অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৬ সালে ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেয় জালিয়াত চক্র। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ায় প্রায় দুবছর এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। চলতি মাসে আবারও ৪৯ গ্রাহকের কার্ড থেকে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। জালিয়াত চক্রটি এসব গ্রাহকের তথ্য নিয়ে নতুন কার্ড (ক্লোন) তৈরি করে প্রায় ২০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার বনানীর যে সুপারশপে এই গ্রাহকরা কেনাকাটা করেছিলেন, সেখান থেকে তথ্য চুরি করে কার্ড ক্লোন করে একটি চক্র এটিএম থেকে টাকা তুলে নেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বেসরকারী খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক। ডেবিট ও ক্রেডিট-এ দুই ধরনের কার্ডই ক্লোন করা হয়। ১০ মার্চ নকল কার্ড দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ও পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) থেকে অর্থ তুলে নেয়া হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয় ব্যাংকগুলো। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে সিটি ব্যাংক। সিটি ব্যাংকের যেসব গ্রাহক কার্ড জালিয়তির মাধ্যমে অর্থ হারিয়েছেন, মঙ্গলবার তাদের টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বেসরকারী ব্যাংকটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, বনানীর একটি আউটলেট থেকে এসব কার্ড ক্লোন হয়েছে। এরপর বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। আমরা মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেছি। একইভাবে ব্র্যাক ব্যাংকের ৯ গ্রাহকের কার্ড জালিয়াতি করে ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা তুলে নেয় চক্রটি। যোগাযোগ করা হলে ব্র্যাক ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জারা জাবীন মাহবুব বলেন, এ নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। আর গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ব্যাংক এশিয়ার পাঁচটি কার্ড ক্লোন করে ওই চক্র প্রায় এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা তুলে নেয়। ওই কার্ডগুলো গুলশানের কয়েকটি পিওএস মেশিনে ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও ব্যাংকটি জানায়। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদনও তৈরি করছে ব্যাংকটি। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করবে বলে জানান ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আরফান আলী। আরফান আলী বলেন, উন্নত প্রযুক্তি ও কার্যকর এ্যালার্ট সিস্টেম থাকার কারণে আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে জালিয়াতির বিষয়টি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি এবং কার্ডগুলো বন্ধ করতে পেরেছি। আমরা এখন বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানোর জন্য যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। দুই বছর আগে কার্ড ক্লোন করে এটিএম থেকে টাকা তুলে নেয়ার সময় ঢাকায় এক চীনা নাগরিককে আটক করা হয়েছিল। তার সঙ্গে আরও অন্তত দুজন চীনা নাগরিক জড়িত বলে তখন পুলিশ জানিয়েছিল।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: