ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী ॥ কাদের

সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল নিয়ে নির্বাচন সময়ের সরকার হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৯ মার্চ ২০১৮

সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল নিয়ে নির্বাচন সময়ের সরকার হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল নিয়ে নির্বাচন সময়ের সরকার গঠন করার কথা জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। গত ২৪ মার্চ মহাসমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন সময়ে সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের নেতাদের নিয়ে নির্বাচন সময়ের সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন সরকারের কাছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদের এমন দাবির পর সরকারের পক্ষে নির্বাচন সময়ের সরকার নিয়ে আনুষ্ঠানিক মুখ খুললেন ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুযায়ী দেশে যথাসময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে দেশ চালাবেন কে? (বিএনপি চেয়ারপার্সন) খালেদা জিয়া কি কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে দেশ চালাবেন? কবে নাগাদ নির্বাচন সময়ের সরকার হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের একটা সময়সীমা হয়ে গেছে, এর আগে নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে। এটা তো আমরা ঠিক করতে পারি না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে আসা না আসা বিএনপির নিজেদের ব্যাপার। সরকার কেন তাদের নির্বাচনে ডাকবে? নির্বাচন সময়ের সরকার গঠন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর মাঝ থেকে নির্বাচন সময়ের সরকার গঠন হবে। আর এটা পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বিএনপির র‌্যালির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল ২১ ফেব্রুয়ারিতে আমাদের অফিসের বারান্দায়ও সভা করতে দেয়নি। যখন তারা ক্ষমতায় ছিল তখন বিরোধীদলের কোন সুবিধা দেয়নি। ২৭ মার্চ জনদুর্ভোগের কথা ভেবে আমরা রুলিং পার্টি পর্যন্ত র‌্যালি করলাম না। তারা করল। তাই তাদের অভিযোগ অবান্তর। আগামী ২৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু এখনও অনুমতি পায়নি দলটি। অনুমতি পেতে মঙ্গলবার দলটির তিন শীর্ষ নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পুরনো কথা বলতে গেলে তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত, কিন্তু লজ্জা তারা পাবে না। কারণ তারা লজ্জা পাওয়ার দল না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দিলে বলে গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে, আর দিলে বলে সরকার বাধ্য হয়েছে। এখন সরকার কোন দিকে যাবে? তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে তারা শোভাযাত্রা করল, সেটা কি (প্রমাণ করে) সরকার স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় দেশ চালাচ্ছে? অনুমতি পেয়েও কি তারা এই কথা বলবে? নাকি এই কথা বলবে সরকার বাধ্য হয়েছে? প্রবলেম তো এখানে। আগামী ২৯ তারিখে ঘোষিত বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে সরকার কোন দিকে যাবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কোন দিকে যাবে তা পুলিশ কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করুন। এখানে নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। সরকারের আন্তরিকতার অভাব থাকলে, তারা কীভাবে গতকাল শোভাযাত্রা করল? সেই প্রশ্নটার জবাব দিক তারা। তিনি বলেন, তারা কি বলবে- সরকার বাধ্য হয়েছে! তারা বাংলাদেশে এমন কী মহাপ্লাবন ঘটিয়েছে যে, সরকার বাধ্য হবে। সেই সামর্থ্য-সক্ষমতা কি বিএনপি গত ৯ বছরে ৯ মিনিটের জন্যও দেখাতে পেরেছে! সামনে তো প্রশ্নই আসে না।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষ এখন ইলেকশনের মুডে, কেউ আর আন্দোলনের মুডে নেই। উন্নয়ন ও অর্জনে মানুষ খুশি। বিএনপির কোন অর্জনের ইতিহাস নেই। এখন লিভ সার্ভিস দিয়ে কি ভোট পাওয়া যাবে। ভোট পেতে হবে কাজ দিয়ে। তরঙ্গ বিক্ষোভ তো দূরের কথা একটা ঢেউও তো দেখলাম না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তারিখ ঘোষণার পর পরই রাতের বেলা এক কলমের খোঁচায় বিএনপি গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দিল কেন? এখন দুর্নীতিবাজ, কুখ্যাত ও উন্মাদের বিএনপির সভাপতি বা অন্য কোন পদে থাকতে বাধা নেই। নৈতিকতার বিষয়টি তারা বড় করে দেখছেন না? তিনি আরও বলেন, বিএনপি মেনেই নিয়েছে তারা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল, আত্মস্বীকৃত দণ্ডিত দল। ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কেন ৭ ধারা বাদ দিয়েছে এই প্রশ্নের জবাব, ফখরুল সাহেব বা অন্য কোন নেতার কাছে আমি আজও পাইনি। কেন (৭ ধারা বাদ দিলেন)- সেই প্রশ্নই আমি আবার করছি। তৃণমূলে আওয়ামী লীগই সবচেয়ে শক্তিশালী, দৃঢ় অবস্থানে আছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তৃণমূলের বিপুল সমর্থনের ওপর ভর করেই আমরা আগামী নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। সাম্প্রতিককালে এসব নির্বাচনে আমরা যখন বিজয়ী হই তখন নিউজ আসে না। আমি দেখছি তো ইউনিয়ন পরিষদে।
×