নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২০ মার্চ ॥ আমেনা বেগম নামের এক গৃহবধূকে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী নান্নু আকন বিদেশে যাওয়ার টাকা চেয়ে না পেয়ে তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। ওই গৃহবধূর বাবার নাম মৃত নাজির আহম্মেদ, কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লাল চাঁদপুর গ্রামে তার বাড়ি। সোমবার রাতে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালের দোতলায় মহিলা ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নির্যাতিত গৃহবধূ আমেনা বেগম জানান, বাউফলের দাশপাড়া গ্রামের মমিন আকনের ছেলে নান্নু আকনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামী ঢাকা রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তিনি স্বামীর বাড়িতে থাকেন। স্বামী ঠিকমতো ভরণ-পোষণ দিতেন না। প্রবাসী ছোট ভাই ফারুকের সহযোগিতায় কোন রকম সংসারের ব্যয় মেটাতেন তিনি। গত ৮-১০ দিন আগে তার স্বামী নান্নু আকন বাড়িতে আসেন। তিনি স্ত্রীকে জানান, ঢাকায় আর কাজ করবেন না। বিদেশে যাবেন। আর এ জন্য তিনি বাহরাইন প্রবাসী তার ছোট ভাই ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। স্ত্রী এ নিয়ে দ্বিমত করলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তার স্বামী তাকে দুই দিন সময় বেধে দেন। শনিবার সকালে নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাকে ওই অজুহাতে প্রথমে টর্চ লাইট দিয়ে মুখম-লসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে জখম করেন। একপর্যায়ে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে লাথি মারতে থাকেন। এরপর একটি লাঠি এনে দ্বিতীয় দফায় পৈশাচিক কায়দায় পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতবিক্ষত করেন। মুখম-ল থেতলে দেন এবং ওই অবস্থায় বাড়ি থেকে তাকে তাড়িয়ে দেন। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন আমেনা বেগম। ওই অবস্থায় তিন দিন ঘরের বাইরের কাটান তিনি। এ খবর পেয়ে কুমিল্লা থেকে তার বড় বোন মরিয়ম ও তার স্বামী সানাউল্লাহ সোমবার বাউফলে চলে আসেন। সকালে কালাইয়া বন্দরসহ বিভিন্ন জায়গায় তার সন্ধান পেতে মাইকিং করেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় কালাইয়া বন্দরের একটি গলি থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাউফল হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন বাউফল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, আমেনা বেগমের মুখম-লসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের দগদগে ক্ষত। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। সেরে উঠতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে।