ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেবাচিমে চিকিৎসকের অবহেলায় ঝরে গেল দুই প্রাণ

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৪ মার্চ ২০১৮

শেবাচিমে চিকিৎসকের  অবহেলায় ঝরে  গেল দুই প্রাণ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ চিকিৎসকের অবহেলায় খাদিজা আক্তার নামের নয় মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে তার গর্ভে থাকা সন্তানটিরও মৃত্যু হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর স্বজনরা ওটির প্রবেশদ্বার ভাংচুর করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পঞ্চম তলার গাইনি ওটিতে। এ সময় রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংঘর্ষ হয়েছে। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বৃহস্পতিবার রাত এগারোটা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছে। চিকিৎসকে ওপর হামলার বিচার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শুক্রবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে ইন্টার্ন ডক্টরর্স এ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের হস্তক্ষেপে তালা খুলে দেয়া হয়। নিহত খাদিজা আক্তারের স্বামী পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ শাকিল হোসেন জানান, আগামী ২৬ মার্চ তার স্ত্রীর ডেলিভারির তারিখ ছিল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের কাছে একটি ইনজেকশন না থাকায় খাদিজাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে দুপুর বারোটার দিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে রক্ত ও প্রয়োজনীয় ওষুধ জোগাড় করে রাখা হয়। বিকেল তিনটায় খাদিজাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা ছয়টার দিকে খাদিজাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে কোন চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। অবস্থা বেগতিক হলে সেখানে থাকা সেবিকাদের বলা হলে তারা চিকিৎসকের কাছে যেতে বলেন। তৃতীয় তলায় গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ওপরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও তারা সিনিয়র চিকিৎসক ছাড়া যেতে পারবেন না বলে জানায়। শাকিল হোসেন আরও জানান, এ সময় চিকিৎসকের সঙ্গে তার বাগ্বিত-ার একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। তিনি (শাকিল) পা ধরে অনুরোধ করার পরেও চিকিৎসকেরা তাকে অনবরত মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে শাকিল তার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পান। এ সময় খাদিজার ভাই রিয়াজ উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে অপারেশন থিয়েটারের সামনের একটি দরজার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। শাকিল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর সেখানে কয়েকজন সেবিকার দেখা পাওয়া গেলেও তারা লুডু খেলায় ব্যস্ত ছিলেন।
×