ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাইলট আবিদের স্ত্রী আফসানার অবস্থার আরও অবনতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৩ মার্চ ২০১৮

পাইলট আবিদের স্ত্রী আফসানার অবস্থার আরও অবনতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানম টপির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে। তার কিডনি কম সাড়া দিচ্ছে। ব্লাড প্রেসারও কমে গেছে। বিদেশে নিয়ে যাবার মতো অবস্থাতেও নেই। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এ্যান্ড হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল আলম এসব তথ্য জানান। আফসানা ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ কিনা জানতে চাইলে চিকিৎসকরা জানান, তা এখনও বলা যাবে না। পরিস্থিতি গত কয়েকদিনের তুলনায় খারাপের দিকে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চিকিৎসা চালিয়ে যাব। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্ট নিতে পারেন। সূত্র জানায়, ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হলে ২৬ বাংলাদেশীসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। ওই ফ্লাইটের প্রধান বৈমানিক ছিলেন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আবিদ সুলতান। দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর খবরে আফসানার ‘স্ট্রোক’ হলে রবিবার তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথম দিন মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার রাতে শেষ হয় ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ডাঃ বদরুল আলম জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে সাপোর্ট বেশি লাগছে। যেমন- ব্ল্যাড প্রেসার তোলার জন্য আমাদের যে সাপোর্টটা দেয়া দরকার, সেটা আরেকটু বাড়াতে হয়েছে। ব্লাড প্রেসারটা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কিডনির যে আউটপুট বলি আমরা, সেটা ক্রমান্বয়ে কমছে। ওনার অবস্থা অবনতির দিকে। কিন্তু ভেন্টিলেশন উইথড্র করা বা সমস্ত সাপোর্টগুলো উইথড্র করার মতো নয়। আগামীকালও চিকিৎসকরা তাকে দেখবেন। তিনি জানান, আফসানার চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে গঠিত ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আফসানা ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ কিনা জানতে চাইলে বোর্ডের প্রধান হাসপাতালের পরিচালক দীন মোহাম্মদ বলেন, ওনার যে সমস্ত লক্ষণ দেখলাম। তাতে আমরা এখনও এটা বলতে পারব না। আমরা এখন পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে তার পরিস্থিতি অনেকটা অবনতির দিকে। মানসিক চাপেই তার এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা হতেই পারে। ওনার ডায়াবেটিস ছিল। স্বামীর মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত। ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হলে বাংলাদেশীসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়। ওই ফ্লাইটের প্রধান বৈমানিক ছিলেন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আবিদ সুলতান। আবিদসহ ওই দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ জনের মরদেহ সোমবার দেশে ফিরিয়ে এনে আর্মি স্টেডিয়ামে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেদিন সারি সারি কফিনের মধ্যে পাইলট আবিদ সুলতানের লাশও দেশে আসে। ওদিন বিকেলে অশ্রুসজল একমাত্র সন্তান তানভীর বিন সুলতান যখন বাবার লাশ গ্রহণ করছেন, তখন হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন তার মা আফসানা। আজও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে।
×