ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যারি কেনকে ছাড়াই হল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের জয় ইংল্যান্ডের, দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ফ্রান্সকে হারিয়ে চমক কলম্বিয়ার, জার্মানি ১-১ স্পেন, হল্যান্ড ০-১ ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ২-৩ কলম্বিয়া

সেয়ানে সেয়ানে লড়াই জার্মানি-স্পেনের

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৫ মার্চ ২০১৮

সেয়ানে সেয়ানে লড়াই জার্মানি-স্পেনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের ডামাডোলের মধ্যে প্রায় সব ফেবারিট দলই জয় পেয়েছে। তবে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও সাবেক চাম্পিয়ন স্পেনের মধ্যকার লড়াইয়ে কেউ জেতেনি। দু’দলের উপভোগ্য মহারণ ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। অধিনায়ক হ্যারি কেনকে ছাড়ই খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। জিততে ঘাম ঝরাতে হলেও হল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে ফুটবলের জনকরা। আরেক ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ফ্রান্সকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে কলম্বিয়া। পরশু রাতের অন্যান্য প্রীতি মাচে বেলারুশ ১-০ গোলে আজারবাইজানকে, বসনিয়া একই ব্যবধানে বুলগেরিয়াকে, নরওয়ে ৪-১ গোলে অস্ট্রেলিয়াকে, তুরস্ক ১-০ গোলে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডকে, সুইজারল্যান্ড একই ব্যবধানে গ্রীসকে, কাজাখস্থান ৩-২ গোলে হাঙ্গেরিকে, তিউনিসিয়া ১-০ গোলে ইরানকে, মরক্কো ২-১ গোলে সার্বিয়াকে, অস্ট্রিয়া ৩-০ গোলে স্লোভেনিয়াকে, নাইজিরিয়া ১-০ গোলে পোল্যান্ডকে ও কোস্টারিকা একই ব্যবধানে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছে। এছাড়া জাপান-মালি ম্যাচ ১-১, সাইপ্রাস-মন্টেনিগ্রো ও ফিনল্যান্ড-মেসিডোনিয়া ম্যাচ গোলশূন্য, সেনেগাল-উজবেকস্থান ম্যাচ ১-১ ও সৌদি আরব-ইউক্রেন ম্যাচ একই ব্যবধানে ড্র হয়। জার্মানি ও স্পেনের মধ্যকার ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল টানটান উত্তেজনা। আবারও দু’দলের গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া ও টের স্টেগান প্রমাণ করেছেন কেন তাদের বর্তমান সময়ের সেরা গোলকিপার বলা হয়। দু’জনই যেন নিজেদের ছাপিয়ে যাওয়ার মিশনে নেমেছিলেন। বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কিছুটা অবাক করে দিয়েই ম্যাচের শুরুতে গোল করে বসে ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার ডিফেন্স চেরা পাস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রড্রিগো মোরেনো। এরপর শুরু হয় জার্মান আক্রমণ। নবম মিনিটে কিমিচের ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন টিমো ওয়ার্নার। পরের মিনিটে হেক্টরের দুর্দান্ত ভলি একটুর জন্য গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৩১ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পায় জার্মানি। কিন্তু ওয়ার্নার আবারও ব্যর্থ হন। অবশেষ ৩৫ মিনিটে ডি গিয়া দেয়াল ভাঙ্গেন টমাস মুলার। টনি ক্রুসের কাছ থেকে বল পেয়ে সামি খেদিরা বল বাড়ান মুলারের দিকে। মুলার সেটিকে গোলে পরিণত করে সমতায় ফেরান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। সমতায় থেকে বিরতির পর