় চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেয় বিজিএমইএর বর্তমান পরিচালনা পরিষদ। লিখিত মুচলেকায় বলা হয়, এরপর আমরা আর সময় চাইব না। আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ সময় আদালতে আরও উপস্থিত ছিলেন এ মামলায় হাইকোর্টের এ্যামিকাস কিউরি এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিজিএমইএর বোর্ড অব ডিরেক্টরদের পক্ষ থেকে একটি মুচলেকা দাখিল করা হয়। সেখানে বলা হয়, বোর্ড অব ডিরেক্টরস আর সময় চাইবে না। তারা যদি চায় তাহলে তারা দায়ী হবে। তখন কোর্ট প্রশ্ন তোলে যে, বিজিএমইএর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস ছয় মাস বা এক বছর পর নাও থাকতে পারে। সে বিষয়ের কোন ব্যাখ্যা নেই। পরে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে নতুন করে মুচলেকা দেয়ার কথা বলেন তাদের আইনজীবী। সেই মুচলেকায় বলা থাকবে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আর সময় চাওয়া হবে না। সময় শেষ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিএমইএ নিজেরাই ভবন ভাঙবে। আদেশ না মানলে বিজিএমইএ দায়ী থাকবে।এর আগে গতকাল আর সময় চাইবে না এমন মুচলেকা দিতে বিজিএমইএকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ বহুতল ভবনটি ভাঙতে আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ৮ এপ্রিল বিজিএমইএর বহুতল ভবনটি ভাঙতে সাত মাস সময় দেয় সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। আদেশে আদালত বলেছিলেন, এটাই শেষ সুযোগ। আর সময় দেয়া হবে না। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভবন ভাঙতে আদালতের দেয়া নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই সময় চেয়ে আবেদন করেন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ৫ মার্চ আপীল বিভাগ বিজিএমইএ ভবন অবিলম্বে ভেঙ্গে ফেলতে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) করা আবেদন খারিজ করে দেন। তখন ভবন ভাঙতে কত দিন সময় লাগবে, তা জানিয়ে আবেদন করতে বলেন। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ ভবন সরাতে তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করে। ১২ মার্চ আপীল বিভাগ আবেদন নিষ্পত্তি করে ছয় মাস সময় দেন ভবন সরাতে। ২০১৬ সালের ২ জুন বিজিএমইএর করা লিভ টু আপীল খারিজ হয়ে যায় আপীল বিভাগে। ওই বছরের ৮ নবেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে অবস্থিত বিজিএমইএর ১৬তলা ভবনটি অবিলম্বে সংগঠনের নিজ খরচায় ভেঙ্গে ফেলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ। এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার নির্দেশ দেয়া হয়। ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে বিজিএমইএ ভবন একটি ক্যান্সারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এই লিভ টু আপীল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন আপীল বিভাগ।
×