ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বসবাসের অযোগ্য এনায়েতপুরের গুচ্ছগ্রাম

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২২ মার্চ ২০১৮

বসবাসের অযোগ্য এনায়েতপুরের গুচ্ছগ্রাম

সংবাদদাতা, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ, ২১ মার্চ ॥ এনায়েতপুর থানার জালালপুর গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পে যারা বসবাস করছে তাদের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এক যুগ আগে নির্মিত প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরের টিনের চালা খসে বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ইতোমধ্যে ব্যারাক ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন বাসিন্দারা। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নেই স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। দ্রুত সংস্কার ও নতুন ঘর নির্মাণ করে বসবাসের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে উর্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রকল্পের বাসিন্দারা। সরেজমিন জালালপুর গুচ্ছগ্রাম ও আবাসনে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দরিদ্র ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর জন্য ২০০৬ সালের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জালালপুর মৌজায় সরকারী খাসজমি ভরাট করে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয় এই পল্লী। আবাসন প্রকল্পের ২৬টি ব্যারাকের ২৬০টি কক্ষ ও ২০১৪ সালে নির্মিত গুচ্ছগ্রামের ৯০টি টিনশেড ঘরে বসবাসের জন্য তিন কক্ষ বিশিষ্ট ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘরের অধিকাংশের চালা ঝড়ের কারণে উড়ে গেছে, পুরাতন হয়ে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে খসে খসে পড়ে গেছে। এর কারণে অনেক ব্যারাকের ঘর খালি পড়ে রয়েছে। মাঝখানের পার্টিশনের টিন হারিয়ে গেছে। দরজা ও জানালা ভেঙ্গে পড়ে আছে। আবাসনের মালা খাতুন, বহুত আলী ও আজমত ফকির জানান, মূলত ঘরগুলোর ওপরের টিনের চালা না থাকা, পায়খানা ও টিউবওয়েলগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বসবাসের কোন উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় আবাসন ত্যাগ করে খোলা আকাশের নিচে কাগজ টাঙ্গিয়ে রয়েছে বহু পরিবার। আবাসনের বাসিন্দাদের চাষাবাদযোগ্য কৃষিজমি বন্দোবস্ত দেয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা দেয়া হয়নি। ফলে প্রতিনিয়তই অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করছে গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পের সাড়ে তিন শ’ পরিবারের আড়াই হাজার মানুষ। জালালপুর গুচ্ছগ্রাম অবাাসন প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম বলেন, ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরের মধ্যে আগাছা জন্মে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। নেই কোন সুষ্ঠু পরিবেশ জরাজীর্ণ সব ল্যাট্রিন এসব ল্যাট্রিন দিয়ে উপচে পড়ছে ময়লা। নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। এসব ব্যারাকে বসবাসের উপযুক্ত কোন পরিবেশ নেই। যে কারণে আড়াই শ’ পরিবারের বসবাস করার কথা থাকলে বর্তমানে রয়েছে শতাধিক পরিবার। এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ বলেন, জালালপুর গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। দিন দিন আবাসনের অবকাঠামো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। হত-দরিদ্রদের সুষ্ঠু পরিবেশে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রকল্পটি দ্রুত সংস্কার ও নতুন ঘর নির্মাণের দাবি জানান তিনি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেহেলী লায়লা জানান, জালালপুর গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শন করেছি, যারা ওখানে রয়েছে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। গুচ্ছগ্রাম আবাসনের অবকাঠামো সংস্কারের বিষয়টি উর্ধতন মহলকে লিখিত ভাবে জানান হয়েছে। আশা করি দ্রুত বরাদ্দ পেলে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×