ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সান্তাহারে বাফার স্টকে নষ্ট হচ্ছে সার

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২১ মার্চ ২০১৮

সান্তাহারে বাফার স্টকে নষ্ট হচ্ছে সার

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, ২০ মার্চ ॥ বিসিআইসির রাসায়নিক সারের বাফার স্টক গুদামে সঙ্কট, অব্যবস্থাপনা এবং মজুত ও বিতরণে অনিয়মের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে রাখতে হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার। খোলা আকাশের নিচে থাকায় দ্রুত জমাট বাঁধে। নষ্ট হয় গুণগত মান। কিন্তু তা মানতে নারাজ বাফারে ইনচার্জ। বাফার কর্মকর্তারা ‘ফাস্ট ইন ফাস্ট আউট মেথড’ মানেন না। ফলে বছরের পর বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে ওই পরিমাণ সার। বৃষ্টি ও শিশিরে সারগুলো গলে ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের ফসলের জমি ও জলাশয়ে। এতে করে জমির ফসল, পুকুরের পানি ও মাছের ক্ষতিসহ সারের উৎকট গন্ধে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ, জয়পুরহাট ও নাটোর জেলার ডিলারদের সহজে সার সরবরাহ করার জন্য ট্রানজিট হিসেবে নির্মাণ করা হয় সান্তাহার বিসিআইসি বাফার স্টক গুদামটি। পরে নওগাঁ বাদে ওই জেলার সার মজুতের নতুন গুদাম নির্মাণ করায় এটি আর ট্রানজিট গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এখান থেকে গত কয়েক বছর ধরে শুধু সান্তাহার শহরের পাশে নওগাঁ জেলার আট উপজেলায় নিবন্ধিত ৯৩ ডিলারের মাধ্যমে কৃষকের মাঝে রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়। পুরনো জমাট বাঁধা এসব ইউরিয়া সার বিক্রি করতে না পারায় সার গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করে ২০১৭ সালের শেষের দিকে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ডিলাররা। ডিলারদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গুদামের মজুত পরিস্থিতি জানতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সান্তাহার বাফার স্টক গুদামে প্রায় ৩২ হাজার মেট্টিক টন সার মজুদ আছে। অথচ এটির ধারণ ক্ষমতা ১৬ হাজার মেট্টিক টন। অবশিষ্ট সার ১৮ গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নিচে পলেথিন ও ত্রিপল দিয়ে রাখা হয়েছে। এসব সার রোদ-বৃষ্টিতে জমাট বেঁধে শীলাখ-ে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও গুদামের ভেতরে রাখা প্রায় আট হাজার টন ইউরিয়া সারও জমে শীলাখ-ে পরিণত হয়েছে। সময় মতো সেগুলো সরবরাহ না করা গুদামের ভেতরের সারও জমাট বাধার কারণ। এ নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ হওয়ায় বাফার ইনচার্জ কৌশলী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। তিনি ইট ভাঙ্গা মেশিন দিয়ে জমাট বাধা সার গুড়ো করে রিপ্যাকিং করছে এবং সেই নষ্ট হওয়া সার সরবরাহ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে ডিলারদের। এ নিয়েও কর্মকর্তা ও ডিলারদের মধ্যে প্রতিদিনই ঘটছে বাক-বিত- ও অপ্রীতিকর ঘটনা। এ বিষয়ে বাফার গুদাম ইনর্চাজ আব্দুল মালেক গণমাধ্যম কুর্মিদের নিকট দাবি করেছেন সার জমাট বাঁধলে গুণগত মান নষ্ট হয় না। তিনি জানান, সান্তাহার বাফার স্টক গুদামের ধারণ ক্ষমতা ১৬ হাজার টন। বর্তমানে মজুত আছে ২৮ হাজার টন। ফলে অতিরিক্ত সার বাইরে রাখা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তবে সার মজুত ও বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
×