ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্লেষকদের অভিমত

ফেসবুক গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৪ মার্চ ২০১৮

ফেসবুক গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক

গণতন্ত্রের জন্য ফেসবুক-হুমকি ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকার চেয়েও অধিকতর বিপজ্জনক। দ্য গ্লোব এ্যান্ড মেইলে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সাংবাদিক ডাউগ সন্ডার্স এক নিবন্ধে এ কথা বলেছেন। গ্লোব এ্যান্ড মেইল। ভোটে প্রভাব বিস্তারকারী প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকা সমস্যা নয়। এটা নিশ্চিত যে, প্রতিষ্ঠানটি ৫ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত ও বন্ধুত্ব স্বার্থসংশ্লিষ্ট ফেসবুক উপাত্ত বাতিলে নিয়ম এবং সম্ভবত আইন ভঙ্গ করেছে এবং অবশ্য নৈতিক মানও ভঙ্গ করেছে। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সদস্যরা ২০১৬ সালের নির্বাচনে এদিক-সেদিক করার জন্য একটা প্রচার অভিযানের অংশ হিসেবে এ ব্যক্তিগত তথ্যগুলো হয়তো ব্যবহার করেছেন যেগুলো ঘৃণ্য, কল্পনাপ্রসূত এবং সম্ভবত কোন রুশ ট্রোল কারখানায় এগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। এ বাড়াবাড়ির তদন্ত হওয়া উচিত এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। কিন্তু বিশ্বের ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকার তথ্যগুলো গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার প্রতি অত্যন্ত মারাত্মক ও তাৎক্ষণিক হুমকির এক পার্শ্বক্রিয়া মাত্র। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে কানাডা, সুইডেন, বেলজিয়াম ও জার্মানির ক্ষমতাসীন দলগুলোতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রণয়নকারীদের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। আমি তাদের কাছে একটা মৌলিক বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছি। জিজ্ঞাসা করেছি। আপনারা ভীত কেন। জিজ্ঞাসা করেছি, যে সরকারবিরোধী প্রান্তিক অবস্থা যুক্তরাষ্ট্র, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডে এবং সম্প্রতি ইতালিতে দেখা দিয়েছে তাতে আপনার দেশের জন্য কোন কারণগুলোকে যথাযথ বলে মনে করছেন? প্রত্যেকে একই ভাষায় জবাব দিয়েছেন। তারা বলেছেন, আমরা বিপুল সংখ্যক ভোটারকে হারাচ্ছি। তারা তাদের সকল সংবাদ ও তথ্য পোস্ট ও ভিডিওগুলো থেকে পাচ্ছেন। আমরা তাদের কাছে আর যেতে পারছি না। তারা স্বাভাবিক রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা একই পদ্ধতির উল্লেখ করে বলেছেন, শহর ও ক্ষুদ্র শহরগুলোতে সংবাদপত্র ও স্থানীয় টিভি স্টেশনগুলো ওঠে যাচ্ছে। তারপরও এ স্থানগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক ভোটারদের মধ্যে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের বিষয়ে ব্যাপক ও জটিল প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই এ সকল প্রশ্নের উত্তর পান পোস্ট ভিডিও ও সংক্ষিপ্ত নিউজ ক্লিপ থেকে। এগুলো তাদের কাছে পাঠান তাদের বন্ধু ও অপরিচিত জনেরা। প্রযুক্তিবাদী সমাজবিদ জেনে টুফেকসি এক সাম্প্রতিক বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচার অভিযানের সময়ের অভিজ্ঞতা অনলাইনে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, আমি যে সময় ট্রাম্পের একটি নির্বাচনী সমাবেশের বিষয়ে কিছু লিখতে চেয়েছিলাম। তাই সমাবেশটি ইউটিউবে আমি দেখেছি কয়েকবার। ক্লিকের পর ইউটিউব ভিডিওতে শ্বেতাঙ্গ প্রাধান্য দেখা যায়। এটা আজকের দিনে বেশ সহজ হয়ে গেছে যে কয়েকবার ক্লিক বা সার্চের পরই দেখা যায় যে, জলবায়ুর পরিবর্তন এক তামাশা হয়ে দাঁড়িয়েছে, শরীয়া আইন জারি করা হচ্ছে উত্তর আমেরিকায়। কৃষ্ণাঙ্গরা নিম্নমেধার, প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালিত হচ্ছে বৈশ্বায়নবাদীদের ষড়যন্ত্রে বা অটিজমের কারণ টিকা। প্রতিটি বড় রাজনৈতিক দল গত দশকজুড়ে ফেসবুক থেকে ব্যক্তিগত উপাত্ত ব্যবহার করেছে। দলগুলোর জন্য এটা বেশ কল্যাণকর হলেও তাতে বৈপরীত্যেরও সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্পের কৌশলবিদ ও তাদের সক্ষমতাকারীদের জন্য এ তথ্য সুবিধা বয়ে এনেছে। নিউজ উইক বলেছে, সিআইএয়ের গোপন তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড ¯েœাডেন এক টুইটে বলেছেন, ফেসবুক একটি নজরদারি কোম্পানি। এ প্রতিষ্ঠান ইউজার ডাটা নিজের স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। টুইটে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের বিস্তারিত তথ্য নিজেদে স্বার্থে কাজে লাগিয়ে এবং সেগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছে। ফেসবুকের সমালোচক দীর্ঘদিন ধরে। তিনি রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার পর গোপন স্থানে অবস্থান করছেন।
×