ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

র ম আওরঙ্গজেব

ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে প্রতিশ্রুতিশীল গবেষক

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৭ মার্চ ২০১৮

ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে প্রতিশ্রুতিশীল গবেষক

বাংলাদেশের ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে গবেষণার ক্ষেত্রে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন তরুণ গবেষক মোঃ তৌফিক হোসেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে, সেই গৌরবে গৌরবান্বিত সারাদেশের মানুষ। আর এই বিশেষ মর্যাদাকে সামনে রেখে পূর্ব প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ শেয়ার মার্কেট লুকিং এহেড আফটার টু বিগ ক্র্যাশেষ’ শীর্ষক প্রবন্ধের লেখক মোঃ তৌফিক হোসেন খুব ভালভাবেই অনুধাবন করেন যে, ২০৪১ এর মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদায় আসীন হতে গেলে দেশের ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরের সংস্কার প্রয়োজন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। আর সেই লক্ষ্যেই মোঃ তৌফিক হোসেন দীর্ঘ দশ বছর ধরে ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরের বিভিন্ন ইস্যুর উপর মৌলিক গবেষণা করছেন। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের গতি প্রকৃতির উপর বিশেষ করে শেয়ারবাজার ধসের কারণ সংক্রান্ত ইংরেজীতে লেখা বিশ্লেষণধর্মী প্রথম বই ‘বাংলাদেশ শেয়ার মার্কেট লুকিং এহেড আফটার টু বিগ ক্র্যাশেস’ আজও গবেষকদের দৃষ্টির বাইরে নয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে মোঃ তৌফিক হোসেন একজন প্রথিতযশা, প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ গবেষক ও বিশ্লেষক। সম্প্রতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি কর্তৃক আয়োজিত অর্থনীতিবীদদের সবচেয়ে বড় সম্মেলনে (২০তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন, ২০১৭) তৌফিকের সেমিনার পেপার ব্যাংক এক্সপোসার টু স্টক মার্কেট : বুন অর ব্যান শীর্ষক প্রবন্ধটি বিভিন্ন স্টকহোল্ডার, পলিসিমেকার, একাডেমিশিয়ান ও অর্থনীতিবীদদের দৃষ্টি কেড়েছে। প্রবন্ধের মূল বিষয় বস্তু ছিল, একটি দেশের অর্থনীতিতে মানি মার্কেট ও স্টক মার্কেটের প্রভাব কি হতে পারে সেই বিষয়ে। মূলত ২০১০ এ শেয়ারবাজার ধসের অন্যতম কারণ ছিল বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ। আসলে ব্যাংকগুলো নৈতিকভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অধিকার রাখে কিনা, রাখলেই সেটি কি পর্যায়ে হওয়া উচিত এই সকল বিষয়ই উঠে এসেছে তৌফিকের গবেষণাপত্র থেকে। দেশের ভেতর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে (দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, দি ডেইলি স্টার, নিউ এইজ, নিউ ন্যাশন, ডেইলি সান, এশিয়ান এইজ, বাংলাদেশ পোস্ট, প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠ) তৌফিকের প্রকাশিত কলামের সংখ্যা প্রায় ৮০ (আশিটি)। শেয়ারবাজারের উপর বিশ্লেষণধর্মী কলাম পর্যালোচনা গবেষণার আঙ্গিকে সর্বপ্রথম বেড়িয়ে আসে তাঁর কাছ থেকে। মোঃ তৌফিক হোসেন বর্তমানে দেশের শীর্ষ স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও সিভিল সোসাইটি ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশনের’ এ্যাসিস্টেন্ট কোঅর্ডিনেটর। এর আগে তিনি কাজ করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার আরও একটি স্বনামধন্য বেসরকারী সাহায্য সংস্থা ব্রাকের ইয়াং প্রফেশনাল পদে। এছাড়া প্রায় দুই বছর শিক্ষকতা করেছেন দুটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। তৌফিক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ থেকে ফিন্যান্সে বিবিএ ডিগ্রী লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদ থেকে এ্যাকাউন্টিং এ এমবিএ ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় হচ্ছে স্টক মার্কেটের বিহেভিএ্যারাল এনালাইসিই, বাজার ধস ও বাবল বিশ্লেষণ, ম্যাকরো ইকোনোমিক পলিসি, কর্পোরেট গবার্নেন্স, কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি। বর্তমানে একটি বই ছাড়া তৌফিকের মৌলিক গবেষণা (জার্নাল আর্টিকেলের) সংখ্যা ১১টি, উল্লেখযোগ্য ক’টি গবেষণা হলো ডিমিউচুয়ালাইজেশন অব বাংলাদেশ স্টক এক্সচেঞ্জ, ইসলামিক সুকুক এর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, শেয়ারবাজার ধস : আমেরিকা ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ইত্যাদি। এখন তৌফিক একুশে টিভির ‘একুশে বিজনেস’ ও ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ব্যবসাপাতি সারাদিন ব্যবসা ও অর্থনীতিক বিষয়ক অনুষ্ঠানের সাপ্তাহিক গেস্ট। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড এ্যাকাউনটেন্ট অব বাংলাদেশসহ ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব রিসার্চ ইন বিজনেস স্টাডি এ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের এডিটর ও রিভিউয়ার হিসাবে আছেন। তৌফিক বর্তমানে গবেষণা করছেন বাংলাদেশ শেয়ারবাজারের বিভিন্ন মৌলিক ইস্যুসহ বাংলাদেশের উন্নয়ন এজেন্ডায় সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট গোল ও কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটির ভূমিকা নিয়ে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নয়, ব্যক্তি পর্যায়ে তৌফিক হোসেনের বিশ্লেষণধর্মী মৌলিক গবেষণা, দেশের ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে এক নতুন ধারার উন্মোচন করবে নিঃসন্দেহে এবং সেখান থেকে অনেক তরুণ গবেষক যেমন অনুপ্রাণিত হবে ঠিক তেমনি পলিসি মেকাররাও খুঁজে পাবেন বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত।
×