স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট। এক বছর পর যুক্ত হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্ট। ছেলে-মেয়েদের এই দুই টুর্নামেন্ট সাড়া জাগিয়েছে সারাদেশে। দেশের আনাচে-কানাচে থেকে উঠে আসা ক্ষুদে ফুটবলারদের মিলনমেলায় মুখরিত হবে আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। সেই মিলনমেলায় থাকছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করে বিজয়ী ফুটবলারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন তিনি। মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। আজ দুপুর দেড়টায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার পূর্ব উজানটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুখোমুখি হবে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছেলেদের ফাইনালের পর বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গমাতা ফুটবলের সপ্তম আসরের ফাইনালে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার পাঁচরুখী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মুখোমুখি হবে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার দোহারো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপক্ষে।
নান্দাইলের পাঁচরুখী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিনায়ক জেসমিন আক্তার হালিমা জানায়, ‘অনেক কষ্ট করে আমরা এই পর্যন্ত এসেছি। আশাকরি এবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এসেছি। আমরা যখন খেলতাম, তখন মাঠ থেকে বের করে দেয়া হতো। পরিবারও চাইতো না ফুটবল খেলি।’ দলটির কোচ মকবুল হোসেনও শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভাল। যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়েছে। মেয়েরা বমি করেছে। তবে এখন সবাই সুস্থ। আশাকরি চ্যাম্পিয়ন হতে পারব।’ শৈলকুপা দোহারো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোচ রবিউল ইসলাম। একই সঙ্গে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকও তিনি। পাঁচবার তার স্কুল জাতীয় পর্যায়ে খেলেছে। কিন্তু একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এবার আর খালি হাতে ফিরতে চান না রবিউল, ‘এ নিয়ে আমরা পাঁচবার জাতীয় পর্যায়ে খেলছি। আমাদের টিম অনেক অভিজ্ঞ। সবার পারফর্মেন্স ভাল। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা রাখি।’ একই আশা অধিনায়ক তাহমিনা খাতুনেরও, ‘আগের চারবারের মধ্যে একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। একবার তৃতীয় হয়েছি। এবার শিরোপা জিতেই ফিরতে চাই।’ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে ওঠা দুই স্কুলের কোচ ও অধিনায়কও ট্রফি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
উল্লেখ্য, সারাদেশ থেকে ছেলে ও মেয়েদের ৬৪,৬৮৮ এবং ৬৪,৬৮৩ স্কুল অংশ নিয়েছে এই টুর্নামেন্টে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এই টুর্নামেন্ট গিনেস বুকে নাম তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করার ক্রেডিট গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দিতেই হবে। এই টুর্নামেন্টে বাচ্চারা তাদের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পায়। আশাকরি কাল (আজ) আমরা দু’টি উপভোগ্য ম্যাচ দেখতে পারব।’