ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের রুল

খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়বে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৯ মার্চ ২০১৮

খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়বে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা আরও কেন বাড়ানো হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। রাষ্ট্র ও খালেদা জিয়াকে চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। দুদকের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। অন্যদিকে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া অনিবার্য কারণে আদালতে হাজির হতে পারেন নি। সে কারণে এ মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি পিছিয়ে গেছে। শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ ওই সময় পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। খালেদার আইনজীবীদের আবেদনে আদালত এ আদেশ প্রদান করে। বুধবার হাইকোর্ট ও ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত এ আদেশগুলো প্রদান করেছে। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের দ-প্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ কেন বাড়ানো হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ প্রদান করে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাজা বাড়ানোর আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত এ রুল জারি করে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোর আবেদনের বিষয়টি শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এ সময় আদালত বলে, আমাদের দেশে সাজা দেয়ার বিষয়ে কোন নীতি নেই। সুনির্দিষ্ট আইন নেই। আমরা দেখছি যে, ২ বোতল ফেনসিডিলের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হচ্ছে। আবার আড়াইশ বোতলের মামলায় সাজা দেয়া হচ্ছে ৫ বছর। শুনানির এক পর্যায়ে আদালত দুদক আইনজীবীর কাছে জানতে চান, খালেদা জিয়া মামলার মূল অভিযুক্ত হওয়ার পক্ষে কি প্রমাণ আছে? কেন আপীল না করে রিভিশন আবেদন করলেন এ বিষয়ে আদালতের প্রশ্নের জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, আসামিকে খালাস দিলেই কেবল দুদক আপীল করতে পারে। অন্যথায় আপীল করতে পারে না। একারণে শুধু সাজা বাড়াতে রিভিশন আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর শারীরিক অসামর্থ্য, বয়স্ক মহিলা, একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান এগুলো বলে তাকে (খালেদা জিয়াকে) ক্ষমা করার সুযোগ নেই। আদালত তার কাছে জানতে চায় যে পুরো রায়ের বিরুদ্ধে এ আবেদন কী না? জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, না। দুদক পুরো রায় চ্যালেঞ্জ করেনি। শুধু খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোর জন্যই রিভিশন আবেদন করেছে। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনিবার্য কারণে আদালতে হাজির হতে পারেন নি। সে কারণে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তিতর্কের শুনানি পিছিয়ে গেছে। শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল নতুন তারিখ রেখে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ ওই সময় পর্যন্ত বাড়িয়েছে আদালত। খালেদার আইনজীবীদের আবেদনে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান বুধবার এই আদেশ দেন। বুধবার আদালত ও কারাগার এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতের বাইরের সড়কে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। এ সময় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানকেও রাস্তায় দেখা যায়। আইনজীবী ও সাংবাদিকদের তল্লাশি করে তারপর আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেয়া হয়। এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। আর জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে ওই কারাগার থেকে সিকি কিলোমিটার দূরত্বে বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের মাঠসংলগ্ন বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে। এ আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামানই এতিমখানা দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার সাজার রায় দেন। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে না পারায় কারা কর্তৃপক্ষ কাস্টডি ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছে। সেখানে তারা বলেছেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই তাকে আদালতে হাজির করানো হয়নি। অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, অনিবার্য কারণে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করানো হয়নি। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বাড়ানোর আবেদন করেন। মোশাররফ হোসেন এর বিরোধিতা করে বলেন, খালেদা জিয়া অন্য একটি মামলায় কারাগারে আছেন। কারাগারে থাকার কারণে তার জামিনের কোন সুযোগ নেই। তখন সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, জামিনের সঙ্গে কারাগারে থাকা বা না থাকার কোন সম্পর্ক নেই। এর পর আদালত আগামী ৫ এপ্রিল মামলাটির তারিখ ধার্য করে। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করানো হবে।
×