ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী নগরীর দূষিত বর্জ্যে মরে যাচ্ছে পদ্মার মাছ

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২০ মার্চ ২০১৮

রাজশাহী নগরীর দূষিত বর্জ্যে মরে যাচ্ছে পদ্মার মাছ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ নগরীর বিভিন্ন ড্রেনের দূষিত বর্জ্যে এবার মরতে শুরু করেছে পদ্মা নদীর মাছ। ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তার এমন তথ্য পেয়েছেন। রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুভাস চন্দ্র সাহা বলেন, শহরের বর্জ্য পরিশোধন না করে নদীতে ছাড়ায় পদ্মার পানি দূষিত হচ্ছে। এ কারণেই এখন চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে উঠছে। এ বিষয়টি নিয়ে মৎস্য বিভাগ থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে বারবার সতর্ক করলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এখনই ড্রেনে প্রবাহিত নগর বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা না নিয়ে পদ্মা নদীতে ব্যাপকহারে মাছের মড়ক দেখা দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত রবিবার সকালে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে মাছ ধরছিল বেশ কয়েকজন জেলে। নদীতে ভেসে উঠা মাছ ধরার সময় স্থানীয় জেলেদের সন্দেহ হয়, নদীতে বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট ব্যবহার করে মাছ ধরা হচ্ছে। পরে তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ৫ জেলেকে আটক করে। পরে মৎস্য বিভাগের লোকজন গিয়ে পানি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় তারা ট্যাবলেট ব্যবহার করে নয়, নগর বর্জ্যে পদ্মার পানি দূষিত হওয়ার ফলে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। জেলেরা বিষাক্ত কোন ট্যাবলেট পানিতে প্রয়োগ করেননি। পরে আটক জেলেদের ছেড়ে দেয়া হয়। নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, প্রথমে স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫ জনকে আটকের পর মাছ মারার জন্য গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়েছে কী না তা যাচাই করার জন্য জেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের ডাকা হয়। বিকেলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুভাস চন্দ্র সাহা, মৎস্য বিভাগের খামার ব্যবস্থাপক আব্দুল খালেক ও পবা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে যান। তারা নদীর পানি পরীক্ষা করে দেখেন, পানি বিষাক্তে ট্যাবলেট ব্যবহার করার কোন আলামত নেই। বরং ড্রেনে প্রবাহিত নগরীর বর্জ্যরে প্রভাবে পানি দূষিত হয়ে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে উঠে। এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, আট-দশটি ড্রেন দিয়ে শহরের রাস্তার দক্ষিণ পাশের বর্জ্য পানির সঙ্গে পদ্মা নদীতে পড়ে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এই পানি পরিশোধন করে তাদের সেচের কাজে ব্যবহার করার জন্য গবেষণা করছে। তারা সফল হলে একটা ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করবে। এই রকম একটা পরিকল্পনা চলছে। তবে আপাতত বর্জ্য ঠেকানোর মতো কোন অবস্থা নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজশাহী নগরের শ্রীরামপুর, বুলনপুর, ফুদকিপাড়া, দরগাপাড়া, সেখেরচক, পঞ্চবটি ও কাজলাসহ ১০টি ড্রেন দিয়ে নগরের বর্জ্যপানি প্রতিদিন পদ্মা নদীতে নামছে। ফলে প্রবাশ পড়েছে নদীর পানিতে। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক বছর ধরে নগরীর বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নগরীর উত্তরের পবা উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত বারনই নদীরও।
×