ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাঠমান্ডুতে আহত শাহীন ও কবির ঢামেক বার্ন ইউনিটে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২১ মার্চ ২০১৮

কাঠমান্ডুতে আহত শাহীন ও কবির ঢামেক বার্ন ইউনিটে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপালে ইউএস-বাংলার প্লেন দুর্ঘটনায় আহত যাত্রী শাহীন ব্যাপারী ও কবির হোসেনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়েছে। শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যার কারণে মঙ্গলবার সকালে তাদের সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে আহত যাত্রীদের মধ্যে শাহরিন, শাহীন ব্যাপারী ও কবির হোসেনের কয়েক ধাপে অপারেশন করা হবে। এর মধ্যে প্রথম দফা শাহরিন আহমেদ ও শাহীন বেপারীর অস্ত্রোপচার বুধবার শুরু হচ্ছে। বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডাঃ সামন্ত লাল সেন জানান, মঙ্গলবার সকালে শাহীন ও কবিরের শ্বাষকষ্ট হওয়ায় তাদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। শাহীন ব্যাপারীকে বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয় তলার আইসিইউতে আর কবির হোসেনকে পুরাতন ভবনের সেন্ট্রাল আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বার্ন ইউনিটে আবাসিক সার্জন ডাঃ পার্থ শংকর জানান, শাহরিন, শাহীন ব্যাপারী ও কবির হোসেনের কয়েক ধাপে অপারেশন প্রয়োজন। আগামীকাল (বুধবার) সকাল ৮টার দিকে শাহরিন এবং শাহীন ব্যাপারীর প্রথম অপারেশন হবে। শাহীন ব্যাপারীর শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়েছে। শাহরিনের পুড়েছে ১৭ শতাংশ। তাদের ঘাড়ের নিচ থেকে পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ। তাদের ওজন বেশি থাকার কারণে শাহরিনের অপারেশন কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। কবিরের দুই পায়ের হাড়ে মোট চারটি চিড় (ফ্র্যাকচার) হয়েছে। শরীর পুড়েছে ১৫ শতাংশ। কানেও সমস্যা রয়েছে। তিনি জানান, এই দুর্ঘটনায় বার্ন ইউনিটে এখন চিকিৎসাধীন মেহেদী হাসান অমিয়, মেহেদীর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও রাশেদ রোবায়েত। আহত আরেকজন আলমুন নাহার এ্যানি একদিন আগেই বাড়ি গেছে। স্বামী ও শিশু সন্তানের লাশ দাফন করতে। এর আগে রবিবার ইউএস-বাংলার তত্ত্বাবধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০৭২ ফ্লাইটে বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে ঢাকায় নামেন শাহীন ব্যাপারী। সেখান বিকেল ৫টা ৮ মিনিটের দিকে তাকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ঢামেক হাসপাতালে পৌঁছে। শাহীন বেপারী লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বান্দেগাঁও গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রী-কন্যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বসবাস করেন। শান্তি সংঘের সদস্য ও সদরঘাট এলাকার বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে মেসার্স করিম এ্যান্ড সন্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত শাহীন কোম্পানি থেকে বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণে নেপাল গিয়েছিলেন। অন্যদিকে সোমবার বিকেলে ইউএস-বাংলার তত্ত্বাবধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০৭২ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান কবির হোসেন। সেখান থেকে তাকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি ঢামেক হাসপাতালে পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। তার বাড়ি মাদারীপুর শিবচর উপজেলার বাজিদপুর গ্রামে। কবির হোসেন পেশায় কসমেটিক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কাজেই তিনি নেপাল গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউ-এস বাংলার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর এতে আগুন ধরে যায়। যাত্রীদের মধ্যে ১০ বাংলাদেশী বেঁচে গেলেও তাদের প্রায়ই সবার দেহেই আগুনের ক্ষত রয়েছে। আহত ১০ জনের মধ্যে দেশে ফিরেছেন সাতজন। বাকি তিনজনকে নেপাল থেকেই বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহহতদের চিকিৎসার জন্য ১৪ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে সরকার। হাসপাতালে ভর্তি অন্য তিনজন রাশেদ রোবায়েত, মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী স্বর্ণা শারীরিকভাবে তুলনামূলক সুস্থ থাকলেও তাদের মানসিকভাবে সবল করে তোলাই চিকিৎসকদের চ্যালেঞ্জ। ডাঃ পার্থ শংকর জানান, তাদের আঘাতটা মূলত মানসিক। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কতদিন লাগবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
×