ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৫ মার্চ ২০১৮

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবে  পুণ্যার্থীদের  ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসব শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়েছে। শনিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে মেতেছিল। লগ্ন শুরু হয় শনিবার ১০টা ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ডে। লগ্ন শেষ হবে রবিবার সকাল ৭টা ৫২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে। শুক্রবার বিকেল থেকেই দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা পুণ্যস্থানে ছুটে আসে। স্নানোৎসবকে কেন্দ্র করে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হিন্দু শ্রাস্ত্রমতে, হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লোহিত্য আমার পাপ হরণ কর’ এই মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দুর্বা, হরতকী, ডাব, আম্র ও পল্লবসহ প্রতিবারের মতো এবারও পুণ্যার্থীরা স্নান করছেন। এদিকে স্নান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ো। পাপ মোচনের আশায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থী নর-নারীদের স্নানোৎসবে যেন প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে ব্রহ্মপুত্র নদ এলাকায়। পাপ মোচন ছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের আশায়ও এসেছেন কেউ কেউ। শনিবার সকাল থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা হরিরামপুর ঘাট, নলিত মোহন সাধু ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধি (শ্মশান) ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালি ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, পাষাণকালী মন্দির ঘাট, মনোজকান্তি বড়াল ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, মনি ঋশিপাড়া ঘাট, ব্রম্ম মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী ঘাট, কালীগঞ্জ পঞ্চপ্লাব ঘাট ও সাবদী কালীবাড়ি ঘাট দিয়ে পুণ্য স্নান করেছেন। স্নানোৎসবে আসা পুণ্যার্থীরা জানান, পাপ মোচনের আশায় তারা এই ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে এসেছেন। এবার নদীর কচুরিপানা পরিষ্কারও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। তবে প্রতিবছরের ন্যায় রাজঘাটে পুণ্যার্থীদের ভিড় লক্ষ্য যায় বেশি। লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সরোজ কুমার সাহা বলেন, শনিবার প্রচুর পুণ্যার্থী স্নান করতে এসেছেন এবং এখনও আসা অব্যাহত রয়েছে। সরকার এবারও ভাল পদক্ষেপ নিয়েছে। এ পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। লাঙ্গলবন্দে স্নান করতে আসা আরতি রানী দাস বলেন, লাঙ্গলবন্দ স্থানটি পুণ্যস্থান ও তীর্থস্থান। তাই এখানে স্নান করতে এসেছি। স্নান করে পুণ্য অর্জন করায় ভাল লাগছে। বিমল কর্মকার বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে পেরে শরীর পবিত্র হয়ে গেছে। পুণ্যতার জন্য এখানে স্নান করতে এসেছি। এবার পরিস্থিতি খুবই সুন্দর ছিল। এবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাতে কোন তুলনা হয় না। কোন দিক দিয়ে কোন ত্রুটি ছিল না। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাঙ্গলবন্দের স্নানোৎসব উপলক্ষে এখানে প্রতিবছরের মতো এবারও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ১১শ’র মতো পোশাকে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি তিনশ’র মতো সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য রয়েছে। আমাদের সহায়তা করার জন্য তিনশ’ আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
×