ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টেম্পারিংয়ের গুরু ডেভিড ওয়ার্নার

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২৮ মার্চ ২০১৮

টেম্পারিংয়ের গুরু ডেভিড ওয়ার্নার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেপটাউন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বল টেম্পারিং এখন ‘টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বে ঘৃণ্যকর্মের পরিকল্পনায় ছিলেন সিনিয়র সদস্যরা। ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ জড়িত বলেও শোনা গেছে। আর মাঠে সেটি বাস্তবায়ন করেছিলেন তরুণ ক্যামেরন ব্যানক্রফট। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে বল টেম্পারিংয়ের গুরু নাকি ডেভিড ওয়ার্নার। ইংরেজী পত্রিকার খবর, গত এ্যাশেজে হাতের তর্জনীতে এক ধরনের ধারালো টেপ লাগিয়ে ফিল্ডিং করেন এই তারকা ক্রিকেটার, যেটি অনেকটা শিরিশ কাগজের মতো। বৃটিশ ট্যাবলয়েডের পক্ষ থেকে ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেটি যদি ব্যান্ডেজই হবে, তবে ব্যাটিংয়ের সময় কেন ব্যবহার করেননি? দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেও একই ধরনের টেপ ছিল ওয়ার্নারের হাতে, পত্রিকাটিতে ক্লোজ-ইনে সেই ছবিও দেয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত সিডনি মর্নিং হেরাল্ড খবরের শিরোনামই করেছে, ‘ডেভিড ওয়ার্নার এ্যাট দ্য হার্ট অব বল টেম্পারিং স্ক্যান্ডাল।’ অর্থাৎ ডেভিড ওয়ার্নারই হলেন বল টেম্পারিংয়ের মূলহোতা। সম্ভবত জোহানেসবার্গ টেস্টে তাকে নাও খেলতে দেখা যেতে পারে। অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো স্মিথকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। ব্যানক্রফটকে জরিমানা। তবে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া ওয়ার্নারের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। স্মিথের পরিবর্তে চতুর্থ ও শেষ টেস্টের দলে ডাক পেয়েছেন ব্যাটসম্যান ম্যাট রেইন শ। ওদিকে কোচ ড্যারেন লেহম্যান পদত্যাগ করতে চাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সিনিয়রদের অনেকে জড়িত থাকলেও কোচ এই পরিকল্পনায় ছিলেন না বলেই জানিয়েছিলেন স্মিথ। দ্য টেলিগ্রাফের খবর, শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া শেষ টেস্টের আগেই পদত্যাগ করতে পারেন লেহম্যান। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ক্যামেরন ব্যানক্রফট পকেট থেকে হলুদ রঙের টেপ-জাতীয় কিছু বের করে তা বলে ঘষছেন। পরে অধিনায়ক স্মিথ সংবাদ সম্মেলনে বল বিকৃতির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা এই পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত। তিনি অবশ্য সেদিনই জানিয়েছিলেন, কোচ লেম্যান ও অন্য কোচিং স্টাফরা ব্যাপারটির কিছুই জানতেন না। ঘটনা তদন্তে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) একটি প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছেছে। দ্রুতই প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন লেহম্যান। তার সময়ে যথেষ্ট সাফল্যই পেয়েছে দল। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয় তার সবচেয়ে বড় সাফল্য। কোচ হিসেবে দলের মধ্যে তুলনামূলক নির্ভার পরিবেশই নিশ্চিত করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই সাবেক ব্যাটসম্যান। কেপপাউন টেস্টের মূল হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আহ্বান জানানো অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেট থেকেই স্লেজিংটাই তুলে দেয়ার পক্ষে, ‘ক্রিকেটকে আবারও সবার সামনে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে হলে আমার মনে হয় স্লেজিংয়ের বিরুদ্ধেও শক্ত অবস্থান নেয়া উচিত। এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে...। ক্রিকেটে এর কোন জায়গা থাকা উচিত নয়।’ বলেন টার্নবুল। প্রধানমন্ত্রী যখন এমন কথা বলেন তখন তো সেটি সরাসরি নির্দেশ। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা যে স্লেজিংয়ের ওস্তাদ সেটি জেনেই তিনি এমন কথা বলেছেন। টার্নবুল মনে করেন, ‘ক্রিকেট খেলা... এমন একটা কিছু হওয়া উচিত যা আবারও রোল মডেল হিসেবে দাঁড়াবে।’ যে কোন দলের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় শক্তি হয়ে দাঁড়ায় তাদের মাত্রা ছাড়ানো স্লেজিং। এটা খুব প্রচলিত যে অসিদের বিপক্ষে শুধু ব্যাট-বল নয়, লড়তে হয় অনেক কিছুতেই। এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরই ধরা যাক। কুইন্টন ডি কক ও ডেভিড ওয়ার্নারের মধ্যে তো হাতাহাতি লেগেই গিয়েছিল।
×