বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বাধীনতা দিবসে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে একসঙ্গে শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত গাইল পুরো জাতি। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও একযোগে একই সময়ে শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে এই প্রথম এমন ব্যতিক্রমী কর্মসূচী পালন করা হয়। সোমবার সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু- কিশোর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে পুরস্কৃত শতাধিক শিশু-কিশোর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করে। তাদের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ মেলান প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্যরা, মাঠে থাকা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের সদস্যরা এবং গ্যালারিতে থাকা হাজার হাজার দর্শক ও অভিভাবক।
জাতীয় সঙ্গীতের পর সমাবেশে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। প্রধানমন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সমাবেশের উদ্বোধন করেন এবং কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
দেশব্যাপী শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধিকতর কার্যকর করার জন্য চলতি বছরেই প্রথমবারের মতো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উদ্যোগে বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। এর আওতায় স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তঃশ্রেণী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা হয়।
সারাদেশের দেড় কোটি শিশু গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ দলগত এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ১১টি দলের ১১০ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়। প্রথম স্থান অর্জনকারী দলের প্রত্যেক সদস্যকে একটি করে স্বর্ণপদক, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দলের প্রত্যেক সদস্যকে একটি করে রৌপ্য পদক এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দলের প্রত্যেককে ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয় অনুষ্ঠানে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম হয় ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল ও কলেজ, দ্বিতীয় হয় খুলনা বিভাগের সরকারী করনেশন বালিকা বিদ্যালয় এবং যুগ্মভাবে তৃতীয় হয় চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান সদরের মেঘলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলা স্কুল।
মাধ্যমিকে প্রথম হয় ময়মনসিংহ জেলা স্কুল, দ্বিতীয় হয় সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের এসসি সরকারী বালিকা বিদ্যালয় এবং যুগ্মভাবে তৃতীয় হয় রাজশাহী বিভাগ থেকে পাবনার স্কোয়ার স্কুল ও কলেজ ও ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে ময়মনসিংহের শহীদ নজরুল ইসলাম কলেজ, দ্বিতীয় হয়েছে চট্টগ্রামের কার্পাসগোলা সিটি মহিলা কলেজ এবং তৃতীয় হয়েছে ঢাকা বিভাগের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজ। পরে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত ও মনোজ্ঞ ডিসপ্লে দেখেন।
এছাড়া দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলাতেও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ঠিক সকাল ৮টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনে অংশ নেয় পুরো জাতি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: