ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালে থাকা তিন মরদেহ নিয়ে জটিলতা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২১ মার্চ ২০১৮

নেপালে থাকা তিন মরদেহ নিয়ে জটিলতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপাল ট্র্যাজেডির শিকার ২৩ জনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও বাকি ৩ জনের মরদেহ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ তিনজনের পরিবার অবিলম্বে মরদেহ আনার জন্য সরকারের প্রতি জোর আবেদন জানিয়েছে। নেপালে কর্মরত বাংলাদেশী মেডিক্যাল টিম এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও আগামী এক সপ্তাহের আগে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এ তিন পরিবারের। রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় ইউএস বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান-এ দুর্ঘটনায় নিহত বাকি ৩ বাংলাদেশীর মরদেহও শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- নজরুল ইসলাম, পিয়াস রায় ও আলিফুজ্জামান। আগামী বৃহস্পতিবার তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। ঢাকায় মঙ্গলবার এই তিনজনের একজনের পারিবারিক সূত্র জানায়, নেপাল থেকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল টিমের বরাত দিয়ে ডিএনএ টেস্ট ছাড়া এসব মরদেহ দেশে ফেরানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে। অথচ সোমবার পাঠানো ২৩ লাশের সঙ্গেই এদের পাঠানো সম্ভব ছিল বলে মন্তব্য করেন একটি পরিবারের শোকার্ত এক অভিভাবক। তার মতে- ‘সোমবার ফিরিয়ে আনা বেশ ক’জনের চেহারা আগুনে পোড়ার দরুণ বিকৃত অবস্থায় দেখা গেছে। তাদের চিহ্নিত করতে যদি জটিলতা দেখা না দেয় তাহলে এই তিনজনের বেলায় কেন এসব প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তাদের দেশে না পাঠানোর আগেই নেপাল থেকে বাংলাদেশের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা ঢাকায় ফিরে আসায় এসব লাশ হস্তান্তর ও পাঠানোর প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করবে বলে জানিয়েছেন এক অভিভাবক। উলেখ্য এখনও নেপালে যে ৩ জনের মরদেহ পড়ে রয়েছে সেগুলো হলো-খুলনার মোল্লা আলিফুজ্জামান, বরিশালের পিয়াস রায় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের নজরুল ইসলাম। এসব মরদেহ ফেরানো সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাঃ সোহেল মাহমুদ মঙ্গলবার বলেন-তিনজনের মধ্যে একজনের বিষয়ে আমরা মোটামুটি কনফার্ম যে এটা নজরুল ইসলামের লাশ। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হলেও আরও কিছু তথ্যের প্রয়োজন সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে, সেসব তথ্য দিয়ে না হলে ডিএনএ নমুনা লাগবে। আর বাকি দু’জনের ক্ষেত্রে ডিএনএ নমুনা ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়। ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ শনাক্তে কতদিন লাগবে- জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ বলেন-আরও সাত-আট দিন সময় লাগবে। নেপাল থেকে কাল লাশের ডিএনএ পাঠালে এখানে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা নেয়া হবে। এটা একটু সময়সাপেক্ষ বিষয়। এ সম্পর্কে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামসও সোমবার ২৩ জনের লাশ ফেরানোর সময় বলেছিলেন, বাকি তিনজনের মধ্যে একজনের লাশ শনাক্ত করা হলেও নেপালী কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। এদিকে ঢাকায় সিআাইডি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের উপপ্রধান আহমেদ ফেরদৌস জানান- লাশ শনাক্তে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে হাত দিয়েছেন তারা। সিআইডির দুই কর্মকর্তা এএসপি আবদুস সালাম ও এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিএনএ স্পেশালিস্ট আশরাফুল আলম চিকিৎসক দলের সঙ্গে নেপাল গিয়েছিলেন। নেপালে কোন প্রক্রিয়ায় এ তিনটে মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে একজন মেডিক্যাল টিম জানিয়েছে- কাউকে কাউকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছে। কারও কারও ক্ষেত্রে আইডেনটিফিকেশন মার্ক ব্যবহার করে, আবার কারও ক্ষেত্রে পার্সোনাল বিলংগিংস দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছে। পার্সোনাল বিলংগিংস’-এর ক্ষেত্রে ঘড়ি, আংটি, দাঁত কিংবা উচ্চতা মেলানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও লাশের পকেটে থাকা সিম কার্ড দিয়ে শনাক্ত করার চেষ্টাও করা হয়।
×