ফিরেও চলে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ। ৪৭ মিনিটে বাঁ পাশ থেকে ড্রাক্সলারের দুর্দান্ত শট রুখে দেন ডি গিয়া। ৫৫ এবং ৫৬ মিনিটে ইস্কোর দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন জার্মান গোলকিপার টের স্টেগান। ৬৫ মিনিটে ক্রুসের ফ্রিকিক ক্রসবারের লেগে বাইরে গেলে গোলবঞ্চিত হয় জার্মানি। ৬৮ মিনিটে আসেনসিওর ক্রসে গোল করতে ব্যর্থ হন স্পেনের দিয়াগো কোস্টা। ৮৯ মিনিটে গোরেটজকা রামোসকে একা পেয়েও তাকে পরাস্ত করে বল এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। ফলে ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকত হয় দু’দলকে। এই ম্যাচ সমতায় শেষ হওয়ায় জার্মানি অপরাজিত থাকলো টানা ২২ ম্যাচ। স্পেনও কম যায় না। এ নিয়ে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত আছে তারা। ম্যাচ শেষে জার্মান তারকা মুলার বলেন, এই ম্যাচটি ২-২ কিংবা ৩-৩ গোলে ড্র হতে পারত। সবাই দেখেছে স্পেন ও জার্মানি কতটা উঁচুমানের ফুটবল খেলতে পারে। দারুণ একটা পরীক্ষা হলো আমাদের। তবে এটা বোঝা গেছে আমাদের উন্নতির যথেষ্ট জায়গা আছে। টনি ক্রুস বলেন, আমার মনে হয় স্কোরলাইনটা ঠিকই আছে। উন্মুক্ত একটা ম্যাচ খেলেছি। পরীক্ষাটাও ভালমতো দিয়েছি। বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা হচ্ছে না হল্যান্ডের। ছিটকে গেছে বাছাইপর্ব থেকেই। তাই প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেই জ্বালা মেটাতে চেয়েছিল দলটি। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা জেসে লিনগার্ডের গোলে তা আর হয়নি। হেরে গেছে ডিপে স্টুয়ার্টম্যানদের দল। আর এতে গত বছর হারের প্রতিশোধও নিয়েছে সফরকারী ইংলিশরা। ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ইংল্যান্ডের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন লিনগার্ড। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ধরা হয় ফ্রান্সকে। দলের অসংখ্য খেলোয়াড় ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোতে খেলে থাকেন। তাছাড়া দলে রয়েছে উদীয়মান সব তারকা ফুটবলারও। কিন্তু এতো কিছুর পরও তারা হেরে গেছে দক্ষিণ আমেরিকার দল কলম্বিয়ার কাছে। ম্যাচের ১৩ মিনিটেই অলিভার জিরুডের গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ফ্রান্সের জার্সি গায়ে ক্যারিয়ারের ৩০তম গোল করে ফ্রান্সের শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় ৭ম স্থানে উঠে আসেন চেলসিতে লোনে খেলা এই স্ট্রাইকার। ২৮ মিনিটে আবারও ফ্রান্সকে উৎসবের উপলক্ষ এনে দেন থমাস লেমার। এমবাপের ক্রসে গোল করে ২-০ গোলের লিড এনে দেন মোনাকোর এই ফুটবলার। কিন্তু বিরতিতে যাওয়ার আগেই এক গোল শোধ দেয় কলম্বিয়া। জেমস রড্রিগুয়েজের বাড়ানো বলে গোল করেন মুরিয়েল। বিরতি থেকে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে কলম্বিয়া। ৬২ মিনিটে আবারও রড্রিগুয়েজের ক্রসে কলম্বিয়ার জার্সি গায়ে ২৯তম গোলটি করেন রাদামেল ফ্যালকাও। কলম্বিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনিই। ম্যাচ যখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে তখনই ঘটে বিপত্তি। ৮৫ মিনিটে কলম্বিয়ার লেরমাকে ডি বক্সে ফাউল করেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমটিটি। পেনাল্টি থেকে কোয়েন্টারো গোল করে ৩-২ গোলের ঐতিহাসিক এক জয় পায় কলম্বিয়া।
×