ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মহাস্থানগড়কে নতুন করে সাজানো হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৮ মার্চ ২০১৮

মহাস্থানগড়কে নতুন করে সাজানো হচ্ছে

সমুদ্র হক ॥ পর্যটক আকর্ষণে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন পুন্ড্রনগরীখ্যাত বগুড়ার মহাস্থানগড়কে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। বেড়েছে পর্যটক আগমনের সংখ্যা। তবে পর্যটক নিরাপত্তায় বগুড়ায় কোন ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট নেই। পর্যটকরা এসে নিরাপত্তার জন্য প্রথমে ট্যুরিস্ট পুলিশের খোঁজ করেন। এদিকে মহাস্থানগড় এলাকা থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ভাসুবিহারসহ অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। মহাস্থানগড় এলাকায় থাকার জন্য উন্নত মানের হোটেল না থাকায় পর্যটকরা ভালভাবে ঘুরে দেখতে পারেন না। সেখানে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের (বিপিসি) কোন মোটেল নেই। ব্যক্তি উদ্যোগেও কোন মোটেল গড়ে তোলা হয়নি। উল্লেখ্য, দেশের প্রতিটি জেলার পরিচিতিতে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। বগুড়ার নামকরণ করা হয়েছে “বগুড়া ল্যান্ড অব পুন্ড্র সিভিলাইজেশন”। নেটে এই নামকরণ দেখে অনেক পর্যটক আসছেন। পর্যটকগণ বগুড়া নগরীর কোন হোটেলে থেকে মহাস্থানগড় ঘুরে দেখতে যান। ভ্রমণে আসা বিদেশী ক’জন পর্যটক দুইটি বিষয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। ১. ট্যুরিস্ট পুলিশ। ২. উন্নত হোটেল। কক্সবাজারসহ দেশের কয়েকটি পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট আছে। পর্যটকরা ওইসব এলাকায় গেলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা পান। উল্লেখ্য দেশে বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা প্রায় ৮শ’। এই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এই বিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, মহাস্থানগড়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিটের গুরুত্ব রয়েছে। সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ থাকা দরকার। তিনি বগুড়ায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিটের জন্য ওপর মহলে যোগাযোগ করছেন। বগুড়ার মহাস্থানগড়ের পর্যটকদের নিরাপত্তায় স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তা নেয়া হয়। মহাস্থানগড় থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে শিবগঞ্জ থানা ও প্রায় ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে বগুড়া সদর থানা। কোন ঘটনা ঘটলে পুলিশের সহযোগিতা পেতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এদিকে বিপিসি কর্তৃপক্ষ বললেন, মহাস্থানগড়ে তাদের একটা উন্নতমানের ক্যাফে (রেস্তরাঁ) আছে। আপাতত মোটেল স্থাপনের পরিকল্পনা নেই। ৮০’র দশকের মধ্যভাগে মহাস্থানগড়ে ‘ইয়থ ইন’ নামে উন্নত হোটেল চালু করা হয়েছিল। পরে তা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। মহাস্থানগড়কে পর্যটক আকর্ষণে বড় পরিকল্পনা নিয়ে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। বগুড়ার মহাস্থানগড়. নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ এলাকায় পর্যটক আকর্ষণে অবকাশ কেন্দ্র, বাংলো বাড়ি, রেস্তরাঁ প্রয়োজনীয় উন্নত পথঘাট, বসার স্থান, দৃষ্টিনন্দন কার্যক্রমসহ নানা কিছু নির্মিত হচ্ছে। সাউথ এশিয়া ট্যুরিজম ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ মিলিয়ন ডলার। যার ১২ মিলিয়ন ডলার জোগান দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। ইতোমধ্যে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামোসহ নানা কিছু নির্মিত হয়েছে। আরও অনেক কিছু বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যেই দেশী বিদেশী পর্যটকরা আসছেন। এদিকে পর্যটক বাড়াতে ভিসা ব্যবস্থা সহজ করা হয়েছে। বর্তমানে ৬০টি দেশের পর্যটকদের ‘অন এ্যারাইভ্যাল ভিসা’ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত নেই। একজন পর্যটক বলেন, ভারতকে অন এ্যারাইভ্যাল ভিসা দেয়া হলে এবং ভারতও বাংলাদেশের পর্যটকদের অন এ্যারাইভ্যাল ভিসা দিলে মেল বন্ধনে দুই দেশেই পর্যটক বাড়বে। পর্যটন এমন একটি শিল্প যেখানে পর্যটক আমদানিতে অর্থ দিতে হয় না। দেশী বিদেশীরা এসেই অর্থ দিয়ে যায়। বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রা। বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত হয়।
×