ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ালশকে কোচ করা যেতে পারে ॥ সুজন

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৩ মার্চ ২০১৮

ওয়ালশকে কোচ করা যেতে পারে ॥ সুজন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টি২০ ক্রিকেটে এখনও নিজেদের ধাতস্থ করে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেটা পরিষ্কার হয়েছে টানা দুই সিরিজে দুই রকমের নৈপুণ্যে। ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার কাছে দুই টি২০ ম্যাচের সিরিজে নাস্তানাবুদ হলেও আবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ নিদাহাস ট্রফিতে রানার্সআপ হয়েছে দুর্দান্ত খেলে। কিন্তু জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের দাবি এখন আর পেছনে ফিরে তাকাবে না টাইগাররা, এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। নিদাহাস ট্রফিতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ফাস্ট বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। দলের এমন সাফল্যের পর সুজন দাবি করলেন তাকেই প্রধান কোচ হিসেবে রেখে দেয়া যেতে পারে। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে এসব কথা বলেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষেই প্রধান কোচের পদ থেকে সরে যান চান্দিকা হাতুরাসিংহে। এরপর থেকেই নতুন কোচের সন্ধানে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত ডিসেম্বরে রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্স সাক্ষাতকারও দিয়ে গেছেন। কিন্তু তাদের না পাওয়াটা নিশ্চিত হয়েছে অনেক আগেই। এরপর বেশ কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও তাদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঘরের মাটিতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ, দুই টেস্ট ও দুই টি২০ ম্যাচের সিরিজে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে মূলত সুজনই কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার সহকারী হিসেবে ছিলেন ওয়ালশ, রিচার্ড হ্যালসলসহ বাকিরা। তবে ঘরের মাটিতে এ কয়েকটি সিরিজেই দলের ভরাডুবির পর সুজনকে বাদ দিয়ে নিদাহাস ট্রফিতে ওয়ালশকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার অধীনে টাইগাররা জ্বলে ওঠে এবং দুর্দান্ত খেলে শেষ পর্যন্ত নাটকীয়ভাবে রানার্সআপ হয়। এই সফরে সুজন দলের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আগামী মাসের শুরুর দিকেই হয়তো নতুন কোন কোচ নিয়োগ দিতে পারে বিসিবি। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘আমি মনে করি যে আসার জন্যই আসতে হবে তেমন না, একজন উপযুক্ত কোচ আমাদের দরকার। সেগুলোই উনারা চিন্তা করছেন। অনেক নামই হয়তো আছে, আমাদের সঙ্গে কে সবকিছু মিলিয়ে খাপ খাওয়াতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। আমি এখনও কোন পরামর্শ দেই নাই। কারণ আমি আগে জানি যে কে আসলে খালি। আগে জানি যে কে ফ্রি আছে, কে আমাদের জন্য ভাল হবে। যে রকম মাথায় আছে। আমিও দেখি, খুঁজি। নামে চিনি বা এমনি চিনি এবং মানুষ হিসেবে কেমন সেটাও দেখার আছে। আমাদের কোচও দরকার, ভাল মানুষও দরকার। আমাদের ছেলেরা আবেগী ধরনের। এগুলা সব চিন্তা করে কোচ দেয়াটা দরকার আসলে।’ নিদাহাস ট্রফিতে দলের ভাল নৈপুণ্যের পর এখন ওয়ালশের দিকেও দৃষ্টি আছে সবার। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্বটা বেশ ভালভাবেই পালন করেছেন তিনি। কোচ পাওয়া না গেলে ওয়ালশ কি থেকে যাবেন সেই দায়িত্বে? সুজন বলেন, ‘আমার পরামর্শ হচ্ছে করা যায়। কোর্টনি দারুণ একজন মানুষ। সৎ একজন মানুষ। নিদাহাস ট্রফিতে দারুণভাবে সাপোর্ট করেছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন খেলোয়াড়দের। তার অভিজ্ঞতা তো ৪০ বছরের, দীর্ঘদিন থেকে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত। তার অভিজ্ঞতা নিয়ে তো কথাই নেই। দলের সবাই তাকে পছন্দ করে। সবমিলিয়ে শেষ সিরিজে তিনি চমৎকার ছিলেন।’ টানা দুই মাস আপাতত জাতীয় দলের কোন খেলা নেই। তবে জুনে আফগানিস্তানের সঙ্গে একটা ওয়ানডে সিরিজ আছে। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘আমি মনে করি একটা বিরতি খুব দরকার হয়ে গেছে আসলে সত্যি কথা বলতে । আপনি যদি দেখেন আফগানিস্তানের পরপরই আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাব, এসে এশিয়া কাপ, তারপর অস্ট্রেলিয়া। মানে কোন বিরতি নাই কিন্তু। তারপর বিপিএল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে আসবে। কিছু খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়তে পারে। বাংলাদেশ কিন্তু এত ঘন ঘন ম্যাচ খেলে নাই। সামনে দুই বছরে যা খেলবে। সুতরাং ইনজুরি আর অফ ফর্মে যাওয়ার সুযোগও থাকবে। অনেকগুলো খেলোয়াড় স্ট্যান্ডবাই রাখতে হবে। দুইটা দল প্রস্তুত রাখতে হবে। কারণ ইনজুরি একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে।’ সুজনের কথা অনুসারে জাতীয় দলে আবারও হয়তো অচিরেই কিছু পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখনও বসা হয়নি আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে। জানি যে ট্যুরটা হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে প্রত্যেকটা সিরিজ খুব চ্যালেঞ্জিং হবে আসলে। ওইটা মাথায় রেখে দল করা হবে। নতুন মুখ কিছু আসবে কিনা ঠিক নাই। আমার মনে হয় দল ভাল খেলেছে শ্রীলঙ্কায়। অবশ্যই এই খেলোয়াড়রা তো থাকবে। যদি প্রয়োজন হয় নতুন দুয়েকটা আসতে পারে। টি২০ এখনও আমাদের কাছে নতুন ধারণা। আমরা এখনও শিখছি। কিন্তু শেষ টুর্নামেন্টটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা যে মনোভাব নিয়ে খেলেছি আমি মনে করি এরকম খেলতে পারব সামনে। আমার বিশ্বাস এখান থেকে আর পিছনে তাকব না টি২০তে। সামনে এগিয়ে যাব।’
×