ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কাঠমান্ডুতে আহতরা পর্যবেক্ষণে

আফসানা সঙ্কটাপন্ন, শাহীন ও শেহরিনের সফল অস্ত্রোপচার

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২২ মার্চ ২০১৮

আফসানা সঙ্কটাপন্ন, শাহীন ও শেহরিনের সফল অস্ত্রোপচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানার অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন। তার লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। ব্রেন ছাড়া আফসানার শরীরের সবকিছুই কাজ করছে। এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শাহীন বেপারী ও শেহরিন আহমেদের সফল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তারাও এখন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পাইলট আবিদের স্ত্রী সম্পর্কে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল আলম বুধবার সাংবাদিকদের জানান-আফসানার বায়োকেমিক্যাল প্যারামিটারে পরিবর্তন এসেছে। তার সোডিয়াম লেভেল বেড়ে গেছে। এটা এই মুহূর্তে একমাত্র শঙ্কার কারণ। এ জন্য জরুরীভাবে বুধবার সকালে সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আমরা লাইফ সাপোর্ট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার অবস্থা অপরিবর্তিত। ব্রেইন ছাড়া সবকিছুই কাজ করছে তার। এর আগে মঙ্গলবারও চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আফসানার হার্ট, কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। তার ব্লাড প্রেসারও স্বাভাবিক আছে। উল্লেখ্য মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় গত রবিবার সকালে আফসানাকে বাসা থেকে উত্তরার একটি ক্লিনিকে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে নিউরোসায়েন্সে আনা হয়। রবিবার রাত ১১টার দিকে আফসানা আবার স্ট্রোক করেন। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল দেখে আবার অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। অপারেশনের পর তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস থাকার কারণে অবস্থা আরও জটিল। গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন পাইলট আবিদ সুলতান। সোমবার তাকে বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। শেহরিন ও শাহীনের সফল অস্ত্রোপচার ॥ নেপাল ট্র্যাজেডির ভিকটিম শেহরিন আহমেদ ও ব্যবসায়ী শাহীন বেপারীর সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। তারা এখন নিবিড় পর্যবেক্ষণে। চিকিৎসকরা আশাবাদী তারা দ্রুত সেরে ওঠবেন। বুধবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ তাদের এ অস্ত্রোপচার শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাদের শারীরিক পরিস্থিতি বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডাঃ সামন্তলাল সেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। উল্লেখ্য, নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছেন শেহরিন আহমেদ, শাহীন বেপারী, কবির হোসেন, সৈয়দ রাশেদ রুবাইয়াত, সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা, আলীমুন নাহার এ্যানি ও মেহেদী হাসান মাসুম। তাদের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডাঃ সামন্তলাল সেন বলেন, কবির হোসেন ও শেহরিনের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই তাদের আইসিইউতে শিফট করা হয়েছে। এখন কেবিনে আছেন সৈয়দ রাশেদ রুবাইয়াত ও সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আলীমুন নাহার এ্যানি ও মেহেদী হাসান মাসুম হাসপাতালে ফিরে আসার শর্তে পরিবারের সদস্যদের জানাজায় অংশ নিতে গিয়েছেন। আর শেহরিন ও শাহীনের অস্ত্রোপচার সম্পর্কে তিনি বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাদের অপারেশন করা হয়েছে। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শেহরিন আহমেদের মা ফেরদৌসি মোশতাক বলেন-আল্লাহর রহমতে অপারেশনটা ঠিকমতোই হয়েছে এবং সুস্থ হয়ে সেরে উঠবে। ওর পিঠের দিকে একটা অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। এর জন্য রক্ত লাগবে। ওকে রক্ত দেয়া হয়েছে। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসা ও অন্য বিষয়গুলো নিয়ে শেহরিনের মা আরও বলেন-আমি শেহরিনের জন্য বাসা থেকে দুই বেলা খাবার নিয়ে আসছি। ওই খাবারই খাচ্ছে। আর এখানকার সবাইও ওর খুব ভাল যতœ নিচ্ছে। ক্লিনিং থেকে শুরু করে চিকিৎসক-নার্সদের যতœ খুবই ভাল। ওরা এত যতœ নিচ্ছে, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শাহীন বেপারীর মা জাহানারা বেগম (৬৫) সাংবাদিকদেরকে বলেন-শাহীনকে বেশি কথা বলতে মানা করা হয়েছে। ওকে তরল খাবার খেতে দিচ্ছে। আমি তো কিছু বুঝি না, ডাক্তাররা যা ভাল বুঝছেন তেমনই করছেন। যখনই প্রয়োজন হচ্ছে ড্রেসিংও করছে ওর।
×