ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব নাট্যদিবসে নাট্যকর্মীদের ভাবনা

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৭ মার্চ ২০১৮

বিশ্ব নাট্যদিবসে নাট্যকর্মীদের ভাবনা

‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ আজ। হেলসিংকিতে ১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর ২৭ মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস পালিত হয়। বিশ্বের সব দেশের নাট্যকর্মীদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন, সম্প্রীতি, উদ্দীপনা সৃষ্টি ও নাটকের উন্নয়ন সাধনের লক্ষে এ দিবসটি পালন করা হয়। ঢাকার আইটিআই কেন্দ্রের উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশে ‘বিশ্ব নাট্য দিবস পালন শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে আইটিআই ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের যৌথ উদ্যোগে ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই ধারাবাহিকতায় এবারও ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ সম্মিলিতভাবে এ দিবসটি উদ্যাপন করবে। বিশ্ব নাট্যদিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারসহ বিশ্বের কয়েকজন খ্যাতিমান নাট্য ব্যক্তিত্ব সম্প্রীতির বাণী প্রদান করেছেন। দিবসটিকে কেন্দ্র করে দেশের খ্যাতিমান নাট্যজনের সঙ্গে কথা বলে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন গৌতম পা-ে- রামেন্দু মজুমদার : নাটকের মানুষের একাত্বতা হওয়ার দিন বিশ্ব নাট্যদিবস। এদিন আমরা নাটকের শক্তিকে নতুন নতুন ভাবে আবিস্কার করি। আমাদের দেশেও বিভিন্নভাবে আনন্দের সঙ্গে আমরা দিনটিকে উদ্যাপন করি। তবে এ দিনটিকে উপলক্ষ করে আমাদের একটি বিষয় খুবই গুরুত্বের সঙ্গে ভাবার সময় এসেছে। আমাদের দেশে নাটকের দর্শক কেন কমে যাচ্ছে, এর কারণ খোঁজার প্রয়োজন। আতাউর রহমান : পৃথিবীর নাট্যকর্মীদের সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও একাত্ত্বতা হওয়ার দিন বিশ্ব নাট্যদিবস। এটাকে জানান দেওয়া যে, আমরা নাটকের মানুষরা সমাজের অগ্রযাত্রা, সৈন্দর্যবোধ ও সামাজিক সংস্কৃতির সাথে আছি। সুষ্ঠ সংস্কৃতি মানুষের মনের কালিমাকে দূর করতে পারে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সারা বিশ্বে উদ্যাপন হচ্ছে এ দিবসটি। প্রতি বছর এইদিনে প্রথিতযশা নাট্যজন সম্প্রীতির বাণী দিয়ে থাকেন। দুই বছর আগে আমিও এদিনে বাংলাদেশ থেকে একটি বাণী দিয়েছিলাম। মামুনুর রশীদ : বিশ্বের নাট্যজগতের মানুষদের সম্প্রীতির দিন বিশ্ব নাট্যদিবস। এদিনে নতুন প্রত্যয়ে নাটককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিন। বলা যায়, নাট্য আন্দেলনের দিন বিশ্ব নাট্যদিবস। নাটক সমাজ বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নাটককে আরও সামনে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ের দিন এ দিবস। জয় হউক নাটকের, জয় হউক বিশ্ব নাট্যদিবসের। ড. ইনামুল হক : বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও আমরা বিশ্ব নাট্যদিবস পালন করি। আমি শুনেছি এবারের বিশ্ব নাট্য দিবসের থিম থিয়েটার শিশুদের কাছে নিয়ে যেতে হবে। থিমটা আমার কাছে ভিষণ ভাল লেগেছে। এটা খুবই জরুরী। যিনি দিয়েছেন তাকে ধন্যবাদ। শিশুরা মাটির মতো। তাদের যতি সংস্কৃতির মধ্যে গড়ে তোলা যায়, তাহলে তারা সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। সারা বিশ্বে ধর্মীয় কুসংস্কার ভিষণভাবে বিদ্যমান। সংস্কৃতিচর্চার মধ্যদিয়ে এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে । বিশ্বে যে অবক্ষয় চলছে, সংস্কৃতির আন্দোলন দিয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো খুবই জরুরী। বিশ্ব নাট্যদিবসে সকল নাট্যকর্মীদের মেল বন্ধন আরও দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা করি। লাকী ইনাম : বিশ্ব নাট্যদিবস প্রতি বছর নাট্যাঙ্গনে নতুন বারতা নিয়ে আসে। নাটকের মাধ্যমে আমরা সমাজের মানুষের কথা বলে থাকি। এবার বিশ্ব নাট্যদিবসে দেশের নাট্যকর্মীদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, থিয়েটারকে যেন আমরা ভালবেসে দেশের কাজে লাগাই। প্রবীর দত্ত : একজন তরুণ নাট্যকর্মী হিসেবে আমি বলতে পারি, স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশী শিল্পসার্থক হয়েছে মঞ্চ নাটক। একমাত্র দেশ আমাদের যেখানে নাট্যকর্মীরা বিনা পারিশ্রমীকে নাট্যচর্চা করে। আমরা সব সময় সত্যের পথে সোচ্চার। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নাট্যকর্মীদের প্রতিবাদ মঞ্চের বাইরেও সব সময় বিদ্যামান। কি পেলাম কি পেলাম না এ নিয়ে আমরা শিল্পচর্চা করি না। শিল্পের প্রতি ভালবাসা থেকেই আমাদের এই নাট্যচর্চা অব্যাহত।
×