ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় উদীচীর স্বাধীনতা দিবস উদ্্যাপনে নৃত্যনাট্য

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২২ মার্চ ২০১৮

শিল্পকলায় উদীচীর স্বাধীনতা দিবস উদ্্যাপনে নৃত্যনাট্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পৃথিবীর মানুষ ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট চমকে উঠল একটি মাত্র বোমার আঘাতে। জাপানের হিরোশিমা দ্বীপের আড়াই লাখ মানুষ এক নিমিষে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। এই ধ্বংসলীলার সাক্ষী এক শঙ্খচিল। সে ভালবাসত সাগরিকাকে অর্থাৎ সাগরকন্যাকে। সে জাপান দ্বীপবাসী। শঙ্খচিল সংগ্রামী চেতনার প্রতীক। তার সংগ্রামী ডানার ঝাঁপটায় উঠল ঝড়। সে সেই ডানা মেলে দিল জাপান থেকে আফ্রো-এশিয়া-ল্যাটিন আমেরিকা। পরে সে বাসা বাঁধল ভিয়েতনামের ক্রুয়োং শাং পাহাড়ে গেরিলা মুক্তিবাহিনীর মধ্যে। এটি প্রয়াত হেমাঙ্গ বিশ্বাসের কালজয়ী অমর কাব্যরচনা। তাই নিয়ে গাঁথা হয়েছে একটি রূপকধর্মী নৃত্যালেখ্য ‘শঙ্খচিল’। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় উদীচীর স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় নৃত্যনাট্যটি। ‘আমার শান্তি গানে বিদ্রোহ বান আনে, আফ্রো, এশিয়া, আমেরিকায়’ স্লোগানে দিবসটি উদ্্যাপন করলো উদীচীর ঢাকা মহানগর সংসদ। নৃত্যনাট্য মঞ্চায়নের আগে ছিল আলোচনানুষ্ঠান। আলোচনায় অংশ নেন কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, ভারতের নৃত্যশিল্পী মহুয়া মুখার্জী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। আলোচনায় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বাঙালী জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। এ অর্জন হঠাৎ করে আবির্ভাব হয়নি। অনেক যুগের গণসংগ্রামের ধারাবাহিকতার চূড়ান্ত পরিণতি এই মুক্তিযুদ্ধ। সেই অর্থে সূর্যসেন, ক্ষুধিরামও এক একেকজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের মর্মবাণীকে উপলব্ধি করার সময় এসেছে এখন। গণতন্ত্রের দাবির সঙ্গে ধর্ম নিরপেক্ষতার দাবি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বক্তারা বলেন, আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি মুক্তিযুদ্ধের ফলে। কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা এখনও পাইনি। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য নতুন করে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাঙালী জাতি সব সময় স্বাধীনতা শব্দটির প্রতি স্পর্শকাতর। আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদের নাড়ি ও হাড়ির কাছে যেতে হবে। তাহলে আমরা সেই পথনির্দেশনা পাব। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। গণসঙ্গীতের কিংবদন্তি পুরুষ হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অমর সৃষ্টি ‘শঙ্খচিল’ গানের নৃত্যরূপ পরিবেশন করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের নৃত্যশিল্পীরা। এর নির্দেশনা দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নৃত্য গবেষক, পরিচালক ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। ছিল উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের বাচিক শিল্পীদের পরিবেশনায় বৃন্দ আবৃত্তি। আর সবশেষে ছিল উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের শিল্পীদের পরিবেশনায় গীতি-নৃত্যালেখ্য ‘ভালবাসা ও প্রশান্তির পৃথিবী’। এটি গ্রন্থনায় ছিলেন জামসেদ আনোয়ার তপন, সঙ্গীত পরিচালনায় হাবিবুল আলম, নৃত্য পরিচালনায় সঙ্গীতা ইমাম আর আবৃত্তি পরিচালনায় ছিলেন বেলায়েত হোসেন। আলোচনা ও স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের মধ্যদিয়ে আমির হোসেন স্মরণ ॥ আলোচনা ও বই প্রকাশের মধ্যদিয়ে রাজনীতিক ও সাংবাদিক প্রয়াত আমির হোসেনকে স্মরণ করা হয় বুধবার বিকেলে। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি সম্মেলন কক্ষে তার প্রথম মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহাজান খান। অনুষ্ঠানে ‘শিকড় অন্বেষণ’ শীর্ষক আমির হোসেন স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বইটির প্রকাশক সাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা।
×