ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চিটাগাং সিমেন্ট মামলায় রকিবুর রহমানসহ সব আসামি খালাস

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২২ মার্চ ২০১৮

চিটাগাং সিমেন্ট মামলায় রকিবুর রহমানসহ সব আসামি খালাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় চিটাগাং সিমেন্ট (বর্তমানে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট) মামলায় আলোচিত রকিবুর রহমানসহ অন্য ২ আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। একইসঙ্গে কোম্পানিকেও অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ এই বেকসুর খালাসের রায় দিয়েছেন। এ মামলার আসামিরা হলেন ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান, টিকে গ্রুপের মালিক আবু তৈয়ব এবং বুলবুল সিকিউরিটিজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম শহিদুল হক বুলবল। রায়ে বিচারক আকবর আলী শেখ বলেছেন, রকিবুর রহমান ও এএসএম শহিদুল হক বুলবুল সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে চিটাগাং সিমেন্টে পদ ধরে রাখেন নাই। আর স্টক এক্সচেঞ্জ ছাড়া বিদেশীদের কাছে শেয়ার বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অভিযুক্তরা তাদের আত্মীয়দের কাছে বিপুল পরিমাণ শেয়ার হস্তান্তর করেছেন এমন অভিযোগও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া ২.৯২ কোটি টাকা মূল্যের ২২৪০টি শেয়ার দীর্ঘদিন ফরেন এ্যাকাউন্টে আনসেটেলট অবস্থায় থাকার দায়ভার আসামিদের ওপর বর্তায় না। সর্বোপরি আসামিরা সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করে ১৯৯৬ সালে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার কেনাবেচায় কোন ধরনের কারসাজিমূলক কাজ করেনি বলে বিচারক রায়ে লিখেছেন। এক্ষেত্রে কোন ধরনের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায়, আসামিদের একই অধ্যাদেশের শাস্তিমূলক ২৪ ধারায় শাস্তি দেয়া যায় না। যে কারণে আসামিদের খালাস দেয়া হলো বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে যুক্তি-তর্ক শেষে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হুমায়ুন কবীর রায় ঘোষণার জন্য ওই বছরের ৮ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু রায় ঘোষণার মাত্র ৫ দিন আগে ৩ নবেম্বর মামলাটির কার্যক্রমের ওপর উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এ মামলার অন্যতম আসামি বুলবুল সিকিউরিটিজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম শহিদুল হক বুলবুলের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন আদালত। ফলে মামলাটির রায় ঘোষণা করতে পারেননি ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এর পরে কয়েক দফায় মামলাটির স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এদিকে মামলা স্থগিত অবস্থায় থাকাকালীন সময় ২০১৬ সালের ১২ জুলাই বিচারক হুমায়ুন কবীর ট্রাইব্যুনাল থেকে অন্যত্র বদলি হন। এরপরে ১৪ জুলাই ট্রাইব্যুনাল নতুন বিচারক হিসেবে যোগদান করেন আকবর আলী শেখ। কয়েক দফায় স্থগিতাদেশের আবেদন করা এএসএম শহিদুল হক নিজেই মামলা চালুর জন্য উচ্চ-আদালতে আবেদন করেন। এর আলোকে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মামলা চালুর নির্দেশ দেয় উচ্চ-আদালত। উচ্চ-আদালতের নির্দেশে ট্রাইব্যুনালে মামলাটি ফের চালু হয়। তবে বিচারক হুমায়ুন কবীরের সময় মামলাটির রায় ছাড়া সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায়, নতুন বিচারপতি শুধু বাদী ও বিবাদীর যুক্তিতর্ক শোনেন। এবং পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৩০ মে বিচারক আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় দেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, মামলাটিতে বিচারক আসামিদের বেকসুর খালাস দেন। এক্ষেত্রে আমরা সঠিক বিচার পাইনি বলে মনে করি। যে কারণে এরই মধ্যে উচ্চ-আদালতে আপীল করেছি।
×