ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আরও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও কপ্টার কেনা হচ্ছে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২২ মার্চ ২০১৮

আরও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও কপ্টার কেনা হচ্ছে ॥ প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় নজরদারি ও টহল জোরদার করতে আরও অত্যাধুনিক মেরিটাইম, পেট্রোল এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার কেনার প্রক্রিয়া চলছে। পটুয়াখালীতে উড়োজাহাজ পরিচালনার সুবিধা সংবলিত নৌবাহিনীর স্বল্প, বৃহৎ ঘাঁটি এবং ঢাকায় বঙ্গবন্ধু নৌঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলছে। এ ছাড়া কুতুবদিয়ায় চলছে সাবমেরিন পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও জেটি সুবিধাসহ ঘাঁটি নির্মাণের কাজ। সীতাকু-ের সন্দ্বীপ চ্যানেলে জাহাজের বাড়তি সুবিধা সংবলিত ফ্লিট সদর দফতরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুরের আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে বিএন ডক ইয়ার্ডকে ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে একাডেমিতে নব প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পরিম-লে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মান মর্যাদা ও পরিচিতি অনেক বেড়েছে। নৌবাহিনীর জাহাজ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে এবং সংস্থার উদ্যোগে সফলভাবে মহড়ার আয়োজন করা হচ্ছে। এ উপমহাদেশে কেবল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজই ভূমধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় অত্যন্ত সফলভাবে নিয়োজিত থেকে বিশ্বজুড়ে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ফলে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বিশাল সমুদ্র এলাকা বাংলাদেশের মালিকানায় এসেছে। এই সমুদ্র সম্পদকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ব্লু ইকনোমিক বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে নৌবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, এ দেশের বাণিজ্যিক ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য সমুদ্র পথে পরিবাহিত হয়। বিশাল এ সমুদ্র এলাকার পরিচালনা ও সুষ্ঠু নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নৌবাহিনী সফলভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সংস্থার ভূমিকা প্রশংসনীয়। সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় মানব পাচার, চোরাচালান রোধ, জেলেদের নিরাপত্তা, বাণিজ্যিক জাহাজ বহরের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার কাজে ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ন্যাশনাল স্টান্ডার্ডপ্রাপ্ত বিএন ডক ইয়ার্ড নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক অবদান রাখবে। ত্রিমাত্রিক ও উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন বিভিন্ন যুদ্ধ জাহাজ এবং সাব-মেরিনের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং আধুনিকায়নের জন্য বিএন ডক ইয়ার্ড দেশপ্রেম ও পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড দেয়ার আগে একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নেভাল একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল সংবলিত বিরাট কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীর সদস্যদের মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত এই কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর ফলে জাতির পিতার স্বপ্নের প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হলো। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব জনবল, প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতা ব্যবহার করে বিএন ডক ইয়ার্ড সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে যুদ্ধ জাহাজসমূহকে দীর্ঘকাল ধরে অপারেশনাল রাখছে। ফলে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। বিএন ডক ইয়ার্ডের ন্যাশনাল স্টান্ডার্ডপ্রাপ্তি সংস্থার ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রী নৌঘাঁটিতে এসে পৌঁছলে তাঁকে স্বাগত জানান নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সেনা ও বিমানবাহিনী প্রধান, নৌ সদর দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ১৬টি পৃথক ভবন ও বিভিন্ন অবকাঠামো। রয়েছে একাডেমিক ভবন, ট্রেনিং উইং, প্যারেড গ্রাউন্ড, সুইমিংপুল, বোর্টকুল এবং আবাসন ব্যবস্থা।
×