ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী তথ্য

ভারতে ঘণ্টায় একজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৪ মার্চ ২০১৮

 ভারতে ঘণ্টায় একজন শিক্ষার্থীর  আত্মহত্যা

ভারতের রাজধানী দিল্লীতে ক্লাস নাইনের এক ছাত্রী পরীক্ষায় পাস না করতে পারায় আত্মহত্যা করেছে বলে তার বাবা মা অভিযোগ করছেন। দুই শিক্ষক ইচ্ছে করে তাদের বিষয়গুলোতে ফেল করাচ্ছেন বলে ছাত্রীটি নিজেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল মা-বাবার কাছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পরে ওই ছাত্রীর মা-বাবা প্রথমে দরজা বন্ধ দেখতে পান। দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান তাদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। খবর বিবিসির। স্কুল অবশ্য বলছে, ওই ছাত্রীটির পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। শুধু এই ছাত্রীটি নয়- ভারতে প্রতি ৫৫ মিনিটে একজন ছাত্র বা ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। তথ্য বলছে, এদের একটা বড় অংশই পরীক্ষায় নম্বর পাওয়া, উচ্চশিক্ষার জন্য ভাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ রকম নানাবিধ চাপের মধ্যে বড় হচ্ছে। আর এগুলোর কোন একটা পর্যায়ে ব্যর্থ হলেই নিজের জীবন শেষ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে। স্কুল ও বাড়ি উভয়দিক থেকেই চাপ আসে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৬- এই তিন বছরে ২৬ হাজার শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে ভারতে। ২০১৬ সালে ১৩০০ ছাত্রছাত্রী মহারাষ্ট্রে আর পশ্চিমবঙ্গে ১১০০ ছাত্রছাত্রী নিজেদের জীবন শেষ করে দিয়েছে। শিশু মন বিশেষজ্ঞ সময়িতা ব্যানার্জী, যিনি গ্রাফোলজি অর্থাৎ হাতের লেখার সাহায্যে শিশু মনের চিকিৎসা করেন। পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহননের পথ কেন বেছে নিচ্ছে ভারতের হাজার হাজার শিশু? এমন প্রশ্নের উত্তরে সময়িতা জানান, যে শিশু তার বাড়ির পরিবেশ নিয়ে খুশি, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটায় আনন্দে, মোটের ওপরে যার একটা ‘সুইট হোম’ আছে, তার যদি কখনও পরীক্ষায় খারাপ ফল হয়, সেটা সে সহ্য করে নিতে পারে। কিন্তু যেসব বাড়ির বা স্কুলের পরিবেশটাতেই সমস্যা বা যারা ইলেকট্রনিক মিডিয়া- টিভি ইত্যাদি বেশি দেখে, এরকম বাচ্চাদের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়। এদের যখন ছোটখাটো ব্যর্থতা মোকাবেলা করতে হয়, তখন তাদের কাছে সেটা খুব কঠিন হয়ে যায়। সমস্যাটা বড় হলে তা আর মোকাবেলা করতেই পারে না। তখন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। পরীক্ষায় ফেল করা ছাড়া পড়াশোনায় খারাপ করা, অপছন্দের কোন বিষয়ে পড়তে বাধ্য করা, এমনকি পড়াশোনায় খারাপ ফল হতে পারে- এই ভয় থেকেও অনেক ছাত্রছাত্রী আত্মহত্যা করছে। তাদের এটা বোঝানোর মতো কেউ নেই যে একবার পরীক্ষায় খারাপ ফল করা মানেই জীবনের শেষ নয়।
×