ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় পাক সেনার আদলে নির্মিত ভাস্কর্য অপসারণ দাবি

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২৪ মার্চ ২০১৮

নওগাঁয় পাক সেনার আদলে নির্মিত  ভাস্কর্য অপসারণ দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৩ মার্চ ॥ মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে গোলচত্বরে একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। এ ভাস্কর্যটি একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের আদলে তৈরি না করে হানাদার পাকি সেনাদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। এ নিয়ে মান্দা উপজেলাসহ গোটা জেলাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এমতাবস্থায় আগামী ২৫ মার্চের আগেই এই ভাস্কর্যটি অপসারণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংবলিত ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ গোটা উপজেলাবাসী। জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা পরিষদ ভাস্কর্যটি উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে গোলচত্বরে তৈরি করে। গোলচত্বরে বেষ্টনীর মধ্যে পিলারের ওপর পূর্ব-পশ্চিম করে দুটি ভাষ্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ভাষ্কর্য দুটি হানাদার পাকি সেনাদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। যার কোমরে বেল্ট, পরনে পাকি সেনাদের পোশাক ও মাথায় হেলমেট। একজন দু’হাতে বন্দুক উঁচু করে মাথার ওপর ধরে আছে এবং অপরজন বন্দুক আড়াআড়িভাবে ধরে আছে। একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের এমন পোশাক ছিল না। উপজেলাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। পাকি সেনারা রাতের অন্ধকারে নিরীহ বাঙালীদের ওপর ভারি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। অসংখ্য মা-বোন হারিয়েছেন তাদের সম্ভ্রম। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের পক্ষে যা মেনে নেয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে মান্দা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা, এ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মান্নান বৃহস্পতিবার বলেন, আমি এ ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ জানাই। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের আদলে তৈরি করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ পাকিসেনাদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, তাদের মূর্তি কেন এখানে তৈরি করা হয়েছে এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি আগামী ২৫ মার্চের আগেই এটা অপসারণের দাবি জানাই। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এটি ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে জানান তিনি। এমন ঘটনায় বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফজলে রাব্বী বকু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাস্কর্য দুটি চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখার নির্দেশ দেন। নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু বলেন, এটা আসলে মুক্তিযুদ্ধের কোন ভাস্কর্য কিনা তা এখনও কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেননি। এটা যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোন স্মারক তা মনে করবার মতো কোন কারণ নেই।
